বরিশাল
বরিশালের একমাত্র সুইমিং পুল এখন ভূতের বাড়ি
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ ২৪ বছর পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকা বরিশাল তথা দক্ষিণাঞ্চলের একমাত্র সুইমিং পুলটি এখন ভূতের বাড়ি। নির্মাণে কারিগরি ত্র“টিসহ অনিয়মের কারণে ব্যবহার উপযোগী হয়নি সাঁতার শেখার এই পুলটি।
পুলটি এখন যেন ভূতের বাড়িতে রূপ নিয়েছে। যদিও প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে সুইমিং পুলটি সংস্কার করা হচ্ছে।
শুধু সুইমিং পুলই নয়, সংস্কারের ছোঁয়া পড়বে বিভাগের সর্ববৃহৎ ও আধুনিক শহিদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত স্টেডিয়ামেও। গ্যালারিসহ ক্ষতিগ্রস্ত সবকিছুরই সংস্কার কাজ হবে শিগগির।
এছাড়া খেলোয়াড়দের সুবিধার্থে তৈরি হবে একটি স্পোর্টস কমপ্লেক্স। করোনাভাইরাসের কারণে এই কাজ শুরু কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে বলে জানিয়েছে বরিশাল ক্রীড়া সংস্থার সূত্র।
পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হলেই এই কাজে অগ্রগতি আনা হবে বলেও জানায় সংস্থার সূত্রটি। দীর্ঘদিন পর সুইমিং পুলটির সংস্কারের খবরে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে বরিশালের ক্রীড়া অঙ্গন।
বরিশালে শিশু-কিশোরদের সাঁতার প্রশিক্ষণ দেওয়া উন্নয়ন সংগঠক এনায়েত হোসেন বলেন, এত বছর পরে সুইমিং পুলের কাজ
পুনরায় শুরু হচ্ছে। এটি নিঃসন্দেহে একটি আনন্দের সংবাদ। নির্মাণের পর সুইমিং পুল অকেজো অবস্থায় থাকায় সাঁতার প্রশিক্ষণ থেকে বঞ্চিত হয়ে এসেছে শিশু-কিশোরেরা।
এতে গুরুত্বপূর্ণ এই ক্রীড়া থেকে পিছিয়ে পড়ছে বরিশাল। পাশাপাশি এই পুলটি অবহেলায় পড়ে ছিল। যত দ্রুত সম্ভব এই কাজে অগ্রগতির পরামর্শ দিয়ে তিনি আরও বলেন, শুধু সংস্কারই নয়, সংস্কারের পর সাঁতার শেখানোর জন্য ভালো প্রশিক্ষক নিয়োগ ও নিয়মিত প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা ক্রীড়া সংস্থার সদস্য সচিব অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. সোহেল মারুফ বলেন, শহিদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত স্টেডিয়ামে বেশ কিছু সংস্কার কাজ হতে চলেছে শিগগির। কাজগুলো আরও আগেই হতো। তবে করোনার কারণে বিলম্বিত হয়েছে।
কাজের মধ্যে রয়েছে-সুইমিং পুলের সংস্কার, একটি স্পোর্টস কমপ্লেক্স নির্মাণ ও স্টেডিয়ামের গ্যালারিসহ নানা সংস্কার কাজ। এসব কাজ বাস্তবায়নে জেলা ক্রীড়া সংস্থার অগ্রগতি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। বরিশালের ক্রীড়া অঙ্গনকে আরও সমৃদ্ধ করার লক্ষ্যে যতটা সম্ভব দ্রুততার সাথে এগুলো করা হবে বলে জানান সদস্য সচিব।
জানা গেছে, ২৪ বছর পূর্বে ১৯৯৭ সালে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ আউটার স্টেডিয়ামে ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে সুইমিং পুল নির্মাণ করে। নির্মাণে কারিগরি ত্রুটিসহ অনিয়মের কারণে পুলটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়েছিল।
জেলা ক্রীড়া সংস্থা জানায়, মানসম্পন্ন সাঁতারু সৃষ্টি এবং শিশু-কিশোরদের সাঁতার প্রশিক্ষণ দেওয়ার লক্ষ্যে পরীক্ষামূলকভাবে সুইমিং পুলে পানি ওঠাতে গিয়ে সেখানে ধরা পড়ে ফাটল।
পরবর্তীতে ওই ফাটলের আকার বড় হয়। ওই অবস্থায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সুইমিং পুলটি জেলা ক্রীড়া সংস্থার কাছে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে চাইলেও জেলা ক্রীড়া সংস্থা ত্র“টিপূর্ণ সুইমিং পুলের দায়িত্ব বুঝে নিতে অপারগতা প্রকাশ করে।
কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কোনো সমাধান না করেই পুরো বিল তুলে নিয়ে সটকে পড়ে। ওই অবস্থায় ২০০০ সালের ১১ এপ্রিল পুলটির উদ্বোধন করা হয়।