ঝালকাঠি
বিদ্যালয় উন্নয়নের বরাদ্দের টাকা আত্মসাৎ করলেন প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি
নিজস্ব প্রতিবেদক : ঝালকাঠির নলছিটিতে বিদ্যালয়ের উন্নয়ন খাতে বরাদ্দকৃত সাড়ে ১০ লক্ষাধিক টাকা কোনো কাজে ব্যয় না করে পুরোটাই আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে গৌরিপাশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শিক্ষক মো. নজরুল ইসলাম ও সাবেক সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন লাভলুর বিরুদ্ধে।
এ বিষয়ে সোমবার (৬ ডিসেম্বর) নলছিটি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে- ২০১৮-১৯ অর্থবছরে চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচির (পিইডিপি-৪) আওতায় মাইনর ক্যাটাগরির মেরামতের জন্য ২ লাখ টাকা, স্লিপ বরাদ্দ ৫০ হাজার টাকা, প্রাক-প্রাথমিক ১০ হাজার টাকা,২০২০-২১ অর্থবছরে ক্ষুদ্র মেরামত দুই লাখ টাকা, স্লিপ বরাদ্দ ৫০ হাজার টাকা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা ২৪ হাজার টাকা, প্রাক-প্রাথমিক ১০ হাজার টাকা; ২০২১-২২ অর্থবছরে মাইনর মেরামত দুই লাখ টাকা, রুটিন মেরামত ৮০ হাজার টাকা, স্লিপ বরাদ্দ ৫০ হাজার টাকা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা ২৪ হাজার টাকা, প্রাক-প্রাথমিক ১০ হাজার টাকা; ২০২২-২৩ অর্থবছরে স্লিপ বরাদ্দ ৫০ হাজার টাকা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা ২৪ হাজার টাকা, প্রাক-প্রাথমিক ১০ হাজার টাকা, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে স্লিপ বরাদ্দ ৫০ হাজার টাকা ও প্রাক-প্রাথমিক ১০ হাজার টাকা বরাদ্দ আসে। বরাদ্দকৃত এ টাকার কোনো উন্নয়নমূলক কাজ না করে আত্মসাৎ করেছেন তারা।
২০২৪-২৫ অর্থবছরে বরাদ্দকৃত অর্থ দিয়ে শুধু কয়েকটি বেঞ্চে রং এবং একটি শহিদ মিনার তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া কোনো কাজ করা হয়নি। এছাড়াও বিদ্যালয়ের অনুকূলে অনেক বরাদ্দ এসেছে যা দিয়ে বিদ্যালয়ের উন্নয়নমূলক কিছুই করা হয়নি।
অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়- বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের উপস্থিতি অনিয়মিত এতে বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা পাঠদান থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের এমন অনিয়মিত উপস্থিতির কারণে বিদ্যালয়ে পাঠদান চলে ঢিলেঢালাভাবে। এতে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ব্যাহত হবার পাশাপাশি বিদ্যালয়ের সার্বিক শৃঙ্খলায় ব্যাঘাত ঘটে।
এছাড়া বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে সভাপতির যোগসাজশে ওয়াশ ব্লক নির্মাণ করা হয়েছে। খেলার মাঠে ওয়াশ ব্লক নির্মাণ করায় শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক বিকাশে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। সুষ্ঠু তদন্তসাপেক্ষে এর যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা।
সব অভিযোগ অস্বীকার করে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম জানান, ২০১৮ সালের জুন মাসে আমি এই স্কুলে যোগদান করি। এরপর থেকে যত বরাদ্দ এসেছে তার কাজ করেছি। বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান ও অবকাঠামোর পরিবর্তন করেছি। বদলিজনিত একটি বিষয়ে আমাকে হয়রানি করার জন্য এমন মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও সাবেক পৌর কাউন্সিলর আব্দুল্লাহ আল মামুন লাভলু সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বিদ্যালয়ে এক মেয়াদে সভাপতি ছিলাম। ওই সময়ে যে বরাদ্দ এসেছিল তার সঠিকভাবে কাজ করানো হয়েছে। যার ভাউচার প্রধান শিক্ষকের কাছে সংরক্ষিত আছে।
ঝালকাঠি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আ.ব.ম.আসাদুল আলম বলেন,এ বিষয়ে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নলছিটি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. নজরুল ইসলাম জানান, অনিয়মের অভিযোগ পেয়েছি তদন্তসাপেক্ষে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।