ভোলা
ভোলায় বাল্কহেডের সঙ্গে নৌকার সংঘর্ষে জেলে নিখোঁজ
নিজস্ব প্রতিবেদক : ভোলার সদর উপজেলার উত্তরে ইলিশা নৌ থানাসংলগ্ন মেঘনা নদীতে বাল্কহেডের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে একটি মাছ ধরার নৌকা দুমড়েমুচড়ে গেছে। গতকাল রোববার রাত সাড়ে আটটার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ সময় ১১ জন জেলে নদীতে পড়ে যান। স্থানীয় জেলেরা ১০ জনকে উদ্ধার করলেও একজন নিখোঁজ আছেন। নিখোঁজ জেলের নাম আবুল হোসেন (৫০)। তিনি বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার উলানিয়া এলাকার বাসিন্দা।
তাঁর ছেলে বাদী হয়ে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানিয়েছে নৌ পুলিশ। বাল্কহেডের মাস্টার মো. হৃদয় (৩২) বলেন, ‘আমরা চট্টগ্রামের বেতাগী থেকে বালুভর্তি বাল্কহেড নিয়ে শ্রীপুর যাচ্ছিলাম। ইলিশাসংলগ্ন নদীপথে দুর্ঘটনার শিকার হই। পরে স্থানীয় জেলেরা আমাদের বাল্কহেড থামিয়ে মারধর করে মালামাল, মুঠোফোন ও টাকা ছিনিয়ে নেয়। এমনকি খাবারের চালের বস্তাও নিয়ে গেছে।’ অন্যদিকে দুর্ঘটনা থেকে প্রাণে বেঁচে যাওয়া জেলে আলমগীর হোসেন বলেন, ‘৩ অক্টোবর মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান শুরু হলে আমরা মাছ ধরা বন্ধ রাখি। অভাবে পড়ে সংসার চালানো কঠিন হয়ে যায়।
২৫ অক্টোবর রাতে মিলাদ পড়িয়ে কালিগঞ্জ মাছঘাট থেকে সাগর মোহনার উদ্দেশে রওনা হই। রাত সাড়ে আটটার দিকে ইলিশা নৌ থানাসংলগ্ন নদীতে একটি বাল্কহেডের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। আমাদের নৌকাটি মুহূর্তেই ভেঙে যায়। স্থানীয় জেলেদের সহায়তায় প্রাণে বাঁচি।’ দুর্ঘটনার কবলে পড়া নৌকার মাঝি হাবিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, তাঁদের নৌকায় ১১ জন জেলে ছিলেন, সবাই বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ উলানিয়া গ্রামের বাসিন্দা। বাল্কহেডে কোনো সিগন্যাল বাতি জ্বলছিল না। অন্ধকারে কিছুই দেখা যাচ্ছিল না, এ জন্য সংঘর্ষ ঘটে। নদীতে পড়া সব জেলেকে উদ্ধার করা গেলেও রান্নার কাজে থাকা বাবুর্চি আবুল হোসেন মাঝিকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি।
বাল্কহেডের মাস্টার মো. হৃদয় অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমরা নিয়ম মেনে সিগন্যাল দিয়েছিলাম। কিন্তু জেলেরা নৌকা আড়াআড়ি করে দেওয়ায় সংঘর্ষ হয়।’ ইলিশা নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈয়দ আশিকুর রহমান বলেন, নৌ নিরাপত্তা আইনে রাতের বেলা বাল্কহেড চলাচল নিষিদ্ধ। নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে বাল্কহেডটি বেপরোয়াভাবে চলছিল। আইন ভঙ্গের অভিযোগে বাল্কহেডের মাস্টারসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।



