বরিশাল
বরিশালে অনলাইনে প্রতারণার শিকার হয়ে গৃহবধূর আত্মহত্যা
বরিশালের মুলাদীতে অনলাইনে প্রতারণার শিকার হয়ে ৫ লক্ষাধিক টাকা হারিয়েছেন মারুফা নামের এক গৃহবধূ। টাকা ফেরৎ না পেয়ে তিনি কীটনাশক পানে আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি করেছেন স্বজনেরা। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৭টার দিকে উপজেলার মুলাদী সদর ইউনিয়নের উত্তর চরডাকাতিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
মারুফা আক্তার (১৯) নাজিরপুর ইউনিয়নের মধ্য নাজিরপুর গ্রামের ইউসুফ সরদারের মেয়ে এবং উত্তর চরডাকাতিয়া গ্রামের জাহিদ হাওলাদারের স্ত্রী। গত ৪ মাসে তিনি নিজের ও তার ভাবীর স্বর্ণালংকার বিক্রি করে অনলাইনের ৫ লক্ষাধিক টাকা দিয়েছেন বলে জানান তার বাবা ইউসুফ সরদার।
মারুফার স্বামী জাহিদ হাওলাদার জানান, গত সোমবার তিনি ঢাকা থেকে বাড়িতে আসেন। সোমবার বিকেল থেকে তার স্ত্রী অনেকটা বিষণ্ন ছিলেন। রাতেও কারও সঙ্গে তেমন কথা বলেননি। কিছু জানতে চেয়েও উত্তর পাওয়া যায়নি।
মঙ্গলবার সকাল ৭টার দিতে বাজারে যান জাহিদ। পরে বাড়ি থেকে জানানো হয় মারুফা কয়েকবার বমি করে অসুস্থ্য হয়ে পড়েছেন। বাড়ি ফিরে স্ত্রীর কীটনাশক পানের বিষয়টি বুঝতে পেরে তাকে দ্রুত মুলাদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
গৃহবধূর বাবা ইউসুফ সরদার জানান, তার জামাতা জাহিদ ঢাকায় চাকুরি করায় মারুফা বেশিরভাগ সময় বাবার বাড়িতে থাকতেন। প্রায় ৪ মাস ধরে মারুফা দিনের অনেকটা সময় মোবাইল ফোন নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন। সে কাউকে না জানিয়ে নিজের স্বর্ণালংকার বিক্রি করে প্রতারকদের টাকা দেয়।
পরে মারুফার ভাইয়ের স্ত্রীর স্বর্ণালংকারও বিক্রি করে প্রায় ৫ লাখ টাকা হারায়। এক মাস মারুফা স্থানীয় নাতিরহাট বাজারে স্বর্ণালংকার বিক্রি করতে ওই ব্যবসায়ী বিষয়টি জাহিদকে জানায়। পরে জিজ্ঞাসাবাদ ও বাড়ির লোকজনের কথাবার্তা শুনে মারুফা প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পারেন এবং টাকা ফেরতের চিন্তায় বিমর্ষ হয়ে পড়ে। টাকা ফেরৎ না পাওয়ায় সে আত্মহত্যা করে থাকতে পারে।
এ ব্যাপারে মুলাদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।