জাতীয়
চট্টগ্রাম বন্দরে ১৪৭ জাহাজের জট, পণ্য খালাসে ধীরগতি
চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য নিয়ে অপেক্ষমাণ জাহাজের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৪৭। এর মধ্যে ৯৮টি জাহাজের পণ্য খালাস কার্যক্রম চলছে। আর অপেক্ষায় আছে ৪৯টি জাহাজ। ঈদের টানা বন্ধে জাহাজ থেকে পণ্য খালাস এবং সরবরাহ দেওয়া বন্দরের জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অবশ্য ঈদের আগে খালাস কার্যক্রমে গতি কম থাকলেও এখন আস্তে আস্তে তা বাড়ছে। গত দুই দিনে বন্দরের জেটি থেকে গড়ে সাড়ে ৪ হাজার কনটেইনার খালাস হয়েছে। স্বাভাবিক সময়ে এটি থাকে ৫ হাজারের বেশি। এজন্য বন্দরের বিভিন্ন ইয়ার্ডে জমেছে ২০ ফুট এককের ৩৬ হাজার ২১৫ কনটেইনার।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য ক্যাপ্টেন আহমেদ আমিন আবদুল্লাহ বলেন, ঈদুল ফিতরের তুলনায় ৫ শতাংশ পণ্য বেশি এসেছে ঈদুল আজহায়। কিন্তু গতবারের তুলনায় এবার ঈদে ছুটি বেশি। জাহাজ আসার সংখ্যাও গত ঈদের তুলনায় এবার তুলনামূলক বেশি। তারপরও পরিস্থিতি সামাল দিতে পারছি আমরা। পণ্য খালাসের হারও আস্তে আস্তে বাড়ছে।
ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরামের চেয়ারম্যান এস এম আবু তৈয়ব বলেন, ঈদের সময় বন্দর খোলা থাকলেও অন্যান্য দপ্তরে বিরাজ করে স্থবিরতা। যার প্রভাব পড়ে খালাস কার্যক্রমে। দায়িত্বশীল সব সংস্থা যেন একযোগে কাজ করে সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে মন্ত্রণালয়কে।
বন্দরের তথ্য অনুযায়ী, শিল্পের কাঁচামাল কার্গো পণ্যবাহী ৪৫টি জাহাজের পাশাপাশি কনটেইনারবাহী জাহাজ রয়েছে ৩১টি। এছাড়া সিমেন্ট ক্লিংকারবাহী ৪১টি, খাদ্যপণ্যবাহী ১০টি, চিনিবোঝাই ৩টি, সারবাহী ৩টি, লবণবাহী ১টি এবং ১৩টি অয়েল ট্যাংকার রয়েছে বন্দর জেটি ও বহির্নোঙরে।
সিমেন্ট-কয়লা-পাথরসহ কার্গো পণ্যগুলো বহির্নোঙরে খালাস হলেও কনটেইনারবাহী জাহাজগুলোকে বন্দরের প্রধান জেটিতে এনেই কনটেইনার ওঠা-নামা করতে হয়।
২০২৫-২৬ অর্থ বছরের বাজেট এবং পবিত্র ঈদুল আজহা খুব কাছাকাছি সময়ে হওয়ায় শিল্পের কাঁচামালসহ নানা পণ্য আমদানি হয়েছে তুলনামূলক বেশি। এর মাঝে শুরু হয়েছে ঈদ উপলক্ষে সরকারি ১০ দিনের ছুটি। এ অবস্থায় আমদানিকৃত কাঁচামাল ছাড় করা নিয়ে কিছুটা বেগ পেতে হয় ব্যবসায়ীদের।
বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) পরিচালক রাকিবুল আলম চৌধুরী বলেন, বন্দরের মধ্যে বড় ধরনের জট তৈরি হয়েছে। এতে পণ্য আমদানি-রপ্তানিতে ধীরগতি চলছে। যা ব্যবসায়ীদের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে উঠছে।
চট্টগ্রাম সি অ্যান্ড এফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এস এম সাইফুল আলম বলেন, সরকারি ছুটিতেও পুরোদমে সচল আছে চট্টগ্রাম বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম এবং ডেলিভারি সিস্টেম। তবে সব দপ্তরের চিত্র একইরকম নেই। এজন্য স্টেকহোল্ডাররা আমদানি ও পণ্য ছাড় করতে গিয়ে কিছুটা বেগ পাচ্ছেন।
চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন ইয়ার্ডে বর্তমানে ৩৬ হাজার ২১৫ টিইইউএস কনটেইনারের অবস্থান রয়েছে। অবশ্য বন্দরের ধারণ সক্ষমতা ৫৩ হাজার ৫১৮ টিইইউএস কনটেইনার।