বরিশাল
ঈদে এতিমরাও পড়তে চায় নতুন পোষাক
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ মিনারুল ইসলাম, বয়স তার ১০ বছর। জন্মের পর চোখে দেখেনি তার বাবাকে। মা দিন মজুরের কাজ করেই চালায় সংসার। তবে বাবা না থাকায় তার ঠিকানা হয়েছে এতিমখানার এতিমদের সাঙ্গে। তার মনেও চাচ্ছে এবার ঈদের নতুন পোষাক পড়তে। তবে মিনারের মত বেশ কিছু ছাত্র রয়েছে এতিমখানায় যাদের কেউর বাবা নেই অথবা কেউর মা নেই। সবার ইচ্ছে ঈদের নতুন একটা পাঞ্জাবি ও লুঙ্গি পড়তে। মাদ্রাসাটি বরিশাল শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের পলাশপুর ৭ নম্বর সড়কের গুচ্ছ গ্রামের মধ্য কালবার্ড সংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত রহমানিয়া কিরাতুল কুরআন হাফেজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানা।
সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, একদিকে মাদ্রাসার উন্নয়ন কাজ অন্যদিকে ঈদে এতিমদের নতুন পোশাক দেওয়া নিয়ে টেনশনে পড়েছে মাদ্রাসার কতৃপক্ষ। শুক্রবার কান্না জড়িত কন্ঠে প্রতিবেদককে মাদ্রাসার পরিচালক মাওঃ নুরুল ইসলাম ফিরোজী বলেন, চতুর্থ তলা ভবন নির্মাণের কাজ চলছে। ইতি মধ্যে তৃতীয় তলার ছাদ ঢালাইর কাজ শেষ হলেও বর্তমানে অর্থের অভাবে শেষ হচ্ছে না মাদ্রাসার ভবনের উন্নয়ন কাজ। তবে মহামারী করোনার কেটে গেলেও এখন ভবনের নির্মাণ কাজ এবং এতিম শিশুদের প্রতিদিনের খাবার যোগার করতে নানা সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফিরোজী সারাদিন ভাবছেন মাদ্রাসাটির উন্নয়ন কাজ নিয়ে। তারপরও পিছু পা দেননি তিনি ইতিমধ্যে মাদ্রাসা ভবনের অর্ধেক কাজ কাজ সম্পূর্ণ করেছে। তবে বেশ কিছু দিন ধরে এতিমখানা চাল সংকট দেখা দিয়েছে। রমজান মাস প্রায় শেষের দিক কি করবো ছাত্রদের নিয়ে বুঝতে পারছিনা।
তিনি বলেন, এতিম শিশুদের দেখ-ভাল করার জন্য নিজের পৈত্তিক সম্পত্তি বিক্রি করে ২০১৭ সালে এই এলাকায় একটি ভাঙ্গা টিনের ঘর নিয়ে রহমানিয়া কিরাতুল কুরআন হাফেজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার চালু করি। তবে মহান আল্লাহতালার ইচ্ছায় আজ এখানে একটি ভবন হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে ছাত্র বেড়ে যাওয়ার কারনে নিচ তলায় ছাত্রদের রাখতে খুব সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তৃতীয় তলার ছাদ ঢালাইর কাজ সম্পূর্ন হলেও চার পাশে জানালা না থাকায় ছাত্রদের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় নিতে পারছি না। মাদ্রাসার কাজ সম্পূর্ন করতে হলে রড, ইট, বালু, সিমেন্ট ও অর্থের প্রয়োজন।
সংবাদকর্মীদের প্রশ্নে ফিরোজী বলেন, এটা বস্তি এলাকা, এখানের মানুষ দিন আনে দিন খায়। তাদের নিজের খাবার যোগার করতেই কষ্ট হচ্ছে। তারা মাদ্রাসায় সহযোগীতা করবে কি ভাবে। এতিমদের জন্য আমার পৈত্তিক সম্পতি বিক্রি করেছি। এবং কি মাদ্রাসার উন্নয়ন কাজের বিভিন্ন এনজিও’র কাছ থেকে লোন নিয়ে কাজ চালিয়েছি। বর্তমানে এনজিও সমিতির কাছেও অনেক টাকার দেনায় আছি। মাদ্রাসায় শতাধিকের বেশি ছাত্র রয়েছে। তাদের তিন বেলা খাবার ও শিক্ষকদের বেতন দিতে বর্তমানে হিমশিম খাচ্ছি। এর মধ্যে মাদ্রাসায় নেই কোন চাল, ডালসহ কোন প্রকারের খাবার। তাই টেনশনেই আমার দিন পার হচ্ছে।
এতিমখানাটির এতিম শিশুদের পাশে সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। সাহায্যে দিতে পলাশপুর রহমানিয়া ক্বিরাতুল কুরআন হাফিজি মাদরাসা নামে আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, গির্জামহল্লা বরিশাল শাখার সঞ্চায়ী হিসাব নং ০১০১১২০১২৬৪৫৪ অথবা বিকাশ ০১৯২৪৬১২৯১৮ নাম্বারে যোগাযোগ করে সাহায্য পাঠাতে পারেন।