বরিশাল
কীর্তনখোলা নদী পাড়ের মাটি কেটে নেয়া হচ্ছে ইটভাটায়
বরিশাল সদর উপজেলার চরমোনাই সংলগ্ন কীর্তনখোলা নদীর পাড়ের মাটি কেটে নেয়া হচ্ছে ইটভাটায়। নদী তীরের ফসলি জমির ও নদীর চরের মাটি প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে। অনেক ইট ভাটায় ইট তৈরির কাজ শুরু করেছেন মালিকরা। এই উপজেলায় বৈধ ও অবৈধ প্রায় শতাধিক ইটভাটা রয়েছে। আর এ সকল ইট ভাটার মালিকরা মাটি সংগ্রহ করছে কখনো ফসলি জমি ক্রয় করে আবার কখনো অবৈধভাবে নদীর চরের মাটি কেটে। কখনও দিনে-কখনও রাতে, এভাবে মাসের পর মাস নদীর পাড়ের মাটি কেটে নেয়ায় হুমকিতে রয়েছে ওই এলাকার বেড়িবাঁধসহ আশেপাশের ঘর-বাড়ি।
নাম প্রকাশে অনইচ্ছুক স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা বলেন, ফুজি ব্রিকস, সিগমা ব্রিকস, সিকো ব্রিকসসহ একাধিক ইটভাটার জন্য নদীর পাড় থেকে মাটি কেটে নেয়া হচ্ছে। এতে সহযোগীতা করছেন স্থানীয় কতিপয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। স্থানীয়রা মনে করছেন খুব শিগগিরই যদি নদী পাড়ের মাটি কাটা বন্ধ করা না হয় তাহলে যেকোনো সময় ভেঙে যেতে পাড়ে বেড়িবাঁধসহ আশেপাশের ঘর-বাড়ি।
বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনে (২০১০) বলা হয়েছে, বিক্রির উদ্দেশ্যে বালু বা মাটি উত্তোলনের ফলে কোনো নদীর তীর ভাঙনের শিকার হলে সে ক্ষেত্রে বালু বা মাটি তোলা যাবে না। অন্যদিকে, সেতু, কালভার্ট, বাঁধ ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনা অথবা আবাসিক এলাকা থেকে এক কিলোমিটারের মধ্যে বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ।
এলাকাবাসী ও সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, প্রতি বছর বর্ষার শুরুতে ওই স্থানে নদীর কিনারা থেকে মাটি কেটে স্থানীয় প্রভাবশালীরা বিভিন্ন ইটভাটার মালিকদের কাছে বিক্রি করেন। একপর্যায়ে স্থানীয় লোকজনের ফসলি জমি ভাঙনের কবলে পড়তে থাকে। তখন বাধ্য হয়ে তাঁরাও জমির মাটি বিক্রি করা শুরু করেন। এবার বর্ষার শুরুতে আবার মাটি কেনাবেচা শুরু হয়েছে।
সরেজমিনে গত শুক্রবার দেখা যায়, ওই স্থান থেকে প্রায় ১৫ থেকে ২০ ফুট গভীর মাটি কেটে ট্রলারে করে চরমোনাই ও চরকাউয়া এলাকার বিভিন্ন ইটভাটায় নেওয়া হচ্ছে।
এ ব্যাপারে ফুজি ব্রিকসসের মালিক নুরু মিয়া জানান, ওইসব জমি কিনে সেখান থেকে মাটি কাটা হচ্ছে। তবে নদী পাড়ের জমি থেকে মাটি কাটা কতটুকু যৌক্তিক সে বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিবেদককে তার সাথে দেখা করার আমন্ত্রণ জানান তিনি।
এ বিষয়ে বরিশাল সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আজহারুল ইসলাম বলেন, নদী পাড়ের জমি থেকে কেউ মাটি কাটতে পারবে না। আর কেউ যদি এমনটা করে তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’