বরিশাল
বরিশালে ফের বেপরোয়া ক্লোজড হওয়া এসআই শাহসাব
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় ধরে বরিশালে ঘাপটি মেরে থাকা বহুল সমালোচিত ও নানা কর্মকান্ডে বিতর্কিত পুলিশের এসআই শাহসাব খান ফের বেসামাল হয়ে উঠেছে। খেটেছে বরিশাল মেট্রোপলিটন এলাকার সবগুলো থানায়। সর্বশেষ বিএমপি পুলিশ কমিশনার অফিস হয়ে কীর্তণখোলা নদী পেরিয়ে সাহেবেরহাট বন্দরথানায়। কিন্তু রীতিমত সেখানেও টিকতে পারেনি বেশিদিন। কিছুদিন যেতে না যেতেই এসআই শাহসাবের বিরুদ্ধে উঠে অভিযোগের পাহাড়। একাধিক লিখিত ও মৌখিক অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিএমপির দক্ষ ও ন্যায় পরায়ন তথা চৌকস পুলিশ কমিশনার মোঃ শাহাবুদ্দিন খান তাকে পুলিশ লাইন্সে ক্লোজড করেন। তাও মাসখানেকের উপরে হয়েছে। কিন্তু মোটেও থমকে ভড়কে যায়নি শাহসাব। শুধরায়নি বিন্দুমাত্র। বরং পূর্বের তুলনায় অনেকটা বেপরোয়া ও বেসামাল হয়ে ধরাকে সরাজ্ঞান মনে করে নগরী দাপিয়ে বেড়াচ্ছে সে। নিজেকে কখনও বর্তমান সময়ে অপরাধমূলক কর্মকান্ড দমনে আলোচিত ডিবির এসআই, কখন ওসি পরিচয় দিয়ে হাতে অকিটকি নিয়ে মাসোহারা, ঘুষ বাণিজ্যের ধান্দায় মহাব্যস্ত এসআই শাহসাব। সূত্রে জানা গেছে, দখিনের প্রত্যান্ত জনপদ গলাচিপা রাঙ্গাবালির চালিতা বুনিয়া এলাকার বাসিন্দা এসআই শাহসাব ওরফে কালু দারোগা। ভাড়া থাকেন নগরীর জর্ডণ রোড এলাকায়। চালচলন বেশ ভুশায় তিনি মস্তবড় পুলিশ অফিসার। কথাবার্তায় মনে হয় তিনি থোরাই কেয়ার করেন না তার উধ্বর্তন কোন পুলিশ কর্মকর্তাকে। স্থানীয়দের কাছে শাহসাবের ভাষ্যমতে দেশের কোন পুলিশই ভাল নয়। সবাই অসৎ ও ঘুষ বাণিজ্যের সাথে জড়িত। সে নিজেই শুধু দুধের ধোয়া তুলশি পাতা। সম্প্রতি ভূক্তভোগী একব্যক্তি বিএমপির চৌকস পুলিশ কমিশনারের কাছে শাহসাবের বিরুদ্ধে এক অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ কমিশনার অভিযোগটি আমলে নিয়ে সহকারী পুলিশ কমিশনার প্রসিকিউশন ও ট্রাফিক মাসুদ রানাকে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। এছাড়া শাহসাবের বিরুদ্ধে আরও একাধিক অভিযোগ জমা হয়েছে বলে জানা গেছে। তা বিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার দক্ষিন মোকতার হোসেনসহ পুলিশের উধ্বর্তন কর্মকর্তারা তদন্ত করছেন বলে নিশ্চিত করেছে সূত্রটি। শুধু তাই নয়, শাহসাবের দাম্ভিকতা ও আস্ফালনে সীমা এতটাই চরমে পৌছেছে যে, সহকর্মীদের সাথে খারাপ আচরনের পাশাপাশি তার নিকটতম প্রতিবেশিদের সাথেও দুর্ব্যবহার ও রুঢ় আচরন মহল বিশেষকে ভাবিয়ে তুলেছে। নগরীর জর্ডণ রোডের শাহিন শামিম ভিলার মালিক শামিম এ প্রতিবেদককে জানান, তার ভবনের নিচে একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার ভাড়া নিয়েছে জনৈক এক ব্যক্তি। তারা কোন অপকর্ম করলে তার দায়দায়িত্ব ভাড়াটিয়াদের এবং তার দেখা শুনার জন্য প্রশাসনের সংশ্লিস্ট কর্মকর্তারা রয়েছেন। কিন্তু শাহসাব ক্ষমতার অপব্যবহার করে একাধিকবার তার ভবনের মেইনগেট সিলগালা করতে গিয়েছে। এনিয়ে ভবনমালিক, ভাড়াটিয়া বাসিন্দাদের সাথে শাহসাবের একাধিকবার তর্কবিতর্ক ও উত্তাপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। এছাড়াও একাধিক ভূক্তভোগী অভিযোগ করে এ প্রতিবেদককে জানান, এসআই শাহসাব যেখানেই হানাদেয় সেখানেই বলে আসেন ফোনে কোন কথা নয়, সরাসরি এসে দেখা করবেন। এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, শাহসাব ওতো একটা পাগল, সে পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে জিডি করে বসে থাকে। সম্মান তো দূরের কথা কাউকেই পাত্তা দিতে চায় না। নিজেকে মহা ক্ষমতাধর ব্যক্তি হিসাবে জাহির করতে অভ্যস্ত কিন্তু কোথায় টিকতে পারে না। সম্প্রতি বরিশালের একজন তরুন আইনজীবি ও সিনিয়র সাংবাদিকের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শাহসাব আপত্তিকর মন্তব্য জুড়ে দেয়। এতে মিডিয়াপাড়া ও আদালতপাড়াসহ সর্বমহলে বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃস্টি হয়। বিষয়টি পুলিশ কমিশনারসহ উধ্বর্তন পুলিশ কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ভূক্তভোগী সূত্র। এব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানতে এসআই শাহ সাবের মুঠোফোন ০১৭১৫০০১৬.. কল করা হলে তিনি তা রিসিভ করেন নি।