জাতীয়
নগদের মাধ্যমে সরকারি ভাতার ১৭১১ কোটি টাকা গায়েব!
মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস ‘নগদ’-এর বিরুদ্ধে এবার এক ভয়াবহ অভিযোগ উঠেছে, যা তাদের আগের অনিয়ম-লুটপাটের নজিরকেও ছাড়িয়ে গেছে। জালিয়াতি করে অবৈধ ই-মানি তৈরি থেকে শুরু করে ভুয়া অ্যাকাউন্ট খুলে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগের মধ্যেই এবার প্রতিষ্ঠানটি থেকে ১ হাজার ৭১১ কোটি টাকা ‘গায়েব’ হওয়ার ঘটনা সামনে এসেছে।
সরকারি সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় সুবিধাভোগীদের জন্য পাঠানো এই বিপুল পরিমাণ অর্থ ৪১টি অননুমোদিত ডিস্ট্রিবিউটরের মাধ্যমে তুলে নেওয়া হয়েছে। অথচ এই টাকা সরাসরি সরকারি সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় পাঠানো হয়েছিল সুবিধাভোগীদের জন্য। কিন্তু সেই টাকা পৌঁছায়নি গন্তব্যে। মাঝপথেই উধাও হয়ে গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক বিশদ তদন্ত প্রতিবেদনে এমন ভয়াবহ তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ‘নগদ লিমিটেড’ কর্তৃপক্ষ এর আগে বিভিন্ন সময়ে সরকারি অনুমোদন ছাড়াই ৬৪৫ কোটি টাকার ই-মানি ইস্যু করেছে, যা সরাসরি সরকারকে আর্থিক ক্ষতির মুখে ফেলেছে। এসব অর্থের কোনো ‘রিয়েল মানি’ সাপোর্ট ছিল না। শুধু তাই নয়, প্রতিষ্ঠানটি একটি ভুয়া রিপোর্টিং পোর্টাল তৈরি করে বাংলাদেশ ব্যাংক ও ডাক বিভাগকে ভুয়া তথ্য দিয়েছে। ইতোমধ্যে জালিয়াতির অপরাধে ‘নগদ’-এর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে নিয়ন্ত্রণ সংস্থা।
২০১৯ সালের ২৬ মার্চ ‘নগদ’ চালু করে বাংলাদেশ ডাক বিভাগ। তবে কোনো ব্যাংক অনুমোদন ছাড়াই একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান— থার্ড ওয়েভ টেকনোলজিস লিমিটেড (বর্তমানে নগদ লিমিটেড)-কে মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের মতে, এতে করে অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ খাতটি সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।
২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত পরিচালিত অডিটে দেখা গেছে, ৬৪৫ কোটি টাকার বেশি ই-মানি ইস্যু করা হয়েছে, যার পেছনে কোনো বাস্তব অর্থ জমা ছিল না। এর ফলে বাংলাদেশ ডাক বিভাগ তথা সরকারের ওপর এই টাকার দায় বর্তাচ্ছে।