বরগুনা
বঙ্গোপসাগরে ট্রলারডুবি: ভারতের জলসীমায় ৫৭ জেলে জীবিত উদ্ধার
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার সময় ঝড়ের কবলে পড়ে ‘এফবি মা-বাবা’ নামে বরগুনার একটি মাছ ধরা ট্রলার ডুবে যায়। ১২ ঘণ্টা পর শনিবার (২০ আগস্ট) বিকেলে ওই ১৭ জন জেলেকে ভাসমান অবস্থায় বেঙ্গোপসাগরের ভারতীয় অংশ থেকে উদ্ধার করে সেদেশের জেলেরা।
পরে তাদের দেশটির একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর আগে শুক্রবার (১৯ আগস্ট) গভীর সমুদ্রে ঝড়ের কবলে পাথরঘাটা উপজেলার নাচনাপাড়া ইউনিয়নের মো. ফারুক হোসেনের মালিকানাধীন ‘এফবি মা-বাবার দোয়া’।
অপরদিকে ভোলার ‘শুভ সকাল’ নামে একটি মাছ ধরা ট্রলারের জেলেসহ ৪০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে ভারতে। দুটি ট্রলারই প্রতিকূল আবহাওয়ায় দেশের জলসীমার বাইরে চলে যায়।
‘এফবি মা-বাবা’ ট্রলারের উদ্ধার হওয়া জেলেরা হলেন, পাথরঘাটা উপজেলার মঠেরখাল গ্রামের মাঝি মো. নাসির উদ্দিন, সহকারী মাঝি মো. সিরাজ, হাসেম, চালক মো.ইউসুফ আলী, শ্রমিক মো. সবুজ, মো. রফিক, মো. নিজাম, মো. সোহাগ, রাজা মিয়া, মো. সোহাগ, নূর জামান, আ. ছালাম, মো. হাসান, মো. সেলিম, দুলাল, এমাদুল ও মো. রাসেল। তাদের সবার বাড়ি বরগুনার পাথরঘাটায়।
ট্রলারটির মালিক মো. ফারুক মিয়া বলেন, ১৭ আগস্ট ১৫ দিনের জন্য সাগরে মাছ শিকারের জন্য যায়। শুক্রবার (১৯ আগস্ট) দুপুরের দিকে গভীর সমুদ্রে ঝড়ের কবলে পড়ে ট্রলারটি ১৭ জেলেসহ ডুবে যায়। প্রায় ১২ ঘণ্টা পর ভাসমান অবস্থায় একটি ট্রলারের জেলেরা উদ্ধার করে ভারতের পাথর প্রতিমা থানায় হস্তান্তর করে সেদেশের জেলেরা। পরে ওই এলাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে।
বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মাসুম বলেন, সাগরে ঝড়ের কবলে পরে বেশ কয়েকটি ট্রলার ডুবে যায় এবং অনেক জেলেও নিখোঁজ হয়। এর মধ্যে পাথরঘাটার আলম মোল্লার মালিকানাধীন ‘এফবি শাহ মোহছেন আউলিয়া-২’ ট্রলারটি ঝড়ের কবলে পরে শুক্রবার (১৯ আগস্ট) দুপুরের দিকে সাগরের মান্দারবাড়িয়া এলাকা হয়ে ভাসতে ভাসতে দেশের জলসীমা অতিক্রম করে ভারতীয় জলসীমায় অনুপ্রবেশ করায় নেটওয়ার্কের বাইরে চলে যায়। পরে আবহাওয়া স্বাভাবিক হলে তারা আস্তে আস্তে দেশিয় জলসীমায় ঢুকে পরে। পরে শনিবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে পাথরঘাটার বিএফডিসি ঘাটে ফিরে আসে।
রাত ১২ টার দিকে ফারুক মিয়ার মালিকানাধীন ‘এফবি মা-বাবার দোয়া’ ট্রলার ডুবে গেলেও ১২ ঘণ্টা পর উদ্ধারের খবর পাওয়া যায়।
এদিকে বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন।
তিনি মুঠোফোনে বলেন, কাল সকাল নাগাদ ভারতের পাথর প্রতিমা এলাকায় পৌঁছে যাবো। ইতোমধ্যেই চিকিৎসাধীন জেলেদের খোঁজ খবর নিয়েছি।
অপরদিকে ভারতের রবিন্দ নাথ রনজিতের মালিকানাধীন উদ্ধারকারীর জাহাজ ‘বিসমিল্লাহ -২’ থেকে একজন মুঠোফোনে বলেন, শনিবার সন্ধার পর ১৭ জেলেকে প্রথমে উদ্ধার করেছি। একই মালিকের ‘বিসমিল্লাহ-৩’ এর মাঝি কাবল জেনার নেতৃত্বে আরও ৪০ জেলেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
মুঠোফোনে ওই জাহাজের মালিক বাবলু দাস বলেন, উদ্ধারকৃত ৪০ জেলের বাড়ি বাংলাদেশের ভোলা জেলায়, ট্রলারের নাম ‘শুভ সকাল’।