বরিশাল
কীর্তনখোলায় বিষ দিয়ে চিংড়ি শিকার, হুমকির মুখে জীববৈচিত্র্য
নিজস্ব প্রতিবেদক : বরিশাল সদর উপজেলায় কীর্তনখোলা নদীতে বিষ প্রয়োগ করে অবাধে চিংড়ি মাছ শিকার করায় প্রাকৃতিকভাবে মাছের বংশবিস্তার বাঁধাগ্রস্তসহ জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়ছে। পানি কমে যাওয়ায় কীর্তনখোলায় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ধরায় মেতেছেন জেলেসহ মাছ শিকারিরা। তাদের প্রধান টার্গেট চিংড়ি শিকার করা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রতি বছর শুষ্ক মৌসুমে কিছু অসাধুচক্র কীর্তনখোলা নদীতে বিষ ঢেলে চিংড়ি শিকার করে। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। বিষ প্রয়োগে চিংড়ি শিকার করায় ছোট মাছগুলো মারা যায়। এছাড়া প্রাকৃতিকভাবে তৈরি মাছের খাবার নষ্ট এবং মাছের বংশ বিস্তার বাধাগ্রস্তসহ হুমকির মুখে পড়ছে জীববৈচিত্র্য। মৌসুমে নদীর পানি কমার সঙ্গে শিকারিরা বিষ প্রয়োগে চিংড়িসহ হরেক প্রজাতির মাছ আহরণ করে।
এমনি ঘটনা ঘটেছে বরিশাল সদর উপজেলার চরবাড়ীয়া ইউনিয়নের বোর্ড স্কুল এলাকার কীর্তনখোলা নদীর পাড়ে। স্থানীয় শিক্ষক আবুবক্কর সিদ্দিক বলেন, এক ধরনের বিষাক্ত পদার্থ (বিষ) যা পানিতে প্রয়োগ করলে চিংড়ি আধামরা হয়ে গভীর পানি থেকে ভেসে কূলে উঠে আসে। নদীর পানিতে ভেসে ওঠা এ সব মাছের বেশির ভাগই চিংড়ি। বিষক্রিয়ায় মরে অসংখ্য চিংড়ি নদীর কূলে ভাসতে থাকে। ফলে সহজেই চিংড়ি ধরা যায়।
বিষক্রিয়ায় মরা মাছগুলো হাতজাল, ঠেলাজাল, চালুনি কিংবা মশারি দিয়ে ধরা হয়। প্রাই সন্ধ্যাবেলা কিংবা ভোরের দিকে আমাদের এখানে নদীর পারে বিষ প্রয়োগে চিংড়ি নিধনের ঘটনা ঘটছে। এসব শিকারির জালে বড় আকারের চিংড়ি আটকা পড়লেও ছোটগুলো নদীতে ভেসে ওঠে। এসব মাছ শিকারিদের অধিকাংশ স্থানীয় বিত্তবান প্রভাবশালী সৌখিন মাছ শিকারি। আবার অনেক সময় জেলেদেরো দেখা জায়।
বরিশাল জেলা মৎস্য কর্মকর্তা রিপন কান্তি ঘোষ বলেন, কীর্তনখোলা নদীতে বিষ প্রয়োগের কারণে নির্বিচারে ছোট-বড় মাছ মারা যায়। এছাড়া প্রাকৃতিকভাবে তৈরি মাছের খাদ্য ও প্রজনন নষ্ট হয়ে যায়। এক কথায় বিষ দিয়ে মাছ শিকার জীববৈচিত্র্যের জন্য দারুণ হুমকিস্বরূপ। উন্মুক্ত জলাশয়ে বিষ ঢেলে মাছ শিকার করা একটি দণ্ডনীয় অপরাধ। এ বেআইনি কাজের সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে প্রচলিত আইনে শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।
বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ মাহাবুব উল্লাহ মজুমদার বলেন, কীর্তনখোলা পাড়ের জনসাধারণের সহায়তা পেলে বিষ প্রয়োগে চিংড়ি শিকারিদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা সম্ভব।’