আমতলি
জামিন পেয়েছেন বরগুনায় প্রবাসীর বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অনশনে বসা সেই তরুণী
বসতঘরে অনধিকার প্রবেশ ও আত্মহত্যার হুমকির অভিযোগ এনে বরগুনার আমতলীতে প্রবাসীর বাড়িতে অনশনে বসা সেই তরুণীর বিরুদ্ধে করা মামলায় তাঁকে জামিন দিয়েছেন আদালত। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে ওই তরুণীর জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন আমতলী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইমরান হাসান ইপ্তি।
গত ৪ এপ্রিল দুপুরে বাড়ির মালিক ও প্রবাসী মহিউদ্দিন বিশ্বাসের বড় ভাই আল আমীন বিশ্বাস আমতলীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ওই তরুণীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। ওই দিন রাত সারে ১১টার দিকে তরুণীকে অনশনরত অবস্থায় ওই প্রবাসীর বাড়ি থেকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। পরদিন মঙ্গলবার তাঁকে জামিন দেন আদালত। গত ২ এপ্রিল শুক্রবার সকাল থেকে ওই তরুণী প্রবাসীর বাড়িতে অনশনে বসেন।
জানা গেছে, আমতলী পৌর শহরের বাসিন্দা ওই তরুণীর সঙ্গে উপজেলার দক্ষিণ-পশ্চিম আমতলী গ্রামের বাসিন্দা মহিউদ্দিন বিশ্বাসের সঙ্গে ১৬ বছর ধরে সম্পর্ক রয়েছে। তখন মহিউদ্দিন দশম শ্রেণিতে এবং তরুণী একই বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। ১৬ বছর ধরে চলা সম্পর্কে ঘনিষ্ঠ ছিল—এমন অভিযোগ করেন তরুণী।
২০১৭ সালে মহিউদ্দিন কুয়েত চলে যান। সেখানে যাওয়ার পর বেশ কয়েকবার পরিবার থেকে তরুণীকে বিয়ে দিতে উদ্যোগ নেয়, কিন্তু বিভিন্ন স্থান থেকে আসা বিয়ের পাত্রদের ফোন করে মহিউদ্দিন বিয়ে পণ্ড করে দেন। এভাবে একাধিক বিয়ে পণ্ড করেন ওই প্রবাসী। ৮ বছর পর গত ৪ মার্চ তিনি (মহিউদ্দিন) কুয়েত থেকে বাড়িতে আসেন। বাড়িতে আসার পর দুজনের মধ্যে বেশ ভালো সম্পর্ক চলে আসছে। তাঁদের সম্পর্কের কথা দুই পরিবার জানত।
ভুক্তভোগী তরুণী বলেন, ‘বাড়িতে আসার পর আমাদের সম্পর্ক কিছু দিন ভালোই চলছিল। হঠাৎ মহিউদ্দিন অজ্ঞাত কারণে আমাকে এড়িয়ে যেতে থাকে। ধীরে ধীরে আমাদের সম্পর্কের টালমাটাল অবস্থা সৃষ্টি হয়। শুনতে পেরেছি, সে অন্য কোথাও বিয়ে করতে যাচ্ছে। অথচ এখন এত বছর পর সে অন্য কোথাও বিয়ে করবে, এটা মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। তাই ওর বাড়িতে যাই।’
তরুণী আরও বলেন, ‘বাড়িতে যাওয়ার পরে আমাদের ঘরে ঢুকতে দেয়নি। দুই দিন ধরে ঘরের দরজা বন্ধ দিয়ে আমাকে বাইরে রেখেছে। পরে আমার বিরুদ্ধে ওর ভাই মামলা দিয়ে পুলিশের মাধ্যমে বাড়ি থেকে বের করে থানায় নিয়ে আসে। তবে শুনেছি মহিউদ্দিন নাকি আবার বিদেশে চলে গেছে। আমি ওর প্রেমের স্বীকৃতি চাই। আমার জীবন থেকে মহিউদ্দিন ১৬টি বছর নষ্ট করে দিয়েছে।’
এ বিষয়ে জানতে মহিউদ্দিন বিশ্বাসের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে বন্ধ পাওয়া গেছে। এদিকে মামলার বাদী প্রবাসী মহিউদ্দিন বিশ্বাসের বড় ভাই আল আমীনের বক্তব্য নেওয়ার জন্য তাঁর মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি তা ধরেননি। তবে মামলা করার পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে তিনি বলেছিলেন, মামলাটি তিনি করেননি। তাঁর স্বাক্ষর জাল করে অন্য কেউ মামলাটি করেছে।
মামলার আসামিপক্ষের আইনজীবী নূহু আলম নবীন বলেন, আদালতে মামলা করলে বাদীর নিজের হাজির হতে হয়। তা ছাড়া গতকাল শুনানির সময় বাদী নিজে উপস্থিত ছিলেন।