জাতীয়
ঈদযাত্রায় পদ্মা সেতুতে মোটরবাইক নিষিদ্ধের দাবি জাতীয় কমিটির
রিপোর্ট দেশজনপদ॥ পদ্মা সেতুতে আসন্ন ঈদযাত্রায় মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ ঘোষণার দাবি জানিয়েছে নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটি। দুর্ঘটনা রোধ ও নিরবিচ্ছিন্ন যান চলাচলের স্বার্থে ঈদুল আজহার আগে ও পরে মিলিয়ে অন্তত ২০ দিন এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
সোমবার সংগঠনের সভাপতি হাজি মো. শহীদ মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে এক বিবৃতিতে এ দাবি জানান।
দুই চাকার এ বাহনের সংখ্যা জ্যামিতিকহারে বাড়ছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, গত ৩১ মে পর্যন্ত সারা দেশে নিবন্ধিত মোটরবাইকের সংখ্যা ৩৭ লাখ ১ হাজার ৭৮৬; যার মধ্যে শুধু ঢাকায় নিবন্ধিত ৯ লাখ ৪৭ হাজার ১৩০টি। তবে এর বিপরীতে লাইসেন্সধারী চালক আছেন প্রায় ২৪ লাখ। বাকি ১৩ লক্ষাধিক চালকের লাইসেন্স নেই; যাদের একটি বড় অংশ অপ্রাপ্তবয়স্ক।
বিবৃতিতে জাতীয় কমিটির নেতারা বলেন, সাম্প্রতিককালে মোটরবাইকে যাতায়াতকারীদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় দুর্ঘটনাও আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে চলেছে। গত ঈদের আগে ও পরে ২৫ এপ্রিল থেকে ৮ মে পর্যন্ত সারা দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের ৪২ শতাংশই এই ক্ষুদ্রযানের চালক ও আরোহী ছিলেন। এছাড়া গত এপ্রিল ও মে মাসে সংঘটিত সড়ক দুর্ঘটনায় মোট নিহতের মধ্যে মোটরসাইকেল চালক ও আরোহীর হার ছিল যথাক্রমে ৪৪ ও ৪১ শতাংশ; যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
মোটরসাইকেলের বাণিজ্যিক ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, গত ঈদুল ফিতরে অগণিত ঘরমুখী মানুষ দুই চাকার এ বাহনে যাতায়াত করেছে এবং বিপজ্জনক বাহনটি কার্যত: গণপরিবহন হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। আগামী ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর সড়কপথে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ২১ জেলার মানুষের যাতায়াত অনেক বেড়ে যাবে এবং আসন্ন ঈদুল আজহায় এই চাপ কয়েকগুণ বাড়বে। সেই সঙ্গে বাড়বে মোটরসাইকেলের দৌরাত্ব্যও। এছাড়া ঈদের ছুটিতে হাজার হাজার মানুষ পদ্মা সেতু দেখতে আসবে; মোটরবাইকে চড়ে সেতুর এপার-ওপার যাতায়াত করবে।
পদ্মা সেতুর টোল আদায় প্রক্রিয়া (টিসিএস) আগামী ৬ মাসের আগে শতভাগ অটোমেশন পদ্ধতির আওতায় আসছে না উল্লেখ করে বিবৃতিতে আরও বলা হয়, যেসব টোলপ্লাজায় ম্যানুয়ালি টোল আদায় করা হবে সেখানে যানবাহনের গতি রোধ হবে। এ অবস্থায় হাজার হাজার মোটরবাইক চলাচল করলে টোলপ্লাজাগুলোতে যানবাহনের বাড়তি সময় ব্যয় ও সেতুর দু’পারে গাড়িজট সৃষ্টি হতে পারে। চালকেরা এই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সেতু পার হয়েই বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেল চালাবেন। এর ফলে সড়ক দুর্ঘটনার আশঙ্কাও অনেক বেড়ে যাবে।