জাতীয়
কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ: কাস্টমসের সাবেক কর্মকর্তা ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে চট্টগ্রামে কাস্টমসের এক সাবেক কর্মকর্তা ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ওই কর্মকর্তা হলেন কাস্টমসের সাবেক রাজস্ব কর্মকর্তা আবদুল বারিক (৬৯) ও তার স্ত্রী ফেরদৌস ইয়াসমিন খানম (৫৩)।
সোমবার দুদক চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক সবুজ হোসেন বাদী হয়ে মামলা দুটি করেন। মঙ্গলবার দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-১-এর উপপরিচালক মো. নাজমুচ্ছাদাত এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বাংলা বলেন, ‘চট্টগ্রাম কাস্টমসের সাবেক রাজস্ব কর্মকর্তা আবদুল বারিক ও তার স্ত্রী ফেরদৌস ইয়াসমিনকে আসামি করে পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। জ্ঞাতআয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা দুটি করা হয়। এক মামলায় আবদুল বারিক ও তার স্ত্রী ফেরদৌস ইয়াসমিনকে আসামি করা হয়েছে। অপর মামলায় শুধুমাত্র আবদুল বারিককে আসামি করা হয়েছে।’
আবদুল বারিক নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী থানার রশিদপুর এলাকার মৃত মো. ইদ্রিছ মিয়ার ছেলে। পরিবার নিয়ে থাকেন চট্টগ্রামের ডবলমুরিং থানার আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিক এলাকায়।
বারিকের বিরুদ্ধে করা মামলার এজহারে বলা হয়, ২০২০ সালের ১৪ ডিসেম্বর আবদুল বারিক সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন। এতে তিন লাখ আট হাজার টাকার স্থাবর সম্পদ অর্জনের ঘোষণা দেন। যাচাই করে দেখা যায়, তিন লাখ আট হাজার টাকার স্থাবর সম্পদই অর্জন করেছেন। এছাড়া দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে ৪২ লাখ ২৪ হাজার ৬৭৮ টাকার অস্থাবর সম্পদ অর্জনের ঘোষণা দেন। কিন্তু যাচাই করে দেখা যায়, এক কোটি ৬৫ লাখ ৩৯ হাজার ৬০০ টাকার অস্থাবর সম্পদের মালিক। এক্ষেত্রে বারিক এক কোটি ২৩ লাখ ১৪ হাজার ৯২২ টাকার অস্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য জেনে বুঝে সম্পদ বিবরণীতে গোপন করেছেন।
রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায়, বারিকের মোট এক কোটি ৬৮ লাখ ৩৯ হাজার ৬০০ টাকার স্থাবর–অস্থাবর সম্পদ রয়েছে। দায় রয়েছে ১২ লাখ ৯৭ হাজার ৩২৮ টাকা। সেই হিসাবে নিট সম্পদের পরিমাণ এক কোটি ৫৫ লাখ ৫০ হাজার ২৭২ টাকা। পারিবারিক ব্যয় ও অন্যান্য ব্যয়সহ মোট দুই কোটি ৬৫ লাখ ৮ হাজার ৯৭৮ টাকার সম্পদ রয়েছে। এর মধ্যে গ্রহণযোগ্য আয় এক কোটি ৯৪ লাখ ৪৬ হাজার ৮২২ টাকা। এক্ষেত্রে সম্পদের চেয়ে আয়ের উৎস ৭০ লাখ ৬২ হাজার ১৫৬ টাকা কম। অতএব ৭০ লাখ ৬২ হাজার ১৫৬ টাকার জ্ঞাতআয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করে ভোগ দখলে রেখেছেন তিনি। যা দুর্নীতি দমন কমিশন আইন-২০০৪-এর ২৭(১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
বারিক ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে করা মামলার এজহারে বলা হয়, ফেরদৌস ইয়াসমিন খানম তার স্বামীর সহযোগিতায় এক কোটি ৯২ লাখ ৬৫ হাজার ৮০৮ টাকার জ্ঞাতআয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করে ভোগ দখলে রেখেছেন। সেইসঙ্গে ৩২ লাখ ২৬ হাজার ৬ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন। স্বামীর অসাধু উপায়ে অর্জিত অর্থ বৈধ করার অপচেষ্টা করে উক্ত সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাতআয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন ফেরদৌস ইয়াসমিন।