বরিশাল
চাঁদা তুলে ভিক্ষুকের মরদেহ ভোলায় পাঠালো বাঁশখালী পুলিশ
নিজস্ব প্রতিবেদক : ১০ মার্চ বিকেলে বাঁশখালী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ে একা এসে ভর্তি হন এক ভিক্ষুক। সোমবার (১১ মার্চ) সকাল ৯টায় তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। এরপর ১০ টায় বাঁশখালী থানার ডিউটি অফিসারকে ফোন দেওয়া হয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে। তাৎক্ষণিক বিষয়টি বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তোফায়েল আহমদকে অবগত করেন দায়িত্বরত ডিউটি অফিসার।
ওসি তোফায়েল আহমদ প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপপরিদর্শক (এসআই) নুর মোহাম্মদকে দায়িত্ব দেন। পরবর্তীতে এসআই নুর মোহাম্মদ ঘটনার বিস্তারিত জানতে পারেন এবং জানা যায় বাঁশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভর্তি ফর্ম অনুসারে মৃত ব্যক্তির নাম নাসির (৬০)। সেখানে তার পিতার নাম আনিসুল হক লেখা আছে।
ঠিকানা উল্লেখ করা হয়েছে টকবি, থানা-বোরহানগঞ্জ, জেলা-বরিশাল। কিন্তু জানা যায়, বোরহানগঞ্জ নামে কোনো থানা বরিশাল জেলায় নেই। কিন্তু থেমে যাননি বাঁশখালী থানার ওসি তোফায়েল আহমদ।বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ তোফায়েল আহমেদের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে এসআই নুর মোহাম্মদ ভিক্ষুকের ঠিকানা সুদূর বরিশাল এবং ভোলা জেলা পুলিশের সাথে যোগাযোগ করে ভোলা জেলার বোরহানউদ্দিন থানার টকবি ইউনিয়নের কাইচ্ছা কাজী বাড়ীর আনিসুল হকের ছেলে বলে জানতে পারেন। বহু কষ্টে ওই ভিক্ষুকের আত্মীয়-স্বজনের সাথে যোগাযোগ করলেও তেমন সাড়া পাওয়া যায়নি।
বাঁশখালী থানার অপারেশন অফিসার মো. কায়কোবাদ বলেন, ‘আত্মীয়-স্বজনের ঠিকানা পাওয়া গেলেও আর্থিক অভাবের কারণে তারা মৃতদেহ গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানায়। বহু চেষ্টায় ভিক্ষুকের আপন বোন সুফিয়া কামালের সাড়া মেলে। কিন্তু তিনি শর্ত দেন যে, তারা মৃতদেহের দাফন কাফনসহ পরিবহনের কোনো ব্যয় বহন করতে পারবেন না। পরবর্তীতে বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ তোফায়েল আহমেদ মৃত ব্যক্তির সকল ব্যয়ভার বহন করবেন বলে মৃত ব্যক্তির বোনকে আশ্বস্ত করলে মৃত ব্যক্তির বোনের ছেলে মো. কামাল মৃতদেহ গ্রহণ করতে আসেন।’
বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তোফায়েল আহমদ বলেন, ‘আমার দেওয়া প্রতিশ্রুতি মতে আমি নিজে এবং পরিদর্শক (তদন্ত) সুধাংশু শেখর হালদার, এসআই কায়কোবাদ, এসআই আহসান হাবীব, এসআই নুর মোহাম্মদসহ থানার সকল অফিসারদের সহযোগিতায় মৃতদেহ পরিবহন ও দাফন কাফন করার জন্য নগদ ২৩ হাজার টাকা দান করি।’