বরিশাল
বরিশাল সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দুদকের অভিযান, সটকে পড়লেন জেলা রেজিস্ট্রার
নিজস্ব প্রতিবেদক : বরিশাল সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দুর্নীতিবিরোধী অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বুধবার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে বরিশাল জেলা অফিসের একজন সহকারি পরিচালক পদমর্যাদার কর্মকর্তার নেতৃত্বে এই অভিযান পরিচালিত হয়। তবে দুদকের অভিযানের খবর কোনো মাধ্যম আগাম নিশ্চিত হয়েই অফিস থেকে সটকে পড়েছেন জেলা রেজিস্ট্রার মো. মহশিন মিয়া। পরে দুদকের টিম সেখান থেকে দুর্নীতির মাধ্যমে তৈরি বেশ কয়েকটি ভূমির মালিকানা কাগজপত্র উদ্ধার করেছেন।
দুদক জানিয়েছে, বরিশাল সদর সাব রেজিস্টার অফিসে গ্রাহক জিম্মি করে অর্থ হাতানোসহ অনিময়-দুর্নীতির মাধ্যমে জমির দলিল তৈরি করা হয়। এবং এই অবৈধ অর্থ জেলা রেজিস্ট্রার থেকে শুরু করে সাব রেজিস্ট্রার এবং নারী কর্মচারী পর্যন্ত ভাগবাটোয়ারা করে নেয়। এছাড়া সাবেক সাব রেজিস্ট্রার অসীম কল্লোলের বিরুদ্ধে আইন লঙ্ঘন করে জমির দলিল দেওয়ার অভিযোগও আছে। দুদক কেন্দ্রীয় কার্যালয় এমন তথ্য-উপাত্ত্ব দিয়ে বুধবার অভিযান চালানোর নির্দেশনা দিলে সেই আলোকে বরিশাল অফিসের কর্মকর্তারা মাঠে নামেন।
এই তথ্য নিশ্চিত করে দুদক বরিশাল জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক রাজ কুমার সাহা জানান, বরিশাল সাব রেজিস্ট্রি অফিসে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে অভিযান পরিচালনা করা হয়। জমির মূল্য অনুযায়ী সরকার নির্ধারিত একটি উৎস্য কর থাকে, এই উৎস কর উপেক্ষা করে সরকারি কোষাগারে কম উৎস্য কর প্রদর্শন করে প্রদানপূর্বক দলিল রেজিস্ট্রেশন করেছে। পরবর্তীতে দেখা গেছে এক মাস, দুই মাস পরে বিভিন্ন দলিলে বিভিন্ন রকমের দাম দেখিয়ে উৎস্য কর জমা দিয়েছে। কিন্তু ওই দলিলের যে উৎস করে অতিরিক্ত টাকা পরবর্তীতে আদায় করেছে, সেটা সরকারি কোষাগারে জমা হয় মর্মে রেজিস্টারের কোথাও খুঁজে পাওয়া যায়নি।
তবে সাব রেজিস্ট্রি অফিস এবং দলিল লেখকদের একটি সূত্র জানিয়েছে, জেলা রেজিস্ট্রার মহশিন মিয়া বুধবারও অফিস কক্ষে ছিলেন। দুপুরেও তাকে অনেকে দেখেছেন। কিন্তু দুদকের টিম যখন সাব রেজিস্ট্রারের অফিস অভিমুখে যাচ্ছিল, ঠিক তখনই কোনো এক ফাঁকে মহশিন মিয়া অফিস ত্যাগ করেন। পরে তাকে দুদকের তরফে ফোন করা হলে তিনি জানান, ছুটি নিয়ে বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়ে গেছেন।
এক্ষেত্রে দুদক কর্মকর্তার ভাষ্য হচ্ছে, জেলা রেজিস্ট্রারের দপ্তরে গেলে তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। অভিযানে যা পাওয়া গেছে তা প্রতিবেদনে উল্লেখ করে দুদক প্রধান কার্যালয় ঢাকায় পাঠানো হবে। এবং পরবর্তী নির্দেশনা অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।’