বরিশাল
বরিশালে যুবককে ‘ডেকে নিয়ে’ ডাকাত বলে মাইকিং, পরে পিটিয়ে হত্যা
বরিশালের বাকেরগঞ্জে সোহেল খান (৩৫) নামের এক যুবককে ডাকাত আখ্যা দিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাতভর নির্যাতন শেষে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। আজ রোববার সকালে উপজেলার চর কবাই এলাকা থেকে পুলিশ তাঁর লাশ উদ্ধার করে।
সোহেল ওই এলাকার নুর ইসলাম খানের ছেলে। তাঁর স্বজনদের অভিযোগ, চাষের জন্য তরমুজ খেত না দেওয়ায় পরিকল্পিতভাবে সোহেলকে হত্যা করা হয়।
সোহেলের স্ত্রী সাজেদা বেগম বলেন, ‘কয়েক দিন আগে কবাইচরে তরমুজ চাষের জন্য আমার স্বামীর কাছে জমি চেয়েছিলেন স্থানীয় শাহিন হাওলাদার, তাঁর ভাই ফিরোজ হাওলাদারসহ কয়েকজন। না দেওয়ায় তাঁরা আমার স্বামীকে রাতে মোবাইল ফোনে কল করে ডেকে নেন। এরপর তাঁকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন চালিয়ে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এরপর তাঁকে ডাকাত হিসেবে গুজব ছড়ানো হয়েছে।’
নিহতের মেয়ে ফাতেমা আক্তার বলে, ‘আমার বাবার কী দোষ ছিল? তাঁকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে ডাকাতির অভিযোগ তুলে পিটিয়ে মেরেছে। আমরা এর দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।’ সোহেলের মা নিলুফা বেগম বলেন, ‘আমার ছেলেকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমি এই হত্যার বিচার চাই।’
স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, শনিবার রাতে মসজিদের মাইকে মাইকিং করে সোহেলকে ডাকাত বলে প্রচার করা হয়। পরে তাঁকে আটকে রেখে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। রাতেই তাঁর মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর পুলিশে খবর দেওয়া হয়।
অভিযোগের বিষয়ে শাহিন হাওলাদার ও তাঁর ভাই ফিরোজ হাওলাদারের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
বাকেরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। ডাকাত আটক করার খবর পেলেও গিয়ে লাশ উদ্ধার করি। হত্যার পেছনে অন্য কোনো কারণ আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
আবুল কালাম আজাদ আরও বলেন, তরমুজখেত নিয়ে পূর্বশত্রুতার জেরে সোহেলকে মব সৃষ্টি করে হত্যা করা হয়েছে বলে তাঁর পরিবার অভিযোগ তুলেছেন। তবে সোহেলের বিরুদ্ধে চুরি, চাঁদাবাজি, হত্যাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। সেগুলোয় তিনি জামিনে ছিলেন।