পটুয়াখালী
বাবুগঞ্জে প্রতারণার দায়ে নারী ও ভূমির দালালের সাজা
বরিশালের বাবুগঞ্জে পৃথক দুটি প্রতারণার ঘটনায় এক নারীকে ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ১৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং ভূমি অফিসের এক দালালকে ৭ দিনের বিনাশ্রম কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। বরিশালের যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালত এবং বাবুগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে এসব সাজা দেওয়া হয়। দন্ডপ্রাপ্তরা হলেন- বাবুগঞ্জ উপজেলার রহমতপুর ইউনিয়নের দাসপাড়া এলাকার কিশোর চন্দ্র দাসের স্ত্রী মলিনা রানী দাস এবং পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার হোগলবুনিয়া গ্রামের জয়নাল আবেদিনের ছেলে তাওহীদুল ইসলাম।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, উপজেলার রহমতপুর বাজারের মেসার্স নাহার এন্টারপ্রাইজের সত্ত্বাধিকারী কাওসার মাহমুদ ২০২২ সালে তার বাল্যবন্ধু মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান নগদের ডিএসও সৌরভ চন্দ্র দাসকে ব্যবসায়িক প্রয়োজনে ১৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা দেন। পরবর্তীতে ওই টাকা পরিশোধ বাবদ সৌরভের মা মলিনা রানী দাস রূপালী ব্যাংকের রহমতপুর শাখার অনুকূলে ১৩ লাখ ৫০ হাজার টাকার একটি চেক প্রদান করেন। কিন্তু একাউন্টে টাকা না থাকায় ওই চেক কয়েকবার প্রত্যাখ্যাত হলে ব্যবসায়ী কাওসার মাহমুদ ২০২৩ সালের ১০ জানুয়ারি বরিশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চেক জালিয়াতি সংক্রান্ত একটি মামলা দায়ের করেন।
এরপরে দীর্ঘ প্রায় ২ বছর ৫ মাস ধরে মামলার বিভিন্ন সাক্ষ্য-প্রমাণ শেষে মঙ্গলবার আসামী মলিনা রানী দাসকে দোষী সাব্যস্ত করে ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং চেকের সমপরিমাণ ১৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন বরিশালের যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক জাহিদুল আজাদ। রায় ঘোষণার সময় আসামি মলিনা রানী দাস পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। নগদের ডিএসও পদে কর্মরত থাকাকালে রহমতপুর বাজারের বিভিন্ন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে প্রায় ২০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়ে যান সৌরভ চন্দ্র দাস এবং এসব প্রতারণার কাজে তার মা মলিনা রানী দাস তাকে সহযোগিতা করতেন বলে জানান মামলার বাদী কাওসার মাহমুদ।
এদিকে পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার হোগলবুনিয়া গ্রামের জয়নাল আবেদিনের ছেলে তাওহীদুল ইসলাম বাবুগঞ্জের পূর্ব রহমতপুর গ্রামে একটি ভাড়াবাসায় থেকে দীর্ঘদিন উপজেলা ভূমি অফিসে জমির দালালি করে আসছিলেন। তিনি মাধবপাশা ইউনিয়নের পাংশা গ্রামের জহিরুল হককে ভূমি অফিস থেকে তার জমির নামজারি করিয়ে দেওয়ার কথা বলে ৩৫ হাজার টাকা চুক্তি করেন। এরমধ্যে ১৫ হাজার টাকা আদায় করে সোমবার ওই নামজারি করতে ভূমি অফিসে গেলে তাকে হাতেনাতে আটক করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) কামরুন্নাহার তামান্না। এসময় মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জমির দালাল তাওহীদুল ইসলামকে ৭ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) কামরুন্নাহার তামান্না বলেন, ‘ভূমি অফিস থেকে জমির নামজারি করার সরকারি ফি যেখানে ১ হাজার ১৭০ টাকা সেখানে ভুক্তভোগী ব্যক্তির কাছ থেকে প্রতারক তাওহীদুল ইসলাম ৩৫ হাজার টাকা দাবি করেন এবং অগ্রিম ১৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছিলেন। ভূমি সেবাগ্রহীতাকে হয়রানি ও সরকারি কাজে বাঁধা প্রদান করায় তাকে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে সাজা দেওয়া হয়েছে। উপজেলা ভূমি অফিসকে দালালমুক্ত করে জনগণের প্রাপ্য ভূমিসেবা নিশ্চিত করতে এমন অভিযান অব্যাহত থাকবে।’ #