বরিশাল
বরিশালে ঠিকাদারি না পেয়ে ক্ষুব্ধ বিএনপি নেতা, বন্ধ করে দিলেন ড্রেন নির্মাণ কাজ
নিজস্ব প্রতিবেদক : বরিশালের হিজলা উপজেলাধীন হরিনাথপুর বাজারের ড্রেন সংস্কারের কাজ শুরু হয় সম্প্রতি। ঠিকাদার সৈয়দ সাইদুল হক শিপন জানান, স্থানীয় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন এর সঙ্গে পরামর্শক্রমে ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি, মসজিদের ইমাম ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করেই কাজ শুরু হয়।
গত ৩০/৪/২০২৫ বুধবার কাজের সময় বালু- সিমেন্ট মেশানোর পানির প্রয়োজন হলে বাজারের একটি সরকারি শৌচাগার থেকে পাইপ দিয়ে পানি আনার জন্য ব্যবস্থা করা হয়। এসময় বাধা দেন স্থানীয় বিএনপি’র আহ্বায়ক সালাউদ্দিন সরদার। পাইপটি খুলে দেন তিনি। খবর পেয়ে স্থানীয় সাংবাদিক উজ্জ্বল খান বিষয়টি জানতে চাইলে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন সালাউদ্দিন।
তিনি বলেন,’এই টয়লেট থেকে পানি নিতে হলে আমাকে জানাতে হবে, আমি এই টয়লেটের দায়িত্বে আছি আমি এগুলা দেখাশোনা করি এবং বাজার থেকে চাঁদা কালেকশন করে বিদ্যুতের বিল দেই’ পানি-বিদ্যুতের খরচ দেয়া এবং মর্টার নষ্ট হলে ক্ষতিপূরণ দেয়ার কথা বললেও মন গলেনি তার। শেষ পর্যন্ত পানি দেননি তিনি। পরবর্তীতে মসজিদের মোয়াজ্জিনের সঙ্গে পরামর্শক্রমে সেখান থেকে পানি ব্যবস্থা করা হলে সালাউদ্দিন সরদার সেখানে গিয়েও হুমকি দেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঠিকাদারি কাজ কিংবা কাজ থেকে কোন টাকার ভাগ না পেয়ে ক্ষুব্ধ হন সালাউদ্দিন সরদার। হিজলা উপজেলার বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুল গাফ্ফার তালুকদার বলেন, ‘সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে আগেও অনেক চাঁদাবাজি এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ আছে, ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে হরিনাথপুর বাজার বিট তার নামে নেওয়া হয়েছে, এবং সেখানে নিয়ম এর তোয়াক্কা না করে অতিরিক্ত খাজনা আদায়সহ, হরিনাথপুর বাজারের অনেক দোকান বিনা কারণে বন্ধ করে দিয়েছে, ওনার ছেলে সুজন সরদার বরিশাল শহরে টেন্ডারবাজি করতে গিয়ে এক সেনা সদস্যকে অপহরণ করে, মারধরের ঘটনায় ইতিমধ্যে ছাত্রদল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
এবং সন্ত্রাসী এবং চাঁদাবাজি কর্মকাণ্ডের জন্য তাকে সেনাবাহিনী গ্রেফতার করেছে এবং দীর্ঘদিন জেল খেটে এখন সে আত্মগোপনে আছে, তার ছেলে নদীতে অবৈধভাবে ড্রেজার বসিয়ে নদী থেকে লাখলাখ টাকার বালু উত্তোলন করে, এবং বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে তার মামা সাবেক মুলাদী উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিঠু খান এর সাথে সকল প্রকার অবৈধ ব্যবসা নিয়মিত করে গেছেন, নদী থেকে অন্যায় ভাবে বালু কেটে নদী ভাঙ্গনের সৃষ্টি করেছেন,তাই হরিনাথপুর নদীর অবস্থা খুবই করুন এবং বাজার হুমকির মুখে তাই সরকারি ভাবে কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়ে বাজার রক্ষার জন্য বাঁধ নির্মাণের কাজ চলমান, এবং ৫ আগস্ট এর পরে তার ছেলে সুজন সরদার অবৈধভাবে নদীর মধ্যে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন কালে স্থানীয় সাধারণ জনগণ বাধা দিলে সেখান থেকে স্থানীয় পুলিশ ও বিএনপি’র কর্মীদেরকে দিয়ে তাকে নিরাপদে রাখার জন্য আমাকে অনেক ঝামেলায় পড়তে হয়েছে।
তাই এবার অভিযোগ সঠিকভাবে প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে’, স্থানীয় বাজারের ব্যবসায়ী, সাধারণ জনগণের কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন ‘৫ আগস্ট এর পরে হরিনাথপুর ইউনিয়ন বিএনপি’র আহ্বায়ক সালাউদ্দিন সরদার ও তার ছেলে সুজন সরদারের অত্যাচারে সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ’। অভিযুক্ত সালাউদ্দিন সরদারের দাবি, তিনি কাজে কোন বাধা দেননি।
পানি নিতে বাধা দিয়েছেন, উল্টো স্থানীয় রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের স্বার্থ হাসিলে অপপ্রচার চালাচ্ছে একটি পক্ষ। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইলিয়াস সিকদারকে জানালে তিনি বলেন ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন। হিজলা থানা অফিসার ইনচার্জ আবুল কালাম আজাদের মন্তব্য, ‘সরকারি কাজে বাধা দেওয়া কিংবা কাজের সুবিধার জন্য পানি না দেওয়া এটা অপরাধের শামিল, বিষয়টি আমি দেখছি।