বরিশাল
বরিশাল সদর গার্লস স্কুলে শতবর্ষ পূর্তি অনুষ্ঠান নিয়ে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন
নিজস্ব প্রতিবেদক : বরিশাল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শতবর্ষ পূর্তি অনুষ্ঠান নিয়ে পাল্টা সংবাদ সম্মেল করেছে অপর একটি পক্ষ। তাদের দাবি- নিবন্ধনকৃত ছাত্রীদের টাকা ফেরত কিংবা শতবর্ষ অনুষ্ঠান উদযাপিত হলেও তাদের কোন সমস্যা নেই।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুরে বরিশাল প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন।
সংবাদ সম্মেলনে নবগঠিত আহবায়ক কমিটির আহবায়ক বেগম ফয়জুন নাহার শেলী বলেন, গত ২০২৩ সালে বিদ্যালয়টির শতবর্ষ পূর্ণ হয়। এ উপলক্ষে ২৩ সেপ্টেম্বর গুটিকয়েক প্রাক্তন ছাত্রী কোন ধরনের পূর্ব আলোচনা ছাড়াই তাদের মতাদর্শের বাইরে সিনিয়র জুনিয়র প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের বঞ্চিত করে এক তরফা ভাবে প্রফেসর শাহ সাজোয়াক আহায়ক করে একটি কমিটি গঠন করে নিজেদের খেয়াল খুশি মত তা পরিচালনা করে।
শেলী আরও বলেন, প্রফেসর শায় সাজেদা কোন মতাদর্শের ছিলেন তা বরিশালবাসীর অজানা নয়। বিগত জাতীয় নির্বাচনে তার ভূমিকা বা গণঅভ্যুত্থানের সময় ফেসবুক পোস্টে তার স্ট্যাটাস এর প্রমাণ। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে কারা একচেটিয়া সুবিধা ভোগ করেছেন আর কারাই বা বঞ্চিত ছিলেন ইতিহাস তার সাক্ষী। তবে জাতি-ধর্ম-দল-মত নির্বিশেষে আমরা সবাই এই বিদ্যালয়ের ছাত্রী। তাই বিদ্যালয়ের শতবর্ষ পূর্তি উদযাপনের ক্ষেতে এ ধরনের পক্ষপাতীত্বে বেশকিছু প্রাক্তন ছাত্রী মনঃক্ষুণ্ণ হয়।
তারা এ নিয়ে কয়েকবার প্রফেসর শাহ সাজেদার বাসায় গেলে কোন ইতিবাচক সাড়া মেলেনি। এমনকি তার সভাপতিত্বে বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত মিটিংয়ে কয়েকজন জুনিয়র ছাত্রী ৬৫র ব্যাচের একজন আপাসহ অনেক সিনিয়র আপাদের নিয়ে অশালীন ভাষায় বক্তব্য রাখে। এরপর বরিশাল-৫ আসনের এমপি পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুকের স্মরণাপন্ন হলে তার পরামর্শে বরগুনা-২ আসনের এমপি এবং এই বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্রী নাদিরা সুলতানাকে আহ্বায়ক করে একটি সম্মিলিত কমিটি গঠন করে। এই কমিটিতে প্রফেসর শাহ সাজেদাকে যুগ্মআহ্বায়ক এবং তার কমিটির ৭০ ভাগ সদস্য অন্তর্ভুক্ত ছিল।
তিনি বলেন, দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে সে কমিটি নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে। এরপর বিদ্যালয়ের কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতি বরিশালের জেলা প্রশাসকের স্মরণাপন্ন হলে তিনি উভয় পক্ষকে ডেকে সম্মিলিতভাবে আরেকটি নতুন কমিটি গঠন এবং গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের আত্মত্যাগের প্রতি সম্মান জানিয়ে ২০২৪এ কোন অনুষ্ঠান না করার সিদ্ধান্ত দেন। ঐ মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রাক্তন ছাত্রীদের ডাকা দু’ টি সভার পর গত ৫ ডিসেম্বর শেলীকে আহ্বায়ক করে সাতজন যুগ্ম সচিব, দু’জন সদস্যসচিব, দশজন নির্বাহী সদস্য, বিদ্যালয়ের বয়োজ্যেষ্ঠদের সমন্বয়ে একটি উপদেষ্টা কমিটি এবং বারোটি সাবকমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়।
এরপর প্রথম কমিটির আহ্বায়ক প্রফেসর শাহ সাজেদা গত ২৪ ডিসেম্বর ভাউচার ছাড়া ৩ লাখ ৪২ হাজার ৯৬০ টাকা ব্যয় এবং ৪৯ লাখ ৬০ হাজার ১৫৩ টাকা সুদ সমেত আয়ের হিসাব এবং ১২টি শর্ত সম্বলিত তিনশত টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প পেপারের মাধ্যমে নতুন কমিটির কাছে তাদের ক্ষমতা হস্তান্তর করে। এই বার শর্তে নতুন কমিটির হাতে ব্যাংক হিসাব পরিচালনার সার্বিক ক্ষমতা হস্তান্তর করার কথা বলা হলেও তাদের ষড়যন্ত্রের কারণে নতুন কমিটি অর্থের কোন লেনদেন করতে পারনি।
বেগম ফয়জুন নাহার শেলী বলেন, গত বুধবার সকালে বরিশাল সোনালি ব্যাংকের ডিজিএম ব্যাংক সমস্যা নিরসনের জন্য উভয় পক্ষকে তার কার্যালয়ে আমন্ত্রণ জানালে নতুন কমিটি উপস্থিত থাকলেও প্রফেসর শাহ সাজেদা উপস্থিত হন নি। দ্রুত সম্ভব এ অনুষ্ঠানটি উদযাপনে ইচ্ছুক ছিলেন তারা। কিন্তু বর্তমানে প্রফেসর শাহ সাজেদার দলটি তাদের স্বাক্ষরিত চুক্তি ভঙ্গ করে অনুষ্ঠানটি বানচাল করতে তৎপর হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার প্রফেসর শাহ সাজেদা নিবন্ধনকৃত ছাত্রীদের টাকা ফেরত দেয়া হবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান।