বরিশাল
বরিশালে অবসরের ৬ মাস আগেই প্রধান শিক্ষককে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ!
নিজস্ব প্রতিবেদক : বরিশালের মুলাদীতে অবসরের ছয় মাস আগেই একজন প্রধান শিক্ষককে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার গাছুয়া ইউনিয়নের সৈয়দা শাহজাদী বেগম নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আফরোজা বেগম অবৈধভাবে ওই বিদ্যালয়ে পাঁচ বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ নেন বলে জানান শিক্ষক ও অভিভাবকেরা।
বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয় থেকে সৈয়দা শাহজাদী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বই নেওয়ার সময় বিষয়টি জানাজানি হয়।
আফরোজা বেগমের গত ২ নভেম্বর অবসর গ্রহণের কথা ছিল। তিনি ২০২৪ সালের ২১ মে একটি রেজল্যুশন করে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদে থাকার জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ নেন। তাঁর স্বামী কাজী জানে আলম দুলাল বিদ্যালয়ের তৎকালীন সভাপতি থাকায় ইচ্ছেমতো রেজল্যুশন করে এই নিয়োগ নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
তবে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সহিদুল ইসলাম বলেন, অবসরে যাওয়ার আগে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ লাভের কোনো সুযোগ নেই।
সৈয়দা শাহজাদী বেগম নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আফরোজা বেগমের জন্ম তারিখ ২ নভেম্বর ১৯৬৪। ২০২৪ সালের ১ নভেম্বর বিদ্যালয়ে তাঁর শেষ কর্মদিবস ছিল। কিন্তু তিনি পাঁচ বছর চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেয়েছেন দাবি করে নিজেকে প্রধান শিক্ষক পরিচয় দিচ্ছেন।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. শহিদুল ইসলাম মিলন বলেন, প্রধান শিক্ষক আফরোজা বেগম অবসরে যাওয়ার ছয় মাস আগেই গত ২১ মে ২০২৪ তারিখ একটি রেজল্যুশন করে পাঁচ বছর চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ নিয়েছেন। কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র অনুসারে বিদ্যালয়ে চুক্তিভিত্তিক প্রধান শিক্ষক নিয়োগের বৈধতা নেই। এ ছাড়া যে কমিটির মাধ্যমে আফরোজা বেগমকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেখানো হয়েছে, সেই কমিটি গত বছর ২ এপ্রিল বরিশাল শিক্ষা বোর্ড বাতিল করেছিল।
সাবেক প্রধান শিক্ষক আফরোজা বেগম বলেন, ‘অবসরের আগে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অভিভাবকদের অনুরোধে পরিচালনা পর্ষদ (ম্যানেজিং কমিটি) পাঁচ বছর চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়েছে। মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পেতে উচ্চ আদালতে (হাইকোর্টে) রিট করেছি। বিষয়টি নিস্পত্তি না হওয়ায় প্রধান শিক্ষক হিসেবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।’
এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সহিদুল ইসলাম বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র অনুযায়ী চুক্তিভিত্তিক প্রতিষ্ঠান প্রধান নিয়োগ স্থগিত রয়েছে। তবে আফরোজা বেগম চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের জন্য উচ্চ আদালতে একটি রিট করেছেন। আদালত বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য শিক্ষামন্ত্রণালয়ের সচিবকে নির্দেশনা দিয়েছেন। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার পরে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’