বরিশাল
কাটপট্টির স্বর্ণ ব্যবসায়ী ১০ জুয়াড়ি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরে
নগরীতে জমজমাট জুয়ার আসর
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশাল নগরীর বেশ কয়েকটি স্থানে সন্ধ্যা রাত থেকে ভোর পর্যন্ত বসছে জুয়ার আসর। শহরের বাসিন্দা এমন কয়েকজন ব্যক্তি-বিশেষ নেপথ্যে থেকে বহিরাগতদের সাহস শক্তির যোগান দিয়ে এই জুয়ার আসর বসাচ্ছে। শহরের বাকলার মোড়, কাটপট্টি, সদর রোড, আগরপুর রোড, বাজার রোড, বেলতলা, উপজেলা পরিষদের পেছনে, উত্তর আমানতগঞ্জ এবং নথুল্লাবাদ শের-ই বাংলা সড়কসহ আশপাশ এলাকাসমূহে বসছে ‘ওয়ান টেন’ এ জুয়া। প্রতিদিন স্থান বদল করে এই জুয়ার আসরে ২০ থেকে ২০ লাখ টাকার বেশি দেনদেন হলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের নিশানা করতে পারছে না। শহরের ব্যবসায়িক জোন কাটপট্টির অন্তত ১০ স্বর্ণ ব্যবসায়ী ‘ওয়ান টেন’ নামক জুয়ায় অংশ নিয়ে সর্বস্বান্ত হয়ে গেছেন।
ব্যবসায়ীদের একজন জানান, বরিশাল নগরীতে চলমান ওয়ান টেন জুয়া খেলাটি অন্তত ২ বছরের বেশি সময় ধরে চলছে। যারা বোর্ড বসাচ্ছে, তারা প্রতিদিনই নতুন নতুন স্থান নির্ধারিত করে এবং জুয়াড়িদের ফোনে সেখানে ডেকে আনে। এই ব্যবসায়ীর দাবি, তিনি এখন পর্যন্ত ১ কোটির বেশি টাকা ‘ওয়ান টেন’ খেলায় হেরেছেন। কিন্তু পারিবারিক চাপ এবং সর্বস্ব হারিয়ে ফেলায় তিনি এখন আর জুয়া খেলছেন না।
কাটপট্টির একটি সূত্র জানায়, ওই ব্যবসায়ীর মত অন্তত ১০ স্বর্ণ দোকানি ‘ওয়ান টেন’ জুয়ায় অংশ নিয়েছে এবং এখনও নিচ্ছে। এনিয়ে তাদের পরিবারে নানা অসন্তোস চললেও কিছুতেই যেনো রোখা যাচ্ছে না। বরং কিছু ব্যবসায়ীর পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে তারা মানুষের রক্ষিত স্বর্ণ অন্যত্র বন্দক রেখে সেই টাকাও জুয়া খেলে হেরেছেন। সমসাময়িক সময়ে জুয়াড়িদের মধ্যে ঝামেলায় বিষয়টি প্রকাশ্যে চলে আসে। সেই সাথে আলোচনায় এসেছে কাটপট্টির ১০ জুয়াড়ির অর্থ হারিয়ে নিস্ব হওয়ার বিষয়টি।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি সূত্র জানায়, বরিশাল শহরের বিভিন্ন পয়েন্টের আবাসিক এবং বেশকিছু অফিসসমূহে যে ‘ওয়ান টেন’ জুয়া চলছে তা তারাও টের পেয়েছে। কিন্তু জুয়াড়িরা প্রতিনিয়ত স্থান বদল করায় তাদের টার্গেট করতে কিছুটা সময় লাগছে। কিন্তু আজ নতুবা কাল তাদের আইনের আওতায় আসতেই হবে, মন্তব্য পাওয়া গেছে।
পুলিশ একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, ইতিমধ্যে তাদের কাছে জুয়াড়িতে একটি তালিকা এসেছে। এই তালিকায় শহরের কাটপট্টি এলাকার বেশ কয়েকজন স্বর্ণ ব্যবসায়ী রয়েছে, যারা জুয়া খেলে কোটি কোটি টাকা হারিয়ে নিস্বপ্রায়। পুলিশের সূত্রটি জানায়, এই ব্যবসায়ীদের গতিবিধি এবং তাদের যাতায়াত নজরদারিতে রাখা হয়েছে।
বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে কোতয়ালি মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন জানান, বিষয়টি তাদের নজরে আছে এবং একটি মোক্ষম সময়-সুযোগ খুঁজছেন। এই নীতিবিবর্জিত কাজে যে বা যারা সম্পৃক্ত থাকবে তাদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না, সে যত বড় শক্তিশালি বা ক্ষমতাধর হোক।
এ বিষয়ে পুলিশ কমিশনার মো. সাইফুল ইসলামও মোটেও ছাড় দিতে নারাজ। তিনি বলেন, মাঠপুলিশকে জুয়াড়িদের ধরতে কঠোর দিক-নির্দেশনা দেওয়া আছে। সৎ এবং স্বচ্ছ মানসিকতার এই কর্মকর্তার নির্দেশনা পেয়ে ইতিমধ্যে স্ব-স্ব থানা পুলিশের অফিসাররাও নড়েচড়ে বসেছেন।’