বরিশাল
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ঐক্য ও বিজয় ফিস্টের খাবারে পোকামাকড়, শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) স্বৈরাচার পতনের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত ‘ঐক্য ও বিজয় ফিস্ট’ কর্মসূচিতে অস্বাস্থ্যকর ও নিম্নমানের খাবার সরবরাহ করায় তীব্র ক্ষোভ জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি ঘিরে চলছে ব্যাপক সমালোচনা।
একাধিক শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, জনপ্রতি ৫০ টাকা করে নেয়া হলেও সরবরাহকৃত খাবার ছিল অখাদ্য ও অস্বাস্থ্যকর। কেউ খাবারে পেয়েছেন ফড়িং, কেউ মাছি; অনেকের খাবারের মাংস ছিল আধা সিদ্ধ ও রক্তযুক্ত। এসব ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দায়িত্বজ্ঞানহীনতার চিত্র ফুটে উঠেছে বলে মনে করছেন তারা।’
শিক্ষার্থীরা জানান, খাবারে রীতিমতো পোকামাকড় পাওয়া গেছে, পোলাও ছিল বিস্বাদ এবং মুরগি ঠিকমতো রান্না হয়নি। বরিশাল শহরের পরিচিত ‘হুমাহুম রেস্টুরেন্ট’-এর খাবার নিয়েই মূলত অভিযোগের বিস্তার। তারা ‘হুমাহুম রেস্টুরেন্ট’ এর বিরূদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান। তবে কিছু বিভাগ নাজেমস রেস্টুরেন্ট থেকে খাবার সরবরাহ করেছে। এসব খাবার কিছুটা ভালো ছিলো বলে জানিয়েছেন কয়েকজন শিক্ষার্থী ।
ক্ষোভ প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তানজিল হোসেন নামে একজন লিখেন, প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ৫০ টাকা করে নিয়ে অত্যন্ত নিম্নমানের খাবার দেয়া হয়েছে। খাবারের পোলাও কিংবা মুরগি কোনোটিতেই স্বাদ ছিলো না। এর মধ্যে আবার মুরগি ঠিকমতো রান্না করা হয় নাই। কাঁচা, রক্ত মেশানো খাবার দেয়া হয়েছে।’
তিনি আরও লিখেন, এক বেলা খাবার খাওয়াতে যদি এত ব্যর্থতা থাকে তাইলে এই প্রশাসন ভবিষ্যতে কতটা সফল হবে। এটা বর্তমান প্রশাসনের একটা বড় ব্যর্থতা হিসেবে গণ্য হবে।’
আরেক শিক্ষার্থী লিখেন, খাবারে পোকা, প্রশাসন কিভাবে হুমাহুম’র মতো একটা নিম্নমানের রেস্টুরেন্টে থেকে খাবার অর্ডার করতে পারে?
এ সম্পর্কে জানতে চাইলে ‘ঐক্য ও বিজয় ফিস্ট’ বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক ড. রাহাত হোসাইন ফয়সাল বলেন, খাবারের জন্য বরিশালের সবচেয়ে ভালো দুটি রেস্টুরেন্ট বাছাই করা হয়েছে। প্রায় সাড়ে চার হাজার শিক্ষার্থীর জন্য খাবারের আয়োজন করা হয়েছে। একটি রেস্টুরেন্টের পক্ষে এতগুলো খাবারের প্যাকেট সরবরাহ করা সম্ভব নয়, তাই আমরা দুটি রেস্টুরেন্টে অর্ডার দিয়েছি। খাবারের অর্ডার দেওয়ার আগে আমরা খাবার যাচাই করে দেখেছি, কিন্তু এতগুলো খাবার সরবরাহের ক্ষেত্রে কিছু কিছু প্যাকেটে সমস্যা হয়ে থাকতে পারে।
তিনি আরও বলেন- বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি, তবে রেস্টুরেন্ট থেকে সরবরাহের সময় মানের দিক থেকে কিছুটা অসুবিধা হয়ে থাকতে পারে। যেহেতু এতগুলো খাবার সরবরাহ করা হয়েছে, সেক্ষেত্রে কিছু সমস্যা হওয়া স্বাভাবিক।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তৌফিক আলম বলেন, আমি খাবারের সময় বিভিন্ন বিভাগে গিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে খোঁজ নিয়েছি, তারা খাবারের মান ভালো বলে জানিয়েছে। তবুও এ ধরনের অভিযোগের বিষয়ে আমি দেখব।’