বরিশাল সদর
ইউএনওর নিরাপত্তাকর্মীদের গুলিতে
নিভে গেল মুক্তিযোদ্ধা সন্তানের চোখের আলো
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ ইউএনওর নিরাপত্তারক্ষী আনসার সদস্যদের গুলিতে নিভে গেল মুক্তিযোদ্ধার সন্তান তানভীরের চোখের আলো। একই ঘটনায় চোখ নষ্ট হয়ে গেছে আরো দুই জন আওয়ামী নেতার। তারা বর্তমান ঢাকায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মুলাদী পৌরসভার মেয়র শফিকুজ্জামান রুবেল। গতকাল বরিশাল ক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত বিভাগীয় পৌর মেয়রদের সাংবাদিক সম্মেলন থেকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন। শফিকুজ্জামান রুবেল বলেন, গত বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ৯টায় বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবনে সিটি করপোরেশনের কর্মীরা নিয়মিত কাজের অংশ হিসেবে বির্বণ, ছেড়া ব্যানার অপসারণ করতে গেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাতে বাঁধা দেন।
এ নিয়ে সিটি কর্পোরেশনের কর্মচারীদের সাথে বিরোধ দেখা দিলে ২৩নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মনিরুল ইসলাম মনির এবং মহানগর যুবলীগ নেতা তানভীর সেখানে যান। ঘটনার আকস্মিকতায় ইউএনও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর গুলিবর্ষণ করলে মনিরুল ইসলাম ও তানভীরের চোখে গুলি লাগে।
তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ওইদিন রাতেই ঢাকায় নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল দায়িত্বরত চিকিৎসকরা জানিয়েছেন তাদের দু’জনের চোখ নষ্ট হয়ে গেছে। তারা দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন। একই তথ্য জানিয়েছেন আহত তানভীরের বড় ভাই তানজিল।
গতকাল রাতে দেশ জনপদকে তিনি জানান, চিকিৎসকরা জানিয়ে দিয়েছেন তার ভাইকে সারাজীবন এক চোখেই দেখতে হবে। এমন খবরে পরিবারের সবাই মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছে। তিনি বলেন, তানভীরের চোখে ৫ টি গুলি লেগেছে। চোখের চারপাশে ৪ টি গুলি লাগলেও একটি গুলির আঘাত চোখের মনিতে মারাত্মক জখম করেছে। ডাক্তার জানিয়েছে ক্ষতের পরিমান অনেক বেশী হওয়ায় কোনভাবেই চোখে আর দেখতে পাবেনা।
এসময় ক্ষোভ নিয়ে তিনি আরো বলেন, চোখতো হারিয়েছে এরপরও মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। আমার ভাইকে পুলিশের জিম্মায় রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। আমার বাবা একজন বীর প্রতীক। তিনি দেশের জন্য শহীদ হয়েছেন। মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হয়েও বিনা অপরাধে আমার ভাই আজ অবরুদ্ধ। ইউএনও’র আনসার বাহিনীর গুলিতে আমার ভাই’র চোখের আলো চিরতরে নিভে গেল। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে এর সঠিক বিচারের দাবি জানাই।