বরিশাল
সাংবাদিক পরিচয়ে ব্ল্যাকমেইল-চাঁদাবাজি, বরিশালে ২ যুবক আটক
সাংবাদিক পরিচয়ে প্রতারণাসহ চাঁদাবাজির অভিযোগে ভিন্ন পেশার দুই যুবককে আটক করেছে বরিশাল শহর পুলিশ। মঙ্গলবার নগরের হাসপাতাল রোডের আসবাবপত্র বিক্রেতা লিয়াকত আলী খন্দকারকে জিম্মি করতে গিয়ে মামুন রেদোয়ান এবং জাহাঙ্গীর মোল্লা নামের এই যুবক স্থানীয়দের হাতে আটক হন। পরে সংশ্লিষ্ট বরিশাল মেট্রোপলিটন কোতয়ালি মডেল থানা পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, শহরের ভাটারখাল এলাকার হাকিম আলীর ছেলে মামুন রেদোয়ান এবং পলাশপুরের সালাম মোল্লার ছেলে জাহাঙ্গীর মোল্লা ছেলে। তারা দুজন ভিন্ন পেশার মানুষ হলেও উভয়ে নিজেদের সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে অপরাধমূলক কর্মকান্ড চালিয়ে আসছিলেন। তাদের দুজনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মাধ্যম থেকে বিস্তর অভিযোগ আসতে ছিল।
এই দুজন ব্যক্তি মামুন এবং জাহাঙ্গীর গত ৬ ডিসেম্বর হাসপাতাল রোডের খন্দকার ফার্নিচারের স্বত্বাধিকারী মি. লিয়াকত আলী খন্দকারের কাছে ফোন করে নিজেদের সাংবাদিক পরিচয় দেন। এবং তাদের কাছে লিয়াকতের আপত্তিকর ভিডিও আছে জানিয়ে লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন।
ভুক্তভোগী লিয়াকত আলী জানান, ফোন করে সাংবাদিক পরিচয়ে আপত্তিকর ভিডিও আছে দাবি করায় তিনি কিছুটা বিব্রত হন এবং হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। এবং এর সত্যতা প্রমাণ করতে ভিডিও নিয়ে প্রতিষ্ঠানে আসার আমন্ত্রণ জানান। একদিন বাদে ৭ ডিসেম্বর মামুন এবং জাহাঙ্গীর দুজনে হাসপাতাল রোডে লিয়াকতের দোকানে গিয়ে ভিডিও দেখাতে ব্যর্থ হলেও ভয়ভীতি দেখিয়ে ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন।
বিস্ময়কর বিষয় হচ্ছে, এমন অপরাধমূলক কর্মকান্ডের পরে ফের একদিন বাদে ৮ ডিসেম্বর ব্যবসায়ী লিয়াকতকে ফোন করে আরও ৮০ হাজার টাকা দাবি করা হয়। এবং এই টাকা না পেলে সেই আপত্তিকর ভিডিও সমাজপাতায় ভাইরাল করার হুমকি দিয়ে মোবাইল সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে।
এই প্রতারণার বিষয়টি নিয়ে ব্যবসায়ী লিয়াকত আলী স্থানীয় জনসাধারণের সাথে আলোচনা করেন এবং প্রতিকার হিসেবে দুই সাংবাদিকের পেশাদারিত্ব নিশ্চিত হওয়ার সংকল্প নেন। এবং সকলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সেই সাংবাদিকের মুঠোফোনে কল করে মঙ্গলবার (০৯ ডিসেম্বর) হাসপাতাল রোডের ফার্নিচারের দোকানে আসতে বলেন।
পূর্বালোচনা অনুযায়ী মঙ্গলবার ঠিক ১১টার সময় মামুন এবং জাহাঙ্গীর হাজির হলে তাদের দুজনকে স্থানীয়রা আটক করে লিয়াকতের সেই আপত্তিকর ভিডিও দেখতে চাইলে তা প্রদর্শনে ব্যর্থ হয়। এতে ক্ষুব্ধ জনতা দুজনকে একচোট দেয় এবং পরক্ষণে কোতয়ালি মডেল থানায় খবর দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
বরিশাল মেট্রোপলিটন কোতয়ালি মডেল থানা পুলিশের ওসি আল মামুন উল ইসলাম বলেন, সাংবাদিক পরিচয়ে আসবাবপত্র বিক্রেতাকে জিম্মি করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার সময় দুজনকে আটক করে জনসাধারণ। পরবর্তীতে তাদের দুজনকে পুলিশে দিয়েছে। এই ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, মামলা হবে।’


