বরিশাল
বরিশালে নদী খননের নামে চলছে বালু ব্যবসা!
নিজস্ব প্রতিবেদক॥ বরিশালের হিজলা উপজেলার আলীগঞ্জ এলাকার মেঘনা নদীতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নদী খননের নামে চলছে বালুর ব্যবসা। মেহেন্দিগঞ্জ হিজলার আলীগঞ্জ পয়েন্টের ১.৬ কিলোমিটার ড্রেজিং এর বিপরীতে ২ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকার খনন কাজটি পেয়েছে রিভার ড্রেজিং নেত্রকোনা নামে একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান।
ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান দীর্ঘ চার মাস যাবত পানি উন্নয়ন বোর্ডের ছাড়পত্র অনুযায়ী যুবরাজ নামক একটি বালু খননের ড্রেজার কাটার খনন স্থলে নামেমাত্র নিয়ে আসে। কিন্তু ওই কাটার দিয়ে বালু খনন করা হয় না, এমনকি ড্রেজার এর সাথে পাইবের সংযোগ নেই।ওই ড্রেজারটি দুই পাশে অবৈধ ভাবে ৮টি লোড ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করে বলগেট এর মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচারের অভিযোগ রয়েছে।
এছাড়াও অপরিকল্পিতভাবে নকশার বাইরে নদীর কিনারা থেকে মাত্র ৩ থেকে ৪ শত মিটার দূরে বালু উত্তোলনের ফলে ক্ষতির মুখে পড়ার আশঙ্কা আলীগঞ্জ বাজার রক্ষা বাঁধ সহ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ তিন গ্রামের মানুষ।
হিজলা উপজেলা বিভিন্ন এলাকায় নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে কয়েক হাজার পরিবারের ভিটে বাড়ি সহ ফসলি জমি।খনন স্থলের কাছাকাছি শতবর্ষী ঐতিহ্যবাহী পিএন মাধ্যমিক বিদ্যালয় আলীগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আশিঘর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ছাগলদি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়. আলীগঞ্জ আলিয়া মাদ্রাসা এবং আলিগঞ্জ বাজার সহ অসংখ্য মসজিদ ও মন্দিও এইগুলো রক্ষার জন্য সরকারের দেয়া শহর রক্ষা বাধ প্রকল্পের ১ শত ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ব্লোক দিয়ে রক্ষা বাঁধ নির্মাণের কাজ টি মাত্র শেষ হয়েছে। স্থানীয়রা বলছে এরই মধ্যে আমাদের অনেকেরই ফসলি জমি, ভিটেবাড়ি নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে যতটুকু আছে তার জন্য বর্তমান সরকার ব্লোক দিয়ে রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করেছে।
স্থানীয় পিএন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অফিস সহকারি হানিফ জানায়, এত কাছাকাছি নদী খনন বা বালু উত্তোলন করা হলে সরকারের এই মহৎ উদ্দেশ্য ভেয়েস্তে যাবে এবং ক্ষতির মুখে পরবো এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ অশংখ্য মানুষ।
উপজেলা অঅওয়ামীলীগের সহ সভাপতি ধুলখোলা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন মাতুব্বর জানায়, এসকল দূনীতির বিরুদ্ধে কথা বলায় আমার ভাই ধুলখোলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা জসিম উদ্দিন সহ চার জনের বিরুদ্ধে দ্রত বিচার ট্রাইবুনালে মামলা দিয়েছে, এখানে গিয়ে আবার কোন বিপদে পরব। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সুপারভাইজার স্বপন বালু পাচারের বিষয়ে কোন কথা বলবেন না বলে প্রতিবেদককে জানান।
এ বিষয়ে বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাস বলেন, নদীর কিনারা থেকে কমপক্ষে ৬ শত মিটার দূরে খনন কাজ করত হবে। লোড ড্রেজার দিয়ে বলগেট এর মাধ্যমে বালু কোথাও নেয়া যাবে না। তিনি আরো বলেন ড্রেজিং এর বালু স্থানীয় চরে ফেলে ভ’মী উন্নয়ন করতে হবে।
হিজলা উপজেলা নির্বাহি অফিসার বকুল চন্দ্র কবিরাজি বলেন নকশা এবং কাগজের বাইরে কোনো কিছু করলে অবশ্যই তা ক্ষতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।