দৌলতখান
ভোলায় কবর থেকে দুই নারীর কঙ্কাল চুরি
নিজস্ব প্রতিবেদক : ভোলায় রাতের আধাঁরে পারিবারিক কবরস্থান থেকে কঙ্কাল চুরির ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দৌলতখান উপজেলার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্য জয়নগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এসময় ৫টি কবর খোঁড়া হলেও দুটি কবর থেকে দুজন নারীর কঙ্কাল চুরি হয়। এ ঘটনায় জেলা জুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
চুরি হওয়ায় কঙ্কালের মধ্যে একটি হাজেরা বিবির (৩২) অন্যটি শাহনাজ বেগমের (৪২)। এছাড়া আব্দুল খায়ের, লতিফ হাওলাদার ও সাবিয়া খাতুন নামের আরও তিনজনের খোঁড়া হয়। তারা সবাই জয়নগর গ্রামের মুকুল ও মীর বাড়ির বাসিন্দা ছিলেন।
এদিকে কঙ্কাল চুরি বিষয়টি জানাজানি হলে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয় জেলা জুড়ে। এ ঘটনায় ওই দুই নারীর পরিবার কঙ্কাল ফিরে ফিরে পেতে পুলিশের সহযোগিতা চেয়েছেন। একইসঙ্গে এ ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, তিন সন্তানের মা হাজেরা বিবি মারা যান প্রায় ৯ মাস আগে। অন্যজন শাহনাজ বেগমও প্রায় এক বছর আগে মারা যান।
হাজেরা বিবির মা মনোয়ারা বেগম জানান, দীর্ঘদিন ক্যান্সারে আক্রান্ত থেকে ৯ মাস আগে মারা যান হাজেরা। মেয়ের মৃত্যুর পর পারিবারিক কবরস্থানে তার বাবা আবুল রহিমের কবরের পাশে দাফন করা হয়।
শনিবার গভীর রাত বা ভোরের দিকে কে বা কারা কবর খুঁড়ে হাজেরার কঙ্কাল নিয়ে গেছে। তিনি এ ঘটনার বিচার দাবি করেন। একইসঙ্গে মেয়ের কঙ্কাল ফিরে পেয়ে আবারও কবরে রাখতে চান। এজন্য পুলিশের সহযোগিতা চান তিনি। হাজেরা বিবির বড় ছেলে ৮ বছর বয়সী জিসানও তার মায়ের কঙ্কাল ফিরে পাওয়ার দাবি জানায়।
মৃত শাহনাজ বেগমের ভাসুরের ছেলে মো. রিয়াজ হোসেন জানান, তার চাচি ঢাকায় দীর্ঘদিন অসুস্থ হয়ে প্রায় এক বছর আগে মারা যান। পরে তারা ঢাকা থেকে চাচির লাশ গ্রামের বাড়িতে এসে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করেন।
কিন্তু রাতের আধাঁরে কবর থেকে লাশ নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় তারা হতবাক। এমন কাজ যারা করেছে তাদের খুঁজে বের করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করেন তিনি।
এদিকে মৃত আবুল খায়েরের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম জানান, শনিবার গভীর রাতে তার স্বামীর কবর খুঁড়ে লাশ নেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল। সকালে বিষয়টি জানতে পেরে দুপুরের দিকে আবারও কবর মাটি দিয়ে বাঁধাই করা হয়েছে।
স্থানীয়রা মো. রিপন, মো. সজিব, মনিয়া আক্তার ও শহিদুল ইসলাম জানান, তারা দুপুরের দিকে বিষয়টি শুনে ছুটে এসেছেন মুকুল ও মীর বাড়ির কবরস্থানে। কবর থেকে কীভাবে কেউ অন্যের কঙ্কাল চুরি করতে পারে, এমন প্রশ্ন তাদের। তারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের কঠোর শাস্তির দাবি জানান।
দৌলতখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিল্লুর রহমান জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তদন্ত চলছে। তবে পাঁচ পরিবারের কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।