ঝালকাঠি
কুড়ি বছর ধরে ভোগাচ্ছে তিন কিলোমিটার রাস্তা
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ ঝালকাঠি জেলার দুটি উপজেলা রাজাপুর ও কাঁঠালিয়ার একটি সংযোগ সড়ক পাকা হয়নি কুড়ি বছরেও। এটি জনগুরুত্বপূর্ণ সড়ক হওয়ায় দুই উপজেলার ছয় গ্রামের বাসিন্দাদের দুর্ভোগের যেন কোনো শেষ নেই।
প্রতিদিন এই সড়কটি দিয়ে রাজাপুর উপজেলার বড়ইয়া ইউনিয়ন থেকে কাঁঠালিয়া উপজেলার আওরাবুনিয়া ইউনিয়নে আসা-যাওয়া করেন স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীসহ প্রায় চার হাজার মানুষ।
রাজাপুরের আরুয়া সোনারগাঁও থেকে কাঁঠালিয়া উপজেলার আওরাবুনিয়া ইউনিয়নের ছিটকি আবাসন প্রকল্প এলাকায় যেতে তিন কিলোমিটার কাঁচা রাস্তাটি পাকা করতে দাবি জানিয়ে আসছেন ভুক্তভোগীরা।
দুর্ভোগের কথা জানান এ অঞ্চলের বাসিন্দা ইউসুফ সিকদার, কামাল ফরাজী, ফুলবানু বেগম, শেফালী, কলেজছাত্র জাকারিয়া সিকদার, মঈন হাওলাদারসহ অনেকে।
তারা জানান, কাঁচা এই রাস্তাটি শীত-গ্রীষ্ম সব মৌসুমেই চলাচলের অনুপযোগী। শুকনা মৌসুমে ধুলায় আচ্ছন্ন থাকে, আর বর্ষায় কাদা ও পানিতে একাকার হয়ে যায়।
স্কুলশিক্ষক আবুল হোসেন বলেন, ‘রাস্তাটি নদীর কাছে হওয়ায় অতি জোয়ার, ভারি বর্ষণ ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় পানি বাড়লে অনেক জায়গা তলিয়ে যায়, এমনকি ভেঙেও যায়। এই সড়কটি পাকা করতে এলাকার মানুষ ২০ বছর ধরেই দাবি তুলছে। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি।’
তিন কিলোমিটার এই রাস্তাটিতে রয়েছে ১২টি বাঁশের সাঁকো। বর্ষার সময় পানি-কাঁদায় শিশু ও বয়স্কদের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে এ রাস্তা।
নিজেদের দুর্ভোগের কথা জানিয়ে শিক্ষার্থীরা জানান, এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন তাদের স্কুল-কলেজে ঝুঁকি নিয়েই যাতায়াত করতে হয়। বড়ইয়া ডিগ্রি কলেজ, সোনারগাঁও জবান আলী খান মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ছিটকি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং দারুসসুন্নাত মোহেব্বীয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের আসা-যাওয়া করতে গিয়ে প্রায়ই কাদায় তাদের পোশাক নষ্ট হয়ে যায়।
ভুক্তভোগী জাকির হোসেন বলেন, ‘১৫ বছর থেকে শুনে আসছি রাস্তাটি পাস হইছে, সামনের বছরে কাজ হবে, কিন্তু সামনের বছর এলেও আমাদের রাস্তাটি পাকা হয় না।’
রাজাপুর ও কাঁঠালিয়ার উপজেলা চেয়ারম্যানরা বলছেন, তারা বিভিন্ন সভায় এই সড়কের দাবি তুলেছেন। এলজিইডি কর্তৃপক্ষকে বারবার তাগাদাও দেয়া হয়েছে।
সঙ্গে আলাপকালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ঝালকাঠির নির্বাহী প্রকৌশলী রুহুল আমীন বলেন, ‘ওই সড়কটি জনগুরুত্বপূর্ণ কি না সেটা খোঁজ নিতে হবে। যদি জনগুরুত্বপূর্ণ হয়, তাহলে যেকোনো প্রজেক্টের মাধ্যমে রাস্তাটি পাকা করে দেয়ার ব্যবস্থা করব।’