বরিশাল
নগরীতে পুলিশ ফাঁড়ির সামনেই গৃহবধূর স্বর্নালংকার লুট
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশাল নগরীতে চেতনানাশক স্প্রে ছিটিয়ে এক গৃহবধূর স্বর্নালংকার সহ নগদ অর্থ লুট করেছে দুর্বৃত্তরা। গত মঙ্গলবার ২৬ মার্চ নগরীর বটতলা পুলিশ ফাঁড়ির সামনেই এ ঘটনাটি ঘটে। এনিয়ে ভুক্তভোগীর স্বামী জাহিদুল ইসলাম ঘটনার বিররন দিয়ে ওইদিনই কোতয়ালি মডেল থানায় একটি জিডি করেন।
আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে গত ২ সপ্তাহে নগরীর বিভিন্ন স্থান থেকে প্রায় ৬-৮ টি পরিবারকে একই কায়দায় চেতনাশক স্প্রে করে লাখ লাখ টাকা লুট করেছে ওই চক্রের সদস্যরা। পুলিশ এখনো এই চক্রের সদস্যদের শনাক্ত করতে না পারায় নগরবাসীর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
ভুক্তভোগী ওই নারী মায়া বলেন, নগরীর ১৫ নং ওয়ার্ডের আমিরকুটির এলাকায় আমার ছোট একটি মুদির দোকান আছে। দোকানের মালামাল কেনার জন্য গত মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) বটতলা বাজারের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়ে বটতলা পুলিশ ফাঁড়ির সামনে পৌছালে একজন লোক আমার পথরোধ করে। আমার কাছে হোটেল বিসমিল্লাহ কোথায় জানতে চাইলে, আমি চিনি না বলা মাত্রই আরো ২ জন লোক আমার পাশে এসে দাঁড়ায়। তারা কিছু একটা বের করে আমার সামনে ধরলেই আমি বাকরুদ্ধ হয়ে পড়ি। এরপর ওই চক্রের ৩ জন আমাকে তাদের সাথে যেতে বললে আমি তাদের পিছে হাঁটতে শুরু করি। কিছু দুর যাওয়ার পর নগরীর গোঁড়াচাদ দাস রোডে আল জামিয়া আস সালাফিয়া মাদ্রাসার ভিতরে নিয়ে যায়। এরপর ওই মাদ্রাসার ভিতরে বসেই ওই চক্রের সদস্যরা আমার গলার চেইন, কানের দুল, মোবাইল ফোন ও নগদ অর্থ হাতয়ে নেয়। যা ওই মাদাস্রার সিসি ক্যামেরায় বিষয়টি ধরা পড়েছে। এরপর আমি অসুস্থ হয়ে পড়লে পরিচিত লোকজন এসে আমার স্বামীকে খবর দিলে আমাকে হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়।
এ বিষয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানিয়েছে লুটের ঘটনায় চেতনানাশক স্প্রে ব্যবহার করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, স্প্রেতে শক্তিশালী চেতনানাশক ওষুধ ব্যবহার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বটতলা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই সজল বলেন, ভুক্তভোগী নারী ও স্বামী আমাদের ফাঁড়িতে এসে বিষয়টি জানিয়েছে এবং তাদের মোবাইলে ওই ঘটনার একটি ভিডিও দেখিয়েছে। আমি সাথে-সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ছিনতাইয়ের বিষয়টি অবগত করেছি। তারা থানায় একটি জিডি করেছে। তিনি বলেন, আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে দুর-দুরন্ত থেকে আসা এসব চক্রের সদস্যরা নগরীতে সক্রিয় আছে। তবে আমাদের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এসব চক্রের ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় আছে।
এ বিষয়ে কোতয়ালি মডেল থানার ওসি এটিএম আরিচুল হক বলেন, বিষয়টি আমি জানি। চেতনানাশক ছিটানোর ঘটনায় জড়িত দুর্বৃত্তদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে। ভুক্তভোগী ওই নারীর ব্যাপারে আমাদের আইনগত ব্যবস্থা চলমান আছে।
এ বিষয়ে নগরীর ১৫ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সামজিদুল কবির বাবু বলেন, নগরীতে নতুন অপরাধী চক্র গড়ে উঠেছে। চেতনানাশক স্প্রে করে অপরাধীরা লোকজনের কাছ থেকে মালামাল ও টাকা-পয়সা লুট করে নিয়ে যাচ্ছে। এ চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তার করতে না পারলে আতঙ্ক কমবে না।