বরিশাল
বরিশালে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় নবজাতকের মৃত্যু!
নিজস্ব প্রতিবেদক : বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার পাতারহাটে অবস্থিত পদ্মা হাসপাতাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় সাত মাসের এক প্রিম্যাচিউর নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। পরিবারের দাবি, প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সুবিধা না থাকা সত্ত্বেও সিজারিয়ান অপারেশন করানো হয়, যার ফলে জন্মের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই শিশুটির মৃত্যু ঘটে।
জানা যায়, শনিবার (২৬ জুলাই) উপজেলার কালিকাপুর এলাকার বাসিন্দা রাকিব হোসেন তার সাত মাসের গর্ভবতী স্ত্রী খাদিজা বেগমকে প্রসব ব্যথা অনুভব করলে পাতারহাটের পদ্মা হাসপাতাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যান। হাসপাতালের চিকিৎসক জানান, রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক, দ্রুত সিজারিয়ান অপারেশন না করলে গর্ভের শিশু বাঁচানো সম্ভব হবে না। চিকিৎসকদের কথায় আশ্বস্ত হয়ে খাদিজার পরিবারের সদস্যরা অপারেশনের জন্য রাজি হন।
পরবর্তীতে ডা. মাহমুদা জাহান মিতু ও ডা. ফারাবীর তত্ত্বাবধানে রাত ১১টার দিকে সিজারিয়ান অপারেশন সম্পন্ন করা হয়। তবে, জন্মগ্রহণকারী শিশুটি ছিল সাত মাসের প্রিম্যাচিউর, যার তৎক্ষণাৎ ইনকিউবেটর, অক্সিজেন, এনআইসিইউ (নিওনেটাল ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট), সিসিইউ (করোনারি কেয়ার ইউনিট) ও বিশেষায়িত চিকিৎসা প্রয়োজন ছিল। কিন্তু সংশ্লিষ্ট হাসপাতালে এসব কোনো সুযোগ-সুবিধা না থাকায় সদ্যোজাত শিশুটির অবস্থা অবনতি ঘটে।
অপারেশনের পরপরই শিশুর অবস্থার অবনতি হলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রাকিবের মা ও বোনের কাছ থেকে একটি বন্ড সই করিয়ে নেয়। রোববার সকালে নবজাতককে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়, অথচ খাদিজা বেগমকে রেখে দেওয়া হয় পদ্মা হাসপাতাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারেই। সেদিন রাতেই শিশুটির মৃত্যু ঘটে। বরিশাল মেডিকেলের চিকিৎসকরা জানান, প্রিম্যাচিউর শিশুটিকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা না দেয়ায় মৃত্যু ঘটেছে।
নবজাতকের বাবা রাকিব হোসেন অভিযোগ করে বলেন, শুধু টাকা আয় করার লোভে একটি নির্দয় সিদ্ধান্ত নিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। আমাদের অশিক্ষিত ভেবে যা বলেছে তা-ই বিশ্বাস করেছি। অথচ, তারা জানতেন এই শিশুর জন্য এনআইসিইউ অপরিহার্য ছিল। তারা জানতেন না, সাত মাসের শিশু প্রিম্যাচিউর? যদি জানতেন, তবে এমন স্থানে সিজার করার সাহস পেল কীভাবে?