বরিশাল
পুলিশের সামনেই পত্রিকার সম্পাদককে হত্যার চেষ্টা
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ থানা পুলিশের সামনেই বরিশাল থেকে প্রকাশিত দৈনিক দেশ জনপদ পত্রিকার সম্পাদক তহিদুল মজিদ মির্জা রিমনকে গলাচেপে শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। এসময় তার বোনের শ্লীলতাহানী করা হয়েছে।
পূর্ব বিরোধের জের ধরে ১৯ এপ্রিল দুপুর দেড়টার দিকে বরিশাল সদর উপজেলার চরমোনাই ইউনিয়নের বুখাইনগর এলাকায় ইছাগুড়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। এসময় একজন পুলিশ কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকলেও তার সামনেই হামলার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
এ ঘটনায় হামলার শিকার পত্রিকার সম্পাদক মির্জা রিমন বাদী হয়ে কোতয়ালী মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এতে একই এলাকার মির্জা আবুয়াল হোসেন কাজী ও তার ছেলে মির্জা টরীনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন কোতয়ালী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আনোয়ার হোসেন।
হামলার শিকার মির্জা রিমন জানিয়েছেন, ‘বুখাইনগরে আমার পৈত্রিক সম্পত্তিতে পুকুর করার জন্য শ্রমিক দিয়ে মাটি কাটাচ্ছি। এ জমি নিয়ে কোন বিরোধও নেই। কিছুদিন আগেও প্রতিপক্ষরা স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে আমিন দিয়ে ওই জমি মাপামাপি করিয়ে আমাকে সীমানা পিলার নির্ধারন করে দেয়। আমার নির্ধারিত জমিতে কয়েকদিন যাবত শ্রমিক দিয়ে মাটি কাটাতে থাকি। বিষয়টি আমার প্রতিপক্ষরা ভালভাবে মেনে নিতে পারেনি এবং স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের পুনরায় জানালেও তারা বিষয়টি সমাধান হয়ে গেছে বলেও জানান।
পরে কোন উপায়ন্ত না দেখে আমার প্রতিপক্ষরা অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে একটি নোটিশ জারি করান। নোটিশে উভয়পক্ষকে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার নির্দেশ দেয়া হয়। আজ বুধবার (১৯ এপ্রিল) আদলতের ওই নোটিশ নিয়ে কোতয়ালী থানার উপ-পরিদর্শক মোস্তাফিজুর রহমান আমার বাড়িতে তফসিলভুক্ত সম্পত্তিতে হাজির হয়ে আমাকে নোটিশ গ্রহন করার অনুরোধ জানান। আমি ‘দুপুরে চরমোনাই গিয়ে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে দেয়া নোটিশ উপ-পরিদর্শক মোস্তাফিজুর রহমানের কাছ থেকে গ্রহণ করি।
এ সময় মির্জা আবুয়াল হোসেন এবং তার ছেলে মির্জা টরীন অমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করতে থাকে। একপর্যায় তারা আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে শার্টের কলার ধরে গলা চেপে শ্বাসরোধ করার চেষ্টা চালায়।
মির্জা রিমন আরো অভিযোগ করে বলেন, ‘আমাকে বাঁচাতে আমার বড় বোন নাজমুন নাহার এগিয়ে এলে তাকেও এলোপাথারী মারধর এবং তার শ্লীলতাহানীর চেষ্টা করে। পুলিশ সদস্যের সামনে এমন ঘটনা ঘটলেও তিনি টরীনকে গ্রেফতার করেনি। বরং আমার ডাক-চিৎকার শুনে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে হামলাকারীরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
এ বিষয়ে কোতয়ালী মডেল থানার এসআই মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমি অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে দেয়া নোটিশের একটি কপি গ্রহন করার জন্য মির্জা রিমনকে চরমোনাই নিজ বাড়িতে আসতে বলি। তিনি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে মির্জা আবুয়াল হোসেন এবং তার ছেলে মির্জা টরীনের সাথে কথার কাটাকাটি শুরু হয়। এ সময় তাদের উভয়পক্ষকে নিভৃত করার চেষ্টা করি। কিন্তু হঠাৎ করেই টরীন মির্জা রিমনের শার্টের কলার ধরে গলা চেপে শ্বাসরোধ করার চেষ্টা চালায়। এ সময় তাকে বাঁচাতে গিয়ে আমিও আহত হই। ইতিমধ্যে মির্জা রিমন বাবা ও ছেলের বিরুদ্ধে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে কোতয়ালী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘মির্জা রিমন একটি অভিযোগ দিয়েছেন তার চাচাতো ভাইদের বিরুদ্ধে। এসআই মোস্তাফিজুর রহমানকে অভিযোগ তদন্তের জন্য বলা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।