জাতীয়
বরিশালের সুগন্ধ্যা নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তলন
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর (দোয়ারিকা) সেতুর পশ্চিম পাশে সুগন্ধ্যা নদী থেকে দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে রাতের আধারে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে বাবুগঞ্জ উপজেলার উত্তর দেহেরগতি এলাকার আব্দুল হাই এর পুত্র মোঃ কবির ও তার সহযোগীরা। শত কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সেতু চরম ঝুঁকিতে রয়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে প্রশাসন বেশ কয়েকবার অভিযান চালিয়ে তাঁর বালু উত্তোলনের সরঞ্জাম ধক্ষংস করেছে। কিন্তু অবৈধ ড্রেজার বাবসায়ীর বিরুদ্ধে কোনো আইনি ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। আর সেকারনেই তারা আজও রয়েছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। ফলে একই জায়গা থেকে তারা আবারও বেপরোয়াভাবে বালু উত্তোলন করছে। এতে প্রতিনিয়ত হুমকির মুখে পড়ছে সেতুটি। ইতিপূর্বে নদী ভাঙনের কবল থেকে এ সেতু রক্ষায় সরকারের কোটি কোটি টাকা ব্যয় করতে হয়েছে। চলমান এই বালু উত্তোলনের ফলে বসতভিটা, ফসলি জমি, সড়ক ও সেতু ধ্বংসের আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী। সেখান থেকে বরিশাল শহরসহ বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করা হচ্ছে এই বালু। প্রতি ট্রাক বালুর দাম ১৮০০-২০০০ টাকা। প্রতিদিন ৮০-১০০ ট্রাক বালু বিক্রি করা হয়। জানা গেছে, বাবুগঞ্জ উপজেলার উত্তর দেহেরগতি এলাকার ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর (দোয়ারিকা) সেতুর পশ্চিম পাশে সুগন্ধ্যা নদীর বুক থেকে খননযন্ত্র দিয়ে অবৈধভাবে পলি মাটি উত্তোলন করছেন উত্তর দেহেরগতি এলাকার মোঃ কবির ও তার সহযোগীদের মধ্যে রয়েছে মৃত সিদ্দিক হাওলাদার এর পুত্র জহিরুল (৩৫), মৃত মোতাহার হাওলাদারের পুত্র জসিম উদ্দিন কালাম(৪৫), মৃত রহম আলীর পুত্র বাবুল হাওলাদার (৫০), মৃত আফছার হাওলাদারের পুত্র মুজাম্মেল (৫২), মৃত এস্কেন্দার হাওলাদারের পুত্র জাহাঙ্গীর ৪৮), মৃত ও্যাহেদ শরীফের পুত্র আজাদ শরীফ (৩৫), সত্তার হোসেনের পুত্র সাব্বির হোসেন (৩০) ও অন্যতম সহযোগী এনামুল (৪০)। প্রতিদিন তারা বালু বিক্রি করে অবৈধভাবে হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা। এলাকাবাসীর অভিযোগে কয়েক দফা ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে বালু উত্তোলনের খননযন্ত্র ধ্বংস করেছেন। তবুও থামাতে পারেননি বালু উত্তোলন। প্রশাসনের কিছু অসৎ কর্মকর্তার সঙ্গে গোপন যোগাযোগ থাকায় অভিযানের খবর আগেই পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় কবির ও তার সহযোগীরা। এ কারণে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেননি উপজেলার সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা সুজিদ হাওলাদার । তাই কবির ও তার সহযোগীরা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন বলে ধারনা করা হচ্ছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাবুগঞ্জ উপজেলার উত্তর দেহেরগতি এলাকার ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর (দোয়ারিকা) সেতুর ঢাল থেকে শুরু করে প্রায় ১কিলোমিটার রাস্তা তাজ ব্রিকস-এর মালিক মোঃ সাগর ফকির নিজ অর্থায়নে সড়কটি মেরামত করেন। তবে ধারণা করা হচ্ছে ঐ এলাকার একটি মহল নিজেদের অপকর্ম ঢাকতে একই এলাকার বিভিন্ন ইট ভাটা ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে উপজেলা অফিসে অভিযোগ দিয়ে থাকেন। এতে এলাকাবাসীর মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় এক বাসিন্দা সত্তার খাঁ জানান, একসময়ে আমাদের বাড়ি থেকে প্রধান সড়কে উঠতে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হতো। তবে আমাদের এলাকায় কয়েকটি ইট ভাটা তৈরী হওয়াতে তাদের গাড়ি চলাচলের জন্য তারা রাস্তাটি মেরামত করায় আমাদের এখন যাতায়াতে সুবিধা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, কিছুদিন আগে বুলবুলের সময় আমাদের রাস্তার কয়েকটি জায়গা থেকে পানি না নামতে পারায় রাস্তা ভেঙ্গে গেলে তাজ ব্রিকস-এর মালিক মোঃ সাগর ফকির তার নিজস্ব খরচায় রাস্তার মধ্যে চুঙ্গা দিয়ে দেয়। এতে করে রাস্তাটি আবারো তার আগের রূপ ফিরে পায়। এ বিষয়ে অভিযুক্ত কবিরের বক্তব্যের জন্য তার ব্যবহত ফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আমিনুল ইসলাম বলেন, অভিযোগের সত্যতা পেলে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।