পিরোজপুর
পিরোজপুরে সন্ত্রাসী হামলায় দুই পিপিসহ পাঁচ আইনজীবী আহত
পিরোজপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সভাকক্ষে দুই পক্ষের হট্টগোলের পর বহিরাগত সন্ত্রাসীদের হামলায় দুই সরকারি কৌঁসুলিসহ (জিপি ও বিশেষ পিপি) পাঁচ আইনজীবী আহত হয়েছেন। জেলা আইনজীবী সমিতির ভবনে এ ঘটনা ঘটে।
আহত আইনজীবীরা হলেন পিরোজপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি আব্দুর রাজ্জাক খান, জেলা জজ আদালতের জিপি প্রেমানন্দ হালদার, আইনজীবী সাঈদুর রহমান, আহসানুল কবির ও তরুণ ভট্টাচার্য। তাঁরা সবাই জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এমডি আউয়াল পক্ষের সমর্থক।
পিরোজপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও পিপি সরদার ফারুক আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘পিরোজপুরে আওয়ামী লীগ সমর্থক আইনজীবীরা দীর্ঘদিন ধরে দ্বিধাবিভক্ত। বিভক্তির জের ধরে আজকের ঘটনা ঘটেছে। ২০১৮ সালের নির্বাচন ও দ্বন্দ্বের জেরে আমার ওপর আলাউদ্দিন খানের লোকজন হামলা করেছিল। পিরোজপুর জেলা আইনজীবী সমিতিতে আওয়ামী লীগ সমর্থক আইনজীবীদের একটি পক্ষ (সভাপতি পক্ষ) জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম এ আউয়ালের অনুসারী। আরেকটি পক্ষ (সাধারণ সম্পাদক পক্ষ) পিরোজপুর-১ (সদর, নাজিরপুর, ইন্দুরকানি) আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমের অনুসারী।’
বিবিধ কারণে নির্বাচন করা যায়নি। মুলতবি সভা ডাকার বৈধতা আমাদের রয়েছে। আইনজীবীদের ওপর কারা হামলা করেছে, আমি তাদের চিনি না।
প্রত্যক্ষদর্শী ও আইনজীবী সমিতির কয়েকজন সদস্য জানান, গত বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি সমিতির সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছে। এ বছর ১৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সমিতির নির্বাচন শেষ করে নতুন কমিটির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করার কথা ছিল। কিন্তু জেলা আইনজীবী সমিতির নেতারা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্বাচন করতে ব্যর্থ হন। আজ দুপুরে জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি (মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি) মো. আলাউদ্দিন খান সমিতির সভাকক্ষে মুলতবি সভা ডাকেন। সেখানে তিনি সাধারণ সম্পাদক পক্ষের নেতাদের বাদ দিয়ে সাত সদস্যবিশিষ্ট একটি আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণার পরিকল্পনা করেন। অপর দিকে জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এমডি আউয়ালের পক্ষে সমিতির সাধারণ সদস্য এ কে এম আবদুস সহিদ একই স্থানে একই সময়ে তলবি সভা ডাকেন।
সভাকক্ষে দুই পক্ষের সবাই বসার পর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি আব্দুর রাজ্জাক খান (সাধারণ সম্পাদক পক্ষের) সভাপতির মুলতবি সভা ডাকার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। এ সময় দুই পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে হট্টগোল শুরু হয়। একপর্যায়ে সমিতি ভবনের বাইরে থাকা একদল সন্ত্রাসী সমিতির ফটক খুলে ভেতরে ঢুকে আইনজীবীদের ওপর হামলা চালায়। এতে তিনজন আইনজীবী আহত হন। এরপর সভা পণ্ড হয়ে যায়।
সভা শেষে আব্দুর রাজ্জাক খান ও সাঈদুর রহমান রিকশাযোগে বাড়ি ফেরার পথে ফায়ার সার্ভিসের কার্যালয়ের কাছে সন্ত্রাসীরা জিআই পাইপ নিয়ে তাঁদের ওপর হামলা করে। এতে সাঈদুর রহমানের দুই পা ও বাঁ হাতে আঘাত লাগে। আহত সাঈদুর রহমানকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।