বরগুনা
বরগুনায় ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে যুবকের বিষপান!
নিজস্ব প্রতিবেদক : বরগুনার আমতলীতে পারিবারিক কলহের জেরে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে বিষপান করে নিয়াজ মোর্শেদ তনয় (২৬) নামে এক যুবক আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন।
শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) ভোর ৫টার দিকে তাদের বসতঘরে এ ঘটনা ঘটে। নিয়াজ মোর্শেদ তনয় আমতলী পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের মো. নান্নু মোল্লার ছেলে। আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডা. লুনা বিনতে হক প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রেরণ করেন।
বিষপানের আগে নিয়াজ মোর্শেদ তনয় তার ফেসবুক পোস্টে পারিবারিক সমস্যা নিয়ে লেখেন, ‘আমার শুভাকাঙ্ক্ষীরা ও পরিচিতজনরা অনেকেই আমার সমস্যার বিষয়ে জানেন। কিন্তু আপনারা হয়তো আসল ঘটনাটা জানেন না।
আমি দীর্ঘ ছয় বছর আগে ফারুক গাজীর মেয়ে ফারিয়া জান্নাতী মিমকে পারিবারিকভাবে বিয়ে করি। বিয়ের শুরুতেই রাকিব নামের একটি ছেলে আমাকে বলে, ‘ভাই আপনি আমার বউকে বিয়ে করেছেন। মিমের সঙ্গে আমার কিছুদিন আগে বিয়ে হয়েছে, কিন্তু ওর বাবা-মা মেনে নেয়নি এজন্য আর সংসার হয়নি।’
স্ত্রীর সঙ্গে বিভিন্নজনের অবৈধ সম্পর্কের নানা ঘটনা তুলে ধরে তনয় লেখেন- ‘আমি বাধ্য হয়ে তাকে তালাক নোটিশ পাঠালাম। সে নিজে তাতে স্বাক্ষর করে। তারপর ফেসবুকে একটি বানোয়াট মিথ্যে গল্প সাজিয়ে প্রমাণবিহীন একটি পোস্ট করে। পরে একদিন পুলিশ এসে আমাকে ধরে নিয়ে গেল। তারা নাকি আমার নামে মামলা করেছে, আমি তার মেয়েকে কুপিয়ে হাত কেটে দিয়েছি এবং ১০ লাখ টাকা যৌতুক চেয়েছি।’
বাবা-মা, বোন, আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবের উদ্দেশ্যে নানা আবেগঘন কথা লিখেন তনয়। এ ছাড়াও স্ত্রীর উদ্দেশ্যে তিনি লেখেন, ‘মিম তুমি এবং তোমার পরিবার জিতে গেছ। আমার মা-বাবাকে সন্তানহারা করেছ। আমার মেয়েকে বাবাহারা করেছ। আমার বোনদের ভাই হারা করেছ। এবার তুমি শান্তিতে থাকবে আশা করি।’
তার মৃত্যুর জন্য যাদের দায়ী করে তনয় পোস্ট লিখেন তারা হলো- ফারুক গাজী, মঞ্জু গাজী, মিম, মিঠু গাজী, খালিদ গাজী, প্রিন্স, জসিম, মনু, কালাম মুন্সি ও মঞ্জু গাজীর বউ ও মিঠুর বউ নিশাত।
এ বিষয়ে তনয়ের স্ত্রী মিমের ভাই মিঠু গাজী তনয়ের ফেসবুক পোস্টে করা অভিযোগ অস্বীকার করে তার ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘আমার বোনের সঙ্গে দুপক্ষের মিউচুয়াল ডিভোর্স হয়েছে এবং আইনজীবীদের মধ্যস্থতায় সালিশ হয়েছে। আমাদের পরিবারকে হেয় করার জন্য আত্মহত্যার নাটক সাজিয়েছে। এ অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।’
আমতলী থানার ওসি মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাইনি। পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।