বরগুনা
স্বামী-স্ত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু, এতিম ২ শিশুর দায়িত্ব নিলেন জামায়াত নেতা
বরগুনায় নিজ ঘরে রহস্যজনকভাবে স্ত্রীর গলাকাটা ও স্বামীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় অক্ষত অবস্থায় বেঁচে থাকে নিহত দম্পতির দুই শিশু সন্তান। তাদের দায়িত্ব নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতা অধ্যাপক মাওলানা মোহাম্মদ মহিব্বুল্লাহ হারুন। তিনি বরগুনা জেলা শাখার জামায়াতে ইসলামীর আমির।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বরগুনা সদর উপজেলার ৫ নম্বর আয়লা পাতাকাটা ইউনিয়নের দক্ষিণ ইটবাড়িয়া এলাকায় নিহত দম্পতির বাড়িতে গিয়ে তিনি এই ঘোষণা দেন। এ সময় তার সঙ্গে জামায়াতে ইসলামী বরগুনা জেলার অন্যান্য নেতাকর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) সকালে নিজ ঘর থেকে আকলিমা (২৭) ও স্বপন মোল্লা (৩২) নামের ওই দম্পতির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। আকলিমার গলাকাটা অবস্থায় এবং স্বপনের ঝুলন্ত অবস্থায় মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, স্বপন পেশায় একজন দিনমজুর ছিলেন। তিনি স্ত্রী ও দুই শিশু কন্যাকে নিয়ে আলাদা একটি ঘরে বসবাস করতেন। ঘটনার দিন সকালে স্বপনের ৫ বছর বয়সী মেয়ে সাদিয়া ঘুম থেকে উঠে ঘর থেকে বের হয়ে তার ফুফু রাজিয়াকে জানায়, মা কথা বলছে না। পরে রাজিয়া ঘরে গিয়ে এমন ভয়াবহ দৃশ্য দেখে চিৎকার দিলে আশপাশের মানুষ ও স্বজনরা ছুটে আসেন। স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ দুটি উদ্ধার করে।
ঘরের ভেতরে থাকা তাদের দুই শিশু ৫ বছর বয়সী সাদিয়া ও ১ বছর বয়সী আফসানা এ ঘটনায় অক্ষত থাকে।
পরবর্তীতে, বাবা-মাকে হারিয়ে এতিম হয়ে যাওয়া এই দুই শিশুর দেখভালের জন্য পরিবারের অন্য সদস্যদের মধ্যে তেমন কেউ এগিয়ে না আসায়, জামায়াতে ইসলামী বরগুনা জেলা শাখার আমির মাওলানা মোহাম্মদ মহিব্বুল্লাহ হারুন স্বজনদের সঙ্গে দেখা করে তাদের দায়িত্ব নেওয়ার ঘোষণা দেন। তিনি জানান, শিশুদের লেখাপড়া, থাকা-খাওয়া এবং ভবিষ্যতের সকল প্রয়োজনীয় ব্যয়ভার জামায়াতের পক্ষ থেকে বহন করা হবে।
নিহত আকলিমার ভাই শফিকুল ইসলাম বলেন, এতিম দুই শিশুকে নিয়ে আমরা খুবই চিন্তিত ছিলাম। তবে জামায়াতের আমির তাদের সমস্ত দায়িত্ব নেওয়ায় আমরা কিছুটা স্বস্তি পেয়েছি।
অধ্যাপক মাওলানা মহিব্বুল্লাহ হারুন বলেন, জানুয়ারি থেকে আমাদের মহিলা এতিমখানায় এই দুই শিশুকে ভর্তি করে দেওয়া হবে। সেখানে তাদের লেখাপড়া, থাকা-খাওয়া ও অন্যান্য সব প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়া তারা বড় হয়ে বিয়ে করতে চাইলে, সেই দায়িত্বও আমরা নেব।