বরিশাল
বাকেরগঞ্জে মাদরাসায় শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপস্থিত, বারান্দায় হাঁটছে গরু!
বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার ভবানীপুর দারুল ইসলাম দাখিল মাদরাসা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে নানা অপকর্ম ও দুর্নীতি, দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে এসব অপকর্মের ঘটনা স্বীকারও করেছেন ভবানীপুর দারুল ইসলাম দাখিল মাদরাসার গভর্নিং বডির সভাপতি আজিজুল হক।
আজিজুল হক বলেন, বাবা (প্রতিবেদক) আপনারা এসব নিয়ে লেখালেখি করলে আমাদের প্রতিষ্ঠানের মানসম্মান ক্ষুন্ন হবে। আমি শিক্ষকদের জানিয়ে দিয়েছি, এসব অপকর্মের জবাবদিহি করতে হবে।
এদিকে সরেজমিনে দেখা যায়- ভবানীপুর দারুল ইসলাম দাখিল মাদরাসা গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১টা ৪৯মিনিটের সময় বন্ধ করে সকল শিক্ষক নিজ বাড়িতে চলে গেছেন। মাদরাসায় শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপস্থিত থাকলেও বারান্দায় কিছু গরু হাটছিলো। এমনকি কিছু গরু ওই মাদরাসার বারান্দায় শুয়ে আছে। বিকেল ৫টার আগে মাদরাসা বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারনেই এমন ঘটনা ঘটেছে। যা সরকারি নিয়মনীতিরই পরিপন্থী। একারণে এখানকার শিক্ষার্থীরা নিয়মিত ক্লাসে পাঠদান থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে।
ক্ষোভ প্রকাশ করে স্থানীয় বাসিন্দা ও বৃদ্ধ আবু তালেব মিয়া বলেন, একটু আগে দেখলাম সভাপতি মসজিদে নামাজ আদায় করে বাসায় গেছেন। তাছাড়া মাদরাসার সকল শিক্ষক জোহরের নামাজের আজান দিলেই মাদরাসা বন্ধ করে চলে যায়। বিষয়টি নিয়ে অনেক আগেই আমরা তাদেরকে সতর্ক করেছি,কিন্তু তারা কর্ণপাত করেনি। যেকারণে অনেক মাদরাসা শিক্ষার্থী এখান থেকে অন্য প্রতিষ্ঠানে চলে গেছে।
বৃদ্ধ আবু তালেব মিয়া আরও বলেন, এই মাদরাসার পাশেই আরেকটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। ওই বিদ্যালয়টি সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকে এবং নিয়মিত ক্লাসে পাঠদান করেন শিক্ষকরা। কিন্তু পাশাপাশি অবস্থান হওয়া সত্ত্বেও সরকারি ভবানীপুর দারুল ইসলাম দাখিল মাদরাসা কেন দুপুর হলেই বন্ধ হয়ে যায়, তা আমার বোধগম্য নয়।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই মাদরাসার এক শিক্ষক বলেন, কাগজে-কলমে আমাদের মাদরাসায় ২০০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। কিন্তু বোর্ড পরীক্ষায় এবার মাত্র ২২জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছে। মাদরাসা কতৃপক্ষের অপকর্ম-দুর্নীতি ও দায়িত্বে অবহেলার কারণে এই মাদরাসার অর্জিত সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে। যা মোটেই কাম্য নয়। তাছাড়া দুর্নীতি করে মাদরাসা কতৃপক্ষ লক্ষ লক্ষ টাকা ইতিমধ্যে হাতিয়ে নিয়েছে।
ভবানীপুর দারুল ইসলাম দাখিল মাদরাসার সুপার (ভারপ্রাপ্ত) রুহুল আমীন বলেন, আমরা আগেভাগে মাদরাসা বন্ধ করে ভুল করেছি। এক্ষেত্রে সরকারি নীতিমালা ভঙ্গ করেছি। ভবিষ্যতে এরকমটা আর হবে না।
বাকেরগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ নাসির উদ্দিন বলেন, আমার কাছে ভিডিও ফুটেজ পাঠিয়ে দেন। ভিডিও ফুটেজ দেখে আমি অবশ্যই ওই মাদরাসার বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।