বরিশাল
বরিশালে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে দেয়াল ধসে নিহতের ঘটনায় দম্পত্তির বিরুদ্ধে মামলা
নিজস্ব প্রতিবেদক : ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে বরিশাল নগরীতে ভবনের দেয়াল ধসে হোটেল মালিক এবং কর্মচারী নিহতের ঘটনায় এক দম্পত্তির বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার আসামীরা হলেন নির্মাণাধীন ভবন মালিক নুরুল ইসলাম খলিফা ও তার স্ত্রী সীমা ইসলাম।
বৃহস্পতিবার (৩০ মে) নিহত হোটেল মালিক লোকমান হাওলাদারের স্ত্রী নূর নাহার বাদী হয়ে বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানায় এ মামলা দায়ের করেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিচুল হক। তবে অপর একটি প্রতারণা মামলায় আগে থেকেই কারাগারে রয়েছে ভবন মালিক নুরুল ইসলাম খলিফা।
মামলার বড়াতে জানা যায়, গত ২৭ মে ভোররাত সাড়ে ৪টার দিকে ঝড়ের সময় প্রচন্ড বাতাসে নগরীর রূপাতলী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় লিলি পেট্রোল পাম্প সংলগ্ন নির্মাণাধীন একটি চতুর্থ তলা ভবনের ছাদের দেয়ালের অংশ ধসে পড়ে। এ সময় ভবনের নিচে থাকা টিনশেড খাবার হোটেলের ভেতরে ঘুমিয়ে থাকা হোটেল মালিক লোকমান হোসেন ও কর্মচারী মোকছেদুর রহমান দেয়াল চাপায় মারা যান। গুরুতর আহত হন অপর হোটেল শ্রমিক সাকিব। এদের মধ্যে হোটেল শ্রমিক সাকিব বর্তমানে ঢাকায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আহত এবং নিহত সবাই পটুয়াখালী সদর উপজেলার বড়বিঘাই গ্রামের বাসিন্দা। মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়েছে, নুরুল ইসলাম খলিফরা চারতলা ভবন নির্মাণ করতে গিয়ে আগেও দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটেছে। দেয়ালের অংশ ধসে পড়া একই স্থান থেকে আগেও কয়েকটি ইট খসে পড়েছিল লোকমানের টিনসেট হোটেলে। তখন ভবন মালিককে সতর্ক করা হয়েছিল। এমনকি স্থানীয় ব্যক্তিদের মাধ্যমে তাকে বিল্ডিং কোড মেনে নিরপদে কাজ করার অনুরোধ করা হয়। কিন্তু ভবন মালিক এবং তার স্ত্রী কোনোভাবেই সেই অনুরোধের কর্ণপাত করেননি। আর তাই ভবন মালিকের অসাবধানতা এবং অবহেলার কারণেই দেয়াল ধসে হোটেলের মালিক এবং শ্রমিকের নির্মম মৃত্যু হয়েছে বলে মামলায় দাবি করা হয়েছে।
এদিকে বরিশাল সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা আহসান উদ্দিন রোমেল বলেন, ভবন ধসে দুজনের মৃত্যুর বিষয়টি মেয়রের দৃষ্টিতে এসেছে। তার নির্দেশে নির্মাণাধীন ভবনটির প্ল্যান রয়েছে কিনা সে বিষয়টি তদন্ত করতে তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি ভবন নির্মাণে বিল্ডিং কোড অনুসরণ করছে কিনা সে বিষয়টিও খতিয়ে দেখবে।
নুরুল ইসলাম খলিফার স্ত্রী সীমা ইসলাম দাবি করেন, বাড়ি সংক্রান্ত সব কাগজপত্রের বিষয়ে তার স্বামী বলতে পারবেন। তবে সিটি করপোরেশন থেকে পাঁচতলা পর্যন্ত তাদের বাড়ির প্ল্যান অনুমোদন রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।