পিরোজপুর
নেছারাবাদে পরীক্ষায় কম নম্বর পাওয়ায় শিক্ষকের পিটুনিতে ১০ শিক্ষার্থী অসুস্থ
জানা যায়, ৭ মে (বুধবার) ওই বিদ্যালয়ে প্রথম প্রান্তিক মূল্যায়ন পরীক্ষা শুরু হয়ে ১৫ মে বৃহস্পতিবার শেষ হয়। ওই পরীক্ষার ইংরেজি ক্লাস নিতেন সহকারী শিক্ষক মো. রাসেল মাহমুদ। পরীক্ষার ফলাফলে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা আশানুরূপ ফল পায়নি। এতে ওই শিক্ষক রাগান্বিত হয়ে প্রথমে চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী পরে পঞ্চম শ্রেণির মোট ১০ জন শিক্ষার্থীকে এলোপাতাড়ি বেত্রাঘাত করেন। ছুটির পর ওই শিক্ষার্থীরা বাড়ি গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে অভিভাবকেরা চিন্তিত হয়ে পড়েন। পরে সন্তানদের কাছে সবকিছু শুনে তারা রাতে বিদ্যালয়ের সামনে জড়ো হয়ে শিক্ষকের বিচার দাবি তোলেন।
চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী তামান্না আক্তার বলে, ‘স্যারের একটু রাগ বেশি। সব সময় তাকে ভয় লাগে। বেত ছাড়া সে ক্লাসে আসে না। হঠাৎ ক্লাসে ঢুকেই আমাদের সবাইকে লাঠি দিয়ে পিটিয়েছে।’
বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী খাদিজা আক্তারের মা মোসা. জাকিয়া বেগম অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার মেয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে। বয়সের তুলনায় অনেক উঁচু লম্বা হয়েছে। আমরা তার গায়ে কখনো হাত দিই না। পরীক্ষায় সে ফেল করেনি। পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করার পরেও মেয়েটাকে গরুর মতো পিটিয়েছে। শিক্ষকদের শাসনেরও একটা লিমিট থাকা দরকার।’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক মো. রাসেল মাহমুদ বলেন, ‘আমি চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির ইংলিশ ক্লাস নিই। প্রথম প্রান্তিক মূল্যায়ন পরীক্ষায় তারা আশানুরূপ রেজাল্ট করেনি। অনেক কষ্ট করে তাদের ইংরেজি শিক্ষা দিই। রেজাল্ট ভালো হয়নি বিধায় আমার মাথা ঠিক ছিল না। তাই ১০ থেকে ১২ জন শিক্ষার্থীকে একটু লাঠি দিয়ে পিটিয়েছি। ওদেরকে একটু শাসন না করলে তারা বেপরোয়া হয়ে যায়। তাদের মারাটা যদি অন্যায় হয় তাহলে কোনো দিন মারব না।’
এ বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোসা. শিরিন আক্তার বলেন, ‘আমি চিকিৎসাজনিত কারণে ছুটিতে আছি। তবে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির বাচ্চাদের মারার কথাটি আমি শুনেছি। ছোট ছোট শিক্ষার্থীদের বেদম মারা ঠিক হয়নি। শিক্ষার্থীদের-অভিভাবকদের বলেছি আমরা অভিভাবক সমাবেশে এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব।’
নেছারাবাদ সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. গিয়াস উদ্দিন বলেন, স্কুলের শিক্ষার্থীদের বেত্রাঘাতের কোনো সুযোগ নেই। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব। সত্যতা পেলে অবশ্যই তাঁর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।