সারাদেশ
ইলিশ শিকারে নেমে খুশি জেলেরা, ‘আল্লায় মোগো মোনের আশা পূরণ হরছে’
৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে গতকাল বুধবার মধ্যরাত থেকে ইলিশ শিকারে জাল নিয়ে সাগরে নেমে পড়েছেন জেলেরা। বরগুনার তালতলীতে সাগরের কাছাকাছি এলাকায় জাল ফেলে একেকজন জেলে ১৫-২০ কেজি মাছ পেয়েছে। এতে বেজায় খুশি তাঁরা।
স্থানীয় জেলে জাকির সিকদার বলেন, ‘আল্লায় মোগো মোনের আশা পূরণ হরছে। এই রহম যেন সাগরে সারা মৌসুম ইলিশ মাছ ধরা পড়ে।’
সরকার সমুদ্রে ১৫ এপ্রিল থেকে ১১ জুন পর্যন্ত সব প্রকার মৎস্য নৌযান কর্তৃক যেকোনো প্রজাতির মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধ করেছিল। সামুদ্রিক জলসীমায় মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল। তা গতকাল মধ্যরাতে শেষ হয়েছে।
তালতলীর ৮ হাজার ৭৯৯ জেলের মধ্যে অধিকাংশই গতকাল মধ্যরাতের পর মাছ শিকারে সাগরে জাল ফেলেন। সাগরের কিনারের জেলেরা ইলিশ নিয়ে তীরে ফেরায় সরগরম হয়ে উঠেছে উপজেলার ফকিরহাট উপমৎস্য অবতরণ কেন্দ্র। তবে গভীর সমুদ্রের জেলেরা এখনো ফেরেননি। তাঁদের ফিরতে দু-তিন দিন সময় লাগবে।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে ইলিশ নিয়ে ট্রলার ফিরতে শুরু করে। সেখানে মাছ বিক্রি করা জেলে কবির বলেন, ‘রাতে জাল ফেলে ১৫ কেজি মাঝারি ধরনের ইলিশ পেয়েছি। ওই ইলিশ ৭০ হাজার টাকা মণ দরে ২৬ হাজার ২৫০ টাকায় বিক্রি করেছি। বেশ ভালোই দাম পেয়েছি।’
নান্না ও কামাল নামের দুই জেলা জানান, তাঁরা ২০ কেজি করে ইলিশ পেয়েছেন। সাগরে এভাবে ইলিশ ধরা পড়লে তাঁদের কষ্ট থাকবে না।
ফকিরহাট মৎস্য সমিতির সদস্য ও বিসমিল্লাহ ট্রলারের মালিক টুকু সিকদার জানান, ইলিশ মাছ শিকার করতে গতকাল এ ঘাট থেকে ৬০০ ট্রলার নিয়ে জেলেরা সাগরে যান। সাগরের কাছাকাছি যেসব জেলে জাল ফেলেছিলেন তাঁরা তীরে ফিরেছে। তাঁরা ভালোই ইলিশ পেয়েছেন। ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞার কিছুটা সুফল পেয়েছেন জেলেরা। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এভাবে পুরো মৌসুম জেলেরা সাগরে ইলিশ পাবেন।
এ নিয়ে কথা হলে ফকিরহাট উপমৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ইনচার্জ জুয়েল হোসেন বলেন, ‘গভীর সমুদ্রের জেলেরা এখনো তীরে ফেরেননি। ওই সব ট্রলার তীরে ফিরলে ইলিশের সরবরাহ ভালোই হবে। এখন ইলিশের দাম ভালো। প্রভার ভেদে এক মণ ইলিশ ৩৫ হাজার থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।’