চরফ্যাশন
চরফ্যাশনে পুলিশের গুলিতে একজন নিহত, সহিংসতায় অর্ধশতাধিক আহত
চরফ্যাশন প্রতিনিধি॥ ভোলার চরফ্যাশনে সোমবার ইউপি নির্বাচনে পুলিশের গুলিতে মনির (২২) নামের এক ব্যক্তি নিহত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া পৃথক পৃথক সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ আলাউদ্দিনের অবস্থা আশঙ্কাজনক ।
উপজেলার হাজারীগঞ্জ ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের মেম্বার প্রার্থী ইয়াছিন (ফুটবল), রুহুল আমিন (বৈদ্যুতিক পাখা) অভিযোগ করেন- প্রতিপক্ষ প্রার্থী ইউছুফ সিকদার (টিউবওয়েল) প্রিজাইডিং অফিসারকে ম্যানেজ করে আমাদের এজেন্টদের বের করে দেয় এবং তার সন্ত্রাসী বাহিনী পথে পথে ভোটারদের বাঁধা প্রদান করে দফায় দফায় হামলা করে ১০/১২ জনকে আহত করেন। এরপর চর ফকিরা কো-এইড প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের পুলিশ গুলি ছুড়ে, এতে মনির ও আলাউদ্দিন গুলিবিদ্ধসহ তিন জন গুলিবিদ্ধ হয়। তাদের চরফ্যাশন হাসপাতালে ভর্তি করা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মনিরকে মৃত ঘোষণা করেন এবং আলাউদ্দিনকে বরিশাল রেফার করেন।
নিহত মনির উপজেলার হাজারীগঞ্জ ৫নং ওয়ার্ডের বশির উল্লাহর ছেলে। পেশায় জেলে। সে ফুটবল মার্কার প্রার্থী ইয়াছিনের সমর্থক।
চর ফকিরা কো-এইড প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের দায়িত্ব প্রিজাইডিং অফিসার ইমাম হোসেন জানান, বাহিরে দুই মেম্বার প্রার্থীর প্রার্থীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এরপর কেন্দ্রের কেচিগেট ভেঙ্গে ভোট কেন্দ্র দখলের চেষ্টা করলে পরিস্থিতি নিয়ন্দ্রেণে আনতে পুলিশ ১২ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে তবে হতাহতের ঘটনা ঘটনা ঘটেনি। এসময় ১০টা থেকে ১১ টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ বন্ধ থাকে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ভোট গ্রহণ চলে।
ওই কেন্দ্রের দায়িত্বরত ম্যাজিষ্ট্রট মনোয়ার বেগম বলেন- ঘটনার সময় অনদা ওয়ে ছিলাম। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে।
শশী ভূষণ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রফিকুল ইসলাম জানান, হাজারীগঞ্জ ইউনিয়নের ৫ নং ওয়াডের্র ভোট কেন্দ্রের বাইরে দুই মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে এক জন মারা যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ১২ রাউন্ড গুলি ছুড়ে। তবে পুলিশের গুলিতে কেউ মারা যায়নি। লাশ ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। নির্বাচনের পর পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে চর মাদ্রাজ ৯ নং ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, মেম্বার প্রার্থী রুহুল আমিনের সমর্থকরা লাঠি হাতে রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে। জিঙেস করলে তারা বলেন প্রতিপক্ষ প্রার্থী বহিরাগত সন্ত্রাসীদের এনে ভোট কেন্দ্রে যেতে বাধা প্রদান কওে এবং প্রার্থীকেও বাধা দেয় তাই তারা প্রার্থীকে কেন্দ্রে পৌঁছে দিয়েছে। রুহুল আমিন জানান, সকালে তার ৩ জনকে প্রতিপক্ষের সমর্থকরা পিটিয়ে আহত করেছে।
চরমাদ্রাজ ইউপির হামিদপুর ৪নং ওয়ার্ডে মোরগ প্রতিকের প্রার্থী মনির হোসেনকে প্রাননাশের হুমকিসহ ও তার এজেন্টদেও ভোট কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেননি অপর প্রার্থী ফুটবল প্রতিকের প্রার্থী লুৎফর রহমান দেওয়ান। প্রিজাইডিং ও পুলিংদের যোগসাজশে অনিয়মের অভিযোগ তুলে ভোট বর্জন করেন মনির হোসেন। ওই কেন্দ্রে সকাল ৯ টায় গিয়ে দেখা যায়। কেন্দ্রে ভোটার নেই। তবুও প্রিজাইডিং অফিসার জানান এক ঘন্টায় আড়াইশ ভোট গ্রহণ হয়েছে।
অপর প্রার্থী আবদুল কাদের অভিযোগ করেন- তার এজেন্ট আলমগীর মাষ্টারের বাড়ি ভাংচুর করেছে এবং তার ৩০ জন সমর্থকে পিটিয়ে আহত করেছে রুহুল আমিনের সমর্থকরা। প্রশাসনকে বলেও কান সহযোগিতা পায়নি। তিনি দুপুরের দিকে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ তুলে ভোট বর্জন করেছেন।
ক্ষতিগ্রস্ত আলমগীর হোসেন মাষ্টার জানন, তিনি আবদুল কাদেরের এজেন্ট ছিলেন সকালে রুহুল আমিনের সন্ত্রাসীরা বাড়িতে হামলা করে বাড়ি ঘর ভাংচুর করে এবং কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ করে। এসময় কয়েকটি ককটেল বাড়িতে ফেলে যায়।
জাহানপুর ২নং ওয়ার্ডের কবির হোসেন (ফুটবল) মার্কার মেম্বার প্রার্থী অভিযোগ করেন- প্রতিপক্ষ প্রার্থী মোশাররফ হোসেন (মোরগ) মার্কার প্রার্থী কর্মীরা ভোটারদের পথে পথে বাধা প্রদান করে এসময় ৪ সমর্থককে পিটিয়ে আহত করে।
এওয়াজপুর ৭ নং ওয়ার্ডের মেম্বার প্রার্থী কামরুল ও ফারুকের সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়েছে।
চরকলমী ৬ নং ওয়ার্ডে দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়েছে।
জাহানপুর ৪ নং ওয়ার্ডের নিরব মাল (ফুটবল) ও বজলুর রহমানের (মোরগ ) মার্কার সমর্থকদের মধ্যে রবিবার বিকেলে সংঘর্ষ হয়। এতে ১৫ জন আহত হয়েছে। এদিন হাজারিগঞ্জ ৯ ওয়ের্ডে বাহার ও আমজাদ দুই মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে ১৫ জন আহত হয়েছে।
চরফ্যাশন উপজেলার নির্বাচন অফিসার রফিকুল ইসলাম জানান, কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। নিহতের ঘটনা পুলিশ গুলিতে না নিজের ক্রোন্দেলে হয়েছে তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।