আগৈলঝাড়া
বরিশালে নাতি হাসপাতালে ভর্তি, শুনেই মারা গেলেন দাদি
নিজস্ব প্রতিবেদক : বরিশালের আগৈলঝাড়ায় সহপাঠীর পিতার মারধরে অসুস্থ নাতি হাসপাতালে ভর্তির সংবাদ শুনে দাদির মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
আহত ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বাকাল ইউনিয়নের কোদালধোয়া গ্রামের শিপন পাণ্ডের ছেলে তীর্থ পাণ্ডে (৭) ও দুলাল বৈষ্ণবের ছেলে দীপ বৈষ্ণব (৭) দুজনেই কোদালধোয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী। তিন দিন আগে তীর্থ ও দীপ শ্রেণিকক্ষে বসে মারামারি করে।
স্কুল ছুটি শেষে বাড়ি ফেরার পথে দীপের পিতা দুলাল বৈষ্ণব ব্রিজের উপর বসে তীর্থ পাণ্ডেকে মারধর করেন। পরে তীর্থের বাড়ি গিয়ে পিতা-মাতাকে না পেয়ে দাদি মন্দাকিনি (৬৫), কাকাতো বোন ৭ম শ্রেণির ছাত্রী বিপাশা পাণ্ডেকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে। মারধরে তীর্থ পাণ্ডে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। ভয় ও আতঙ্কে তীর্থ দুই দিন ধরে জ্বরে ভুগছিল।
মঙ্গলবার দুপুরে তার জন্য দাদি মন্দাকিনি পাশের বাড়িতে পানিপড়া আনতে যায়। এ সময় তীর্থ জ্ঞান হারালে তাকে পরিবারের লোকজন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। দাদি বাড়িতে এসে নাতি তীর্থের জ্ঞান হারানো ও হাসপাতালে নেওয়ার কথা শুনে দাদি মন্দাকিনি নিজেই জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে ডা. মিরন হালদার মন্দাকিনি পাণ্ডেকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় কোদালধোয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক অবনী ওঝা বলেন, আমাদের স্কুলের প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী তীর্থ ও দীপ শ্রেণিকক্ষে বসে মারামারি করে। পরবর্তীতে দীপের পিতা দুলাল বৈষ্ণব তীর্থকে পথে মারধর করে।
স্কুলছাত্র তীর্থের পিতা শিপন পাণ্ডে জানান, আমার ছেলের সঙ্গে তার সহপাঠী দীপের স্কুলে বসে মারামারির ঘটনায় গুরুতর আহত হয়। পরে আহত অবস্থায় আমার ছেলেকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করলে সেই সংবাদ শুনে আমার মা মন্দাকিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরে তাকে হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
অভিযুক্ত দুলাল বৈষ্ণব ফোনে জানান, আমার ছেলেকে মারধরের কারণে আমি তীর্থ পাণ্ডেকে দুই-একটি চড়-থাপ্পড় দিয়েছি। এ ব্যাপারে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. অলিউল ইসলাম বলেন, এ ধরনের কোনো ঘটনা আমার জানা নেই। শিপন পাণ্ডে অভিযোগ করলে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হবে।