বরিশাল
বানারীপাড়ায় বিএনপি নেতার সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের প্রতিবাদে মানববন্ধন
বরিশালের বানারীপাড়ায় উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক ও বাইশারী ইউনিয়ন শাখার সদস্য সচিব সবুর খান ( সবুর মেম্বর) ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক নেতাকে মারধর করাসহ নানা সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের প্রতিবাদে ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন এবং লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে।
রোববার (২২ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় বানারীপাড়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও প্রেসক্লাবের সামনে উপজেলা বৈষম্যে বিরোধী ছাত্র আন্দোলন,ইসলামী ছাত্র আন্দোলন ও সচেতন নাগরিক সমাজের ব্যানারে এ লিফলেট বিতরণ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালণ করা হয়।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা আতিকুল ইসলাম ওসমানি, উপজেলা ইসলামী যুব আন্দোলনের সভাপতি মো. ওলিউল্লাহ্, ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের জেলা শাখার অর্থ কল্যাণ সম্পাদক মাওলানা নেয়ামতউল্লাহ, উপজেলা ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সভাপতি এইচ এম শামিম প্রমুখ।
এসময় বিএনপি নেতা সবুর মেম্বরের বিরুদ্ধে বানারীপাড়ার সন্ধ্যা নদীর খেয়াঘাট অবৈধভাবে দখলের প্রতিবাদ করায় পিটিয়ে বিএনপি কর্মী মিলনের হাত-পা ভেঙ্গে ও মিজানের মাথা ফাটিয়ে ফেলা, বাইশারী ইউনিয়নের গরদ্বার গ্রামের শহীদ হাওলাদারের মেয়েকে ধর্ষণের চেষ্টা, গরদ্বার খেজুরতলা রাস্তার পশ্চিম পাশের সরকারী খাস জমি বিক্রির পরে আবার তা দখল, বানারীপাড়া পৌর শহরের ফেরীঘাটে নির্মানাধীন ব্রিজ সংলগ্ন সন্ধ্যা নদীর শাখা খালের প্রবেশমুখের তীরে সরকারি সম্পত্তি অবৈধভাবে দখল করে বালু ভরাট, সন্ধ্যা নদী থেকে অবৈধভাবে বেপরোয়া বালু উত্তোলন করে নদীর ভাঙন তীব্রতর করে মানুষকে সর্বশান্ত করা, শিয়ালকাঠী খেয়াঘাট মসজিদের জমিদাতা খলিলুর রহমান মোল্লাকে সপরিবারে এলাকা ছাড়া করা, বিভিন্ন জায়গায় চাঁদাবাজী, চাঁদা না দিলে হামলা করা, ভিডব্লিউবি কার্ড প্রদানের নামে বাইশারী ইউনিয়নের দুস্থ মহিলাদের কাছ থেকে নানা অঙ্কের টাকা আদায়, রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে অবৈধভাবে এলাকার মসজিদ ও মাহফিলের সভাপতির পদ দখল করাসহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে লিফলেট বিতরণ করা হয়।
লিফলেটে তার ভাই সগীর খানের বিরুদ্ধেও বিভিন্ন অভিযোগ করা হয়। এদিকে বিএনপি নেতা সবুর খানের নেতৃত্বে ২০/২৫ জনের একটি দল লাঠিসোটা নিয়ে মানববন্ধন শেষে হামলার জন্য ধাওয়া করলে আয়োজকরা দৌঁড়ে বানারীপাড়া থানায় গিয়ে আশ্রয় নেন। সেখানে এসময় আতঙ্ক ও উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এসময় পুলিশ হামলাকারীদের নিবৃত করার চেষ্টা করেন। খবর পেয়ে বানারীপাড়া উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ মৃধাসহ দলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ থানায় ছুটে গিয়ে পরবর্তীতে দুই পক্ষকে নিয়ে বৈঠকে বসে বিষয়টির সমাধান করার আশ্বাস দেন। ফলে এক পর্যায়ে সবুর মেম্বর ও তার লোকজন থানা থেকে চলে যাওয়ার পরে আটকে পড়া বৈষম্যবিরোধী ও ইসলামী ছাত্র-যুব আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা বের হয়ে যান।
প্রসঙ্গত, বানারীপাড়া উপজেলা ইসলামী আন্দোলনের সভাপতি এবং উপজেলার শিয়ালকাঠি জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা শীহাবউদ্দিন বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে ওই মসজিদের বাৎসরিক মাহফিলের সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। গত শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) জুমার নামাজে অনুসারীদের নিয়ে উপস্থিত হয়ে বিএনপি নেতা সবুর মেম্বর নিজেকে মাহফিল কমিটির সভাপতি ঘোষণা করেন।
এবিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা ও মসজিদের সহ-সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম তাৎক্ষনিক প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, বিগত বছরের মত এবারও মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা শীহাবউদ্দিন মাহফিল কমিটির সভাপতি থাকবেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সবুর মেম্বর ও তার অনুসারীরা নাঈমুল ইসলামকে মারধর করেন ও প্রাণনাশের হুমকি দেন। এর প্রতিবাদে ও দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবিতে মানববন্ধন ও লিফলেট বিতরণ করা হয়।
ফোন রিসিভ না করায় এ বিষয়ে বিএনপি নেতা ও সাবেক ইউপি সদস্য সবুর খানের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ প্রসঙ্গে বানারীপাড়া থানার ওসি মো. মোস্তফা বলেন, মসজিদের মাহফিলের সভাপতি পদ নিয়ে বিএনপি নেতা সবুর খানের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করা হয়েছে। মানববন্ধন শেষে তারা থানায় সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে এলে সবুর খান লোকজন নিয়ে থানার সামনে আসে। এ ব্যপারে লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’’