বরিশাল
বই পুড়িয়ে কোটা বাতিল আন্দোলনে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা
এরপর সড়কে বই ও টায়ার জ্বালান তারা। বিকেল তিনটা পর্যন্ত তাদের অবরোধ কর্মসূচি বিদ্যমান ছিল। চারদিন ধরে কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করছে ববির শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ আন্দোলনের গতি বাড়িয়েছে।
সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহাল রেখে হাইকোর্টের আদেশের প্রতিবাদে বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কে করা অবরোধে নানা শ্লোগান দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। পরে কথা হলে জিহাদুল ইসলাম নামে ববির এক শিক্ষার্থী বলেন, সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহাল রেখে হাইকোর্ট আদেশ দিয়েছেন। কিন্তু এখন তো কেউ কোটা চায় না, সবাই মেধা দিয়ে এগিয়ে যেতে চায়। কোটা নিয়ে নাটকের অবসান না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব।
অপর শিক্ষার্থী তারেক বলেন, সরকারি চাকরিতে পুনরায় কোটা পদ্ধতি বহাল রাখা হয়েছে। এই খবর শোনা মাত্রই দেশের ছাত্রসমাজ কোটা বিরোধী আন্দোলনে রাজপথে নেমেছে। বেশ কয়েকদিন ধরে টানা অবস্থান কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছি।
ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ফারিয়া সুলতানা লিজা বলেন, ২০১৮ সালে আমাদের অধিকার ফিরে পেয়েছিলাম। অথচ তা আবার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। কোটা বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাস্তায় থাকবো। আমাদের কোটার প্রয়োজন নেই। কোটা আমাদের দেশের মেধাকে শূন্য করে দিচ্ছে। এটা শুধু আমাদের দাবি না, পুরো দেশের সাধারণ শিক্ষার্থীর দাবি। তাই শিগগিরই কোটা বাতিল করা হোক।
বিক্ষোভ চলাকালীন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ইসমাইল তালুকদার, সাজ্জাদ, লোকপ্রশাসন বিভাগের হাসিবুর রহমান শেখ, মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আবু নছর মোহাম্মদ তোহা, আইন বিভাগের শিক্ষার্থী মাইনুল ইসলাম, সিরাজুল ইসলাম, ইংরেজি বিভাগের তামিম ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অপর্না আক্তার।
শিক্ষার্থীরা বলেন, কোটা রেখে বাকিদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। যারা বাংলাদেশের মেধাবী রয়েছে, তাদের যোগ্যতা কেন কেড়ে নিচ্ছে? এ সিদ্ধান্ত দেশকে মেধাবি শূন্য জাতিতে পরিণত করবে। আমরা কোটা চাই না। অবিলম্বে এ পদ্ধতি বাতিল চাই। আশা করি কোটা বাতিল করে আদালত রায় প্রদান করবেন। যদি কোটা বাতিল না হয়, তাহলে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া হবে।
এদিকে বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়ক অবরোধের কারণে বরিশাল শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত ও খয়রাবাদ সেতু প্রান্তে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলা এবং ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলায় চলাচলকারী যানবাহনের চালক-হেলপাড়সহ যাত্রীদের পড়তে হয় ভোগান্তিতে। তবে অ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি প্রয়োজনের যানবাহনের চলাচল স্বাভাবিক ছিল। এদিকে গণপরিবহনে থাকা অনেককেই দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করে পায়ে হেঁটে আন্দোলনস্থল অতিক্রম করে গন্তব্যের দিকে যেতে দেখা গেছে।
বরিশাল মেট্রোপলিটনের বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ আর মুকুল বলেন, শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণ অবস্থান নিয়েছে। অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে, সেজন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সবসময় সজাগ আছে। যানবাহন ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছি যাতে তারা দ্রুত রাস্তা ছেড়ে দেয়।