বরিশাল
বরিশালে বিএনপি নেতার ভাইয়ের নেতৃত্বে বসতবাড়ি দখল
নিজস্ব প্রতিবেদক : বরিশালের হিজলায় বিএনপি নেতার ভাইয়ের নেতৃত্বে বসতবাড়ি দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) ১০ টা থেকে দুপুর ২ টার পর্যন্ত দখল সন্ত্রাস চালায় উপজেলার বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আলতাফ হোসেন খোকন দপ্তরির ছোট ভাই শহীদ দপ্তরি। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে তাদেরকে তোয়াক্কা করেনি দখলদারীরা।
এ ঘটনায় বিকেলে বরিশাল জেলা পুলিশ সুপার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভূক্তভোগী উপজেলার খুন্না গবিন্দপুর গ্রামের হারুন-অর রশিদ দেওয়ানের ছেলে আবু রায়হান।
জানা যায়- আবু রায়হান ও তার প্রায় ৩০ বছর যাবত খুন্না গবিন্দপুর গ্রামে বসবাস করছেন। আবু রায়হানের বাবা হারুন-অর রশিদ দেওয়ানের নামে সরকারি বন্দোবস্ত জমিন নদীতে বিলীন হওয়ার পরে বর্তমান সরকারি জমিতে বসবাস শুরু করেন। ২০০২ সালে বরিশাল জেলা প্রশাসক বরাবর বন্দোবস্তের আবেদন করলে সহকারি কমিশনার (ভূমি) সরেজমিন তদন্ত করে হারুন-অর রশিদের দখলে থাকা ২ একর জমি বন্দোবস্ত দেয়ার জন্য প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। হারুন-অর রশিদের মৃত্যুর পরে তার ছেলে আবু রায়হান পরিবার নিয়ে সেখানে বসবাস করে আসছেন।
সূত্র জানায়- ২০১১ সালে জনৈক নারায়ণ দাসের নামে জমিটি বন্দোবস্ত হয়। যা নারায়ণ দাস ও তার পরিবার জানতেন না। ২০১২ সালে মারা যান নারায়ণ দাস। তার ছেলে নরেন দাস ঢাকায় বসবাস করেন। তিনি জানান- ওই জমি তার বাবার নামে তা শুনেছেন কিছুদিন আগে। এদিকে জমিটির মালিকানা নিয়ে বরিশাল জেলা ও দায়রা জজ আদালতে একটি দেওয়ানী মামলা চলমান রয়েছে। এ বিষয়টি নিয়ে হিজলা থানায় বেশ কয়েক দফা সালিশ বৈঠক হলেও কোন সুরাহা মেলেনি। সম্প্রতি ওই জমির উপর লোলুপ দৃষ্টি পরে বিএনপি নেতার ভাই শহীদ দপ্তরির। শহীদ দপ্তরি নরেন দাসকে ফোন করে জানিয়েছেন জমিটি দখল নিতে পারেল তাকে (নরেন) কিছু টাকা দেবে। এরই ধারাবাহিকতায় শহীদ দপ্তরির নেতৃত্বে আফসার চৌকিদার, আনিচ হাওলাদারসহ ১০/১২ জনের একটি সন্ত্রাসী বাহিনী দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আবু রায়হানের বসতবাড়ি দখল করেন। খবর পেয়ে হিজলা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে তাদেরকে তোয়াক্কা করেনি শহীদ বাহিনী। পরে পুলিশ নিরুপায় হয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
বন্দোবস্ত আইনে রয়েছে- বন্দোবস্তের বিক্রি সাধারণত আইনগতভাবে ঠিক নয়, কারণ বন্দোবস্ত বা ইজারা সাধারণত মালিকানা হস্তান্তর করে না বরং ব্যবহারের অধিকার দেয়, এবং এই ধরনের বিক্রি অবৈধভাবে সম্পাদিত হয়ে থাকে।
এ বিষয়ে শহীদ দপ্তরি বলেন- ওই জমি নারায়ণ দাসের কাছ থেকে আমরা ৫ জন মিলে কিনেছিলাম। আমরা সেই সূত্রে জমিটি দখল করতে গিয়েছিলাম। তবে আবু রায়হানদের কোন কাগজপত্র নেই তারা কিসের বলে জমিতে থাকে? আমি ওই জমিতে থাকতে না পারলে তারাও থাকতে পারবে না।
বন্দোবস্তের জমি বিক্রি করা অবৈধ বিষয়টি জানেন কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন- জানি, কিন্তু সারাদেশেই এ সব জমি বেচা-বিক্রি চলে। এমনকি এখানেও ৭৯ টি জমি বিক্রি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলার বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আলতাফ হোসেন খোকন দপ্তরি বলেন- ওই জমি নিয়ে বিরোধ অনেক আগেই মিমাংসা হয়ে গেছে। তবে আজকের বিষয়টি আমার জানা নেই, আমি ঢাকায়। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।
হিজলা থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) শেখ আমিনুল ইসলাম বলেন- ওই জমিতে সুপারি পাড়া নিয়ে আজকে বিরোধের শঙ্কার কথা শুনে পুলিশ গিয়েছিল কিন্তু কোন ঝামেলা হয়নি। তারপরও বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।