আমতলি
পালিয়েছেন প্রেমিক-প্রেমিকা, ছেলের বাবাকে পেটালেন মেয়ের বাবা
নিজস্ব প্রতিবেদক॥ প্রেম করে তরুণীকে নিয়ে পালিয়ে যাওয়া ছেলের বাবাকে বাড়িতে ঢুকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করার সঙ্গে চর-থাপ্পড় মেরেছেন মেয়ের বাবা ও ভাই। তবে এই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে গা ঢাকা দিয়েছেন অভিযুক্তরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি বরগুনার আমতলী উপজেলার হলুদিয়া ইউনিয়নের কাঠালিয়া গ্রামের। সম্প্রতি প্রেম করে মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ায় শনিবার (২৮ মে) দুপুরের দিকে এ ঘটনা ঘটান মেয়ের বাবা।
এলাকাবাসী জানান, ভাইরাল হওয়া ভিডিওর বৃদ্ধের নাম আব্দুল হামিদ আকন। তার ছেলে নিপুন আকনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল একই এলাকার জিহাদ আকনের মেয়ের। সম্প্রতি তারা পালিয়ে যাওয়ায় খোঁজাখুঁজি শুরু করেন জিহাদ। মেয়েকে না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে হঠাৎ জিহাদ ও তার ছেলে হাসিব আকন হামলা চালান নিপুন আকনের বাড়িতে।
হামলার ঘটনার ছড়িয়ে পড়া তিন মিনিট দুই সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, অকথ্য ভাষায় গালাগালি করতে করতে নিপুনের বাড়িতে প্রবেশ করে জিহাদ আকন। এসময় নিপুন আকনের বাবা আব্দুল হামিদ আকনকে সামনে পেয়ে চর-থাপ্পড় মারতে শুরু করেন তিনি। একপর্যায়ে হতভম্ব হয়ে বসে পড়েন বৃদ্ধ হামিদ। এসময় জিহাদ আকনের ছেলেও পেছন থেকে তাকে চর-থাপ্পড় দিতে থাকেন। একপর্যায়ে বৃদ্ধ হামিদ আকন দৌড়ে পালালে তাকে লাঠি হাতে ধাওয়া করেন ওই দুজন।
বৃদ্ধ হামিদ আকনের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাকে চর-থাপ্পড় মারতে শুরু করেন জাহিদ ও তার ছেলে। একপর্যায়ে লাঠি হাতে নিলে প্রাণ বাঁচাতে দৌড়ে পালান তিনি।
তার দাবি- অপরাধ করলে শুধু তার ছেলে তো করেননি, জিহাদ আকনের মেয়েও করেছে। তাহলে তাকে এভাবে চর-থাপ্পড় কেন মারা হলো?
অবশ্য ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে আত্মগোপনে আছেন জিহাদ আকন ও তার ছেলে। তাই এবিষয় অভিযুক্তদের সঙ্গে কথা বলা যায়নি।
এ বিষয়ে হলুদিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান মিন্টু মল্লিক বলেন, ঘটনাটি দুঃখজনক। জিহাদ আকন আইনের আশ্রয় নিতে পারতেন বা এলাকায় সালিশ-বৈঠকের মাধ্যমেও নিষ্পত্তি করা যেত বিষয়টি। তবে তিনি যেভাবে বৃদ্ধ হামিদ আকনকে চর-থাপ্পড় মেরেছেন তা আইন লঙ্ঘন। চাইলে হামিদ আকনও এখন আইনের আশ্রয় নিতে পারেন। তবে বিষয়টি সালিশি বৈঠকে নিষ্পত্তির চেষ্টা চালাচ্ছেন বলেও জানান তিনি।
আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম মিজানুর রহমান বলেন, ভিডিওটি দেখার পর জিহাদ আকন ও তার ছেলেকে আটকের জন্য ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তবে তারা বর্তমানে আত্মগোপনে আছে। বৃদ্ধ হামিদ আকনের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।