বরিশাল
পটুয়াখালীতে বাদীকে রিমান্ডে নেওয়ার হুমকি পুলিশের
নিজস্ব প্রতিবেদক : পটুয়াখালীতে র্যাব পরিচয়ে অপহরণ করে মো. আতাউর রহমান ও মো. সিফাতের কাছ থেকে ২২ লাখ টাকা ছিনতাই করেছে ৭-৮ জনের একটি চক্র। ঘটনার শিকার আতাউর ও সিফাত পটুয়াখালী বিকাশের ডিলার সরকার ব্রাদার্স বিক্রয় প্রতিনিধি হিসাবে কর্মরত।
ছিনতাই টাকা বিভিন্ন এজেন্ট ব্যবসায়ীকে সরবরাহ করতে যাচ্ছিলেন তারা। বৃহস্পতিবার বাউফল উপজেলার বগা বন্দরসংলগ্ন হোগলা ব্রিজ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বাউফল থানায় অভিযোগ করতে গেলে পুলিশ মামলা না নিয়ে উলটো বাদীকে আটক করে রিমান্ডে নেওয়ার হুমকি দেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
এদিকে পৃথক ঘটনায় ১৪ জুন বিকাশের ডিলার সরকার ব্রাদার্সে কর্মরত বিক্রয় প্রতিনিধি আরিফ হোসেন ১৬ লাখ টাকা নিয়ে উধাও হন। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। এ বিষয়ে পটুয়াখালী সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জসীম বলেন, বিষয়টি নিয়ে পুলিশ মাঠে কাজ করছে।
অভিযোগে বলা হয়, বৃহস্পতিবার দুপুরে পটুয়াখালী বিকাশ ডিলার অফিস থেকে এজেন্ট ব্যবসায়ীদের টাকা সরবরাহ করতে নগদ ২২ লাখ টাকা নিয়ে বের হন বিক্রয় প্রতিনিধি মো. আতাউর রহমান ও মো. সিফাত। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মোটরসাইকেলে তারা বগা বন্দরসংলগ্ন হোগলা ব্রিজ এলাকায় পৌঁছান।
এ সময় ওতপেতে থাকা একটি মাইক্রোবাস থেকে র্যাবের পোশাক পরিহিত ৭-৮ জন নেমে তাদের রোধ করেন। তারা মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে আতাউর ও মো. সিফাতকে হাতকড়া লাগিয়ে মাইক্রো বাসটিতে ওঠান। গাড়িতে উঠিয়ে আতাউর ও সিফাতের চোখ কাপড় দিয়ে বেঁধে অস্ত্র ঠেকিয়ে টাকার ব্যাগটি ছিনিয়ে নেন। এছাড়া বিকাশে ব্যবহৃত তিনটি ও তাদের একটি মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে সিমকার্ড রেখে মোবাইল ফেরত দেন।
পরে মাইক্রোবাসে থাকা অবস্থায় হাতকড়া খুলে হাত ও পা রশি দিয়ে বেঁধে একইদিন বিকাল পৌনে তিনটার দিকে বরিশালের উজিরপুর উপজেলার আটিপাড়া রাস্তার পাশে তাদের রেখে যান চক্রটি। আতাউর ও সিফাতের চিৎকারে এলাকাবাসী এসে বাঁধন খুলে দেন। আতাউর ও সিফাত আটিপাড়া এলাকার আশিকুজ্জামানের ব্যবহৃত-০১৩১৬৬৬৮০০২ নম্বর থেকে ৯৯৯ নম্বরে কল দিয়ে সহযোগিতা চাইলে অপর প্রান্ত থেকে থানায় মামলা করতে পরামর্শ দেওয়া হয়।
আশিকুজ্জামান ফোনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। পরে শুক্রবার সরকার ব্রাদার্সে কর্মরত বিকাশের সুপারভাইজার রাহাত হোসেন সহকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে বাউফল থানায় অভিযোগ করতে ওসির কাছে যান। কিন্তু তিনি মামলা না নিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ (বাউফল সার্কেল) সুপারের কাছে পাঠান। বাদী পক্ষ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাদ্দাম হোসেনের কাছে গেলে তিনি কথা বলে মামলা না নিয়ে ফিরিয়ে দেন।
এ সময় বাদী পক্ষ মামলা নিতে অনুরোধ জানালে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাদ্দাম হোসেন বলেন, উল্লিখিত ঘটনা ও বক্তব্যে অসঙ্গতি রয়েছে। এ মামলা নিতে হলে উপস্থিত বাদীসহ চারজনকে আটক করে রিমান্ডে নিলে টাকা বের হবে। যে কারণে মামলা না করেই তারা ফিরে যান।
এ ঘটনায় বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শোনিত কুমার গায়েন বলেন, বাদীর বক্তব্যে অসঙ্গতি থাকায় আমি অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের কাছে পাঠাই। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাদ্দাম হোসেনকে বলেন, আমি ঢাকায় ট্রেনিংয়ে আছি। ওসির সঙ্গে কথা বলুন। এ প্রসঙ্গে নাম প্রকাশ না করার শর্তে পটুয়াখালী র্যাব-৮ এর এক কর্মকর্তা বলেন, বিষয়টি আমাদের জানা নেই। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।