বরিশাল
চোর-ডাকাত আতঙ্কে মেহেন্দিগঞ্জের চরবাসী
নিজস্ব প্রতিবেদক : চোর-ডাকাত আতঙ্কে দিন কাটছে বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার গোবিন্দপুর চরের বাসিন্দাদের। গত দুই দিন আগে এমনই একটি দুঃসাহসিক ডাকাতি ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ডাকাতির ঘটনায় গোটা চরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। বাধা দিতে গিয়ে আহত হয়েছেন ৪জন।
ডাকাতরা যাওয়ার পর স্থানীয়রা এসে আহতদের উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছেন। সোমবার (৯ ডিসেম্বর ) রাত আনুমানিক সাড়ে ৯টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ঘটনাটি ঘটে বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।
অভিযোগে জানা যায়, ঘটনার দিন রাতে ১শত থেকে দেড়শ জনের একটি ডাকাতদল ৩টি ট্রলারযোগে মেঘনা নদী পাড়ি দিয়ে গোবিন্দপুর চরে ঢুকে বাসিন্দাদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ৪৪টি গরু-মহিষ লুট করে নিয়ে যায়।
মাছঘাটের মালিক আবু বক্কর হাওলাদার জানান, তার ঘাটের সরকার জাকির মাঝি রাতেই ফোন করে ডাকাতির বিষয়টি জানালে তিনি দ্রুত ছুটে এসে দেখেন মাছঘাটের আসবাবপত্র ভাঙচুর, ক্যাশের টাকা, মাছ এবং টিভি নেই।
ডাকাতরা সব লুটপাট করে নিয়ে গেছে। ডাকাতরা পূর্বে তার কাছ থেকে ৪ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছিলো, তা দিতে অস্বীকার করায় এমন ঘটনাটি ঘটিয়েছে বলে জানান তিনি।
প্রত্যক্ষদর্শী মাছঘাটের সরকার জাকির মাঝি, পাইকার মনির হোসেন, ইউনুস ও বাছেত এবং কয়েল জসিম, দোকানদার ভুট্টু রাঢ়ী বলেন, ডাকাতরা মাছঘাটে হামলা করে নগদ ২লাখ টাকা, ৭০ হাজার টাকার মাছ, একটি টিভি লুট করেছে।
ডাকাত দলের সদস্যরা সকলে গোবিন্দপুর ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি ডাক্তার আব্দুর রহমান এর অনুসারী বলেও জানান তারা। প্রত্যক্ষদর্শীরা আরো বলেন, ডাকাতরা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তাদের উপর আক্রমণ করলে তারা দিক-বেদিক ছুটাছুটি করে প্রাণে বেঁচে যান, এসময় ৫-৬জন তারা চিনতে পারেন। এরা হলেন জাহিদ হাজারী, জয়নাল হাজারী, গিয়াস উদ্দিন ঢালী, আনোয়ার সিকদার, শাহেব আলী, নাগর সিকদার।
গরুর মালিক ভুক্তভোগী মাইন উদ্দিন মাঝি বলেন, দীর্ঘ ১৫-১৬ বছর ধরে তিনি এই চরে গরু মহিষ লালন পালন করে আসছেন। গত আগস্টে দেশের সরকার পরিবর্তন হওয়ার পর থেকে ডাক্তার আব্দুর রহমান লোকজন নিয়ে ওই চর দখল করার চেষ্টা করেছে। তিনি আমার নিকট ৩ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছেন। আমি চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় তিনি তার দলবল নিয়ে আমার ৭টিসহ ৪৪টি গরু মহিষ লুট করে নিয়ে গেছে।
এ ব্যাপারে আমি পুলিশের নিকট মৌখিক অভিযোগ করেছি। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই। অভিযুক্ত আব্দুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, এ চরের কাগজপত্র আমাদের থাকা স্বত্বেও বিগত দিনে আওয়ামীলীগ ভোগদখল করেছে, এখনও আমরা চরে গেলে বাধার সম্মুখীন হই। চাঁদা দাবি, মাছঘাটে হামলা ভাঙচুর এবং গরু মহিষ লুট করে নেওয়ার কথা সত্য নয়।
মেহেন্দিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. জাহাঙ্গীর আলম জানায়, ফোনে গরু-মহিষ লুটের একটা সংবাদ পেয়েছি, লিখিত অভিযোগ পাইনি, অভিযোগকারীকে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করতে বলেছি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে মাছঘাটে হামলা ভাঙচুর ও লুটপাট এর অভিযোগ পাইনি।