বরিশাল
এমভি কীর্তনখোলা-১০ লঞ্চের রুট পারমিট স্থগিত
বরিশালে কোস্ট গার্ডের দায়িত্ব পালনে বাধার অভিযোগে দায়ের করা মামলার পর ঢাকা-বরিশাল নৌ-রুটের যাত্রীবাহী নৌযান এমভি কীর্তনখোলা-১০ লঞ্চের রুট পারমিট সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের যুগ্ম পরিচালক মুহম্মদ মোবারক হোসেনের সই করা এক আদেশের ভিত্তিতে গত শনিবার রাতে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত হওয়া গেছে। নির্দেশ অমান্য করে লঞ্চ চালনার অভিযোগ তুলে এমভি কীর্তনখোলা-১০ চলাচল সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়।
বরিশালের মেসার্স সালমা শিপিং লাইনসের পরিচালনাধীন এমভি কীর্তনখোলা-১০-এর মালিক ও ম্যানেজার বরাবর ওই আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে, ঢাকা-বরিশাল নৌপথে চলাচলকারী এমভি কীর্তনখোলা-১০ যাত্রীবাহী নৌযানটি গত ৫ জুন রাত ১১টার দিকে বরিশালের উদ্দেশে সদরঘাট টার্মিনাল ত্যাগ করে। পরে পোস্তগোলা ব্রিজ অতিক্রম করার আগে লঞ্চের একটি প্রপেলার ভেঙে যাওয়ায় এক ইঞ্জিনে এটি চালিয়ে নেওয়া হচ্ছিল। এ সংবাদের পর পরিবহন পরিদর্শক এমভি কীর্তনখোলা-১০ লঞ্চের দায়িত্বরত ইনচার্জ মাস্টার শুক্কুর ও ইনচার্জ ড্রাইভার মিজানুর রহমানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে প্রপেলার ভাঙার বিষয়ে জানতে চাইলে তারা তথ্যের সত্যতা স্বীকার করেন। তাৎক্ষণিকভাবে পরিবহন পরিদর্শক সম্ভাব্য নৌ দুর্ঘটনা এড়াতে লঞ্চের মাস্টারকে যাত্রা বাতিল করে সদরঘাট টার্মিনালে ফেরত আসার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন। কিন্তু দায়িত্বরত মাস্টার সদরঘাট টার্মিনালে ফেরত আসতে অনিহা প্রকাশ করায় পরিবহন পরিদর্শক বিষয়টি যুগ্ম পরিচালককে (নৌনিট্রা) অবহিত করেন। যুগ্ম পরিচালক (নৌনিট্রা) লঞ্চের মাস্টারের সঙ্গে ফোনে কথা বলে সদরঘাট টার্মিনালে ফেরত আনার জন্য নির্দেশ দেন। আদেশে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, লঞ্চের মাস্টার নির্দেশনা অমান্য করে সিঙ্গেল ইঞ্জিন চালিয়ে নৌযানটি বরিশালের উদ্দেশ্যে যায়। এ পরিস্থিতিতে বড় ধরনের নৌ দুর্ঘটনা ঘটা এবং ঈদে ঘরমুখী যাত্রীদের জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা ছিল। নৌযানের মাস্টারের এমন আচরণ এবং নির্দেশনা অমান্য করায় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন (নৌ-রুট পারিমট, সময়সূচি ও ভাড়া নির্ধারণ) বিধিমালা, ২০১৯ সংশ্লিষ্ট ধারার পরিপন্থী। যে কারণে নৌযানটি পরিচালনা পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার কীর্তনখোলা-১০ বরিশাল নৌবন্দরে ভিড়লে সেখানে যাত্রী ও কোস্ট গার্ড সদস্যদের সঙ্গে কীর্তনখোলা লঞ্চ কর্তৃপক্ষের হাঙ্গামা ঘটে। ওই ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তারসহ কীর্তনখোলা লঞ্চ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বরিশালের কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা দায়ের করে কোস্ট গার্ড। ওই ঘটনার পর কীর্তনখোলা-১০-এর রুট পারমিট স্থগিত করল বিআইডব্লিউটিএ।