বরিশাল
এনসিএলে বরিশাল দল নিয়ে বিব্রত বিসিবি
গত মৌসুমে জাতীয় ক্রিকেট লিগের (এনসিএল) মাঝপথে বরিশাল দলের অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেন ফজলে মাহমুদ রাব্বি। তিন ম্যাচ পরে চিঠি দিয়ে বিসিবি টুর্নামেন্ট কমিটিকে অনুরোধ জানায় নতুন নেতৃত্ব বেছে নেওয়ার।
চিঠিতে নেতৃত্ব ছাড়ার পেছনের ঘটনা উল্লেখ না করলেও তিনি জানান, ১৫ জনের স্কোয়াডে না থাকায় ক্রিকেটার ইসলামুল হাসানের কাছ থেকে মৃত্যুর হুমকি পেয়েছিলেন। হুমকির ফোন রেকর্ডটি বিসিবির সংশ্লিষ্ট বিভাগেও আছে। একজন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটারের এ রকম আচরণে বিস্মিত বিসিবি কর্মকর্তারা।
বরিশালের টি২০ অধিনায়ক সোহাগ গাজীর সঙ্গে খারাপ আচরণ করার অভিযোগ আছে মঈন খানের বিরুদ্ধে। এ দুই ক্রিকেটারকে ফোনে না পাওয়ায় অভিযোগের প্রতিক্রিয়া দেওয়া সম্ভব হলো না।
ঘটনা আরও আছে– ক্রিকেটারদের বেপরোয়া আচরণের কারণে প্রধান কোচ মোহাম্মদ আশিকুর রহমান মজুমদার মাঝপথে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেন। তাঁর জায়গায় বর্ষিয়ান কোচ ওয়াহিদুল গনিকে নিয়োগ দিয়েছিল বিসিবি। তাঁর মতো কোচের সামনেও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে বলে জানান সোহাগ গাজী।
খেলোয়াড়, কোচিং স্টাফ, ম্যানেজমেন্টের বনিবনা না হওয়ায় বিসিবিতে একাধিক রিপোর্ট জমা পড়েছে। জাতীয় দল নির্বাচকরাও বিব্রত হয়েছিলেন দলটিতে বিশৃঙ্খলা দেখে। এবার তাই জাতীয় লিগের স্কোয়াড নির্বাচন ও কোচিং স্টাফ বাছাই করার ক্ষেত্রে কঠোর হতে চায় টুর্নামেন্ট কমিটি। সম্পূর্ণ নতুন করে নিয়োগ দেওয়া হতে পারে কোচিং স্টাফ।
কারণ ক্রিকেটারদের একাংশ কোচ আশিকুর রহমান, সহকারী কোচ শাহীন হোসেন ও ট্রেনার বিকাশ শর্মার বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ দিয়েছেন। ফলে বিসিবি টুর্নামেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান আকরাম খান ও প্রোগ্রাম হেড মিনহাজুল আবেদীন সিদ্ধান্ত নেন কোচিং ইউনিটে পরিবর্তন আনার।
মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আজ বিকাল সাড়ে ৩টায় অনুষ্ঠেয় এনসিএল সমন্বয় সভায় বরিশাল দলের ইস্যুতে কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। বরিশাল দলের কর্মকাণ্ড নিয়ে বিব্রত নান্নু বলেন, ‘একটি প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট দলে বিশৃঙ্খলা থাকলে ভালো খেলা হতে পারে না। খেলোয়াড়রা কোচ, অধিনায়ক মানে না। যে ভাষা ব্যবহার করে, তা শোনার মতো না। প্রথম শ্রেণির লিগের একটি দলের ক্রিকেট সংস্কৃতি না থাকা খুবই দুঃখজনক।’
বরিশালের ক্রিকেটাররা ঢাকা লিগে দল না পেলেও প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে খেলতে চান বলে অভিযোগ। বিসিবির বর্তমান সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুলের কাছে এনসিএলে না নেওয়ার অভিযোগ দিয়েছেন তারা। ক্রিকেট ফেস্ট দেখতে গিয়ে বুলবুলকে রীতিমতো বিব্রত হতে হয় ক্রিকেটারদের আর্জি শুনে।
বরিশাল বিভাগীয় দলের এই পরিবেশ কেন জানতে চাওয়া হলে ম্যানেজার তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘বরিশালে লিগ না হওয়ায় ক্রিকেটাররা সবাই জাতীয় লিগে খেলতে চায়। তারা মনে করে জাতীয় লিগের দলে থাকলে ঢাকা লিগে দল পাবে। তারা বুঝতে চায় না প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলে দেশের সেরা ক্রিকেটাররা। এছাড়া গত বছর যে ঘটনাগুলো ঘটেছে, সেগুলো নিয়ে কোনো রিপোর্ট চাওয়া হয়নি। বিসিবি থেকে না চাইলে নিজে থেকে রিপোর্ট দেওয়া যায় না।’
রাব্বি, গাজীরা গত মৌসুমের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ভবিষ্যতে দেখতে চান না। তারা চান বরিশালকেও চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মতো দল হিসেবে গড়ে তুলতে। যদিও বরিশালে বর্তমানে জাতীয় লিগে খেলার মতো ক্রিকেটার আছে মোটে সাতজন। তারা খেলে বিভিন্ন বিভাগের ক্রিকেটার নিয়ে।