আমতলি
বরগুনায় বিয়ের দাবিতে ৩ সন্তানের মায়ের অনশন, শেকলে বেঁধে নির্যাতন
বরগুনার আমতলীতে বিয়ের দাবিতে প্রেমিক আবুল কালাম মীরের বাড়িতে অনশনে বসেন তিন সন্তানের জননী প্রেমিকা নাজমা বেগম। কালাম মীরের ছোট ভাই, স্ত্রী ও মা তাকে লোহার শেকল দিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন নাজমা বেগম।
আমতলী উপজেলার পশ্চিম আঠারোগাছিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
রবিবার (১৩ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে অনশনে বসলে পরের দিন সোমবার (১৪ এপ্রিল) তাকে শেকলে বেঁধে মারধর করা হয়। পুলিশ খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়।
নাজমা বেগমের দেওয়া বর্ণনা অনুযায়ী, ২০০৮ সালে উপজেলার পশ্চিম আঠারোগাছিয়া গ্রামের রিপন মোল্লার সঙ্গে নাজমা বেগমের বিয়ে হয়। ওই দম্পতির তিনটি সন্তান রয়েছে। ২০২২ সালে নাজমা বেগম খালাতো দেবর আবুল কালাম মীরের সঙ্গে প্রেমে জড়িয়ে পড়েন। এ ঘটনার জের ধরে গত ২৯ মার্চ নাজমার স্বামী তাকে তালাক দেন। গত রবিবার সন্ধ্যায় নাজমা তার প্রেমিক কালামের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অনশনে বসেন। ওই সময় কালাম বাড়ি ছিলেন না। কালামের বাড়ির লোকজন ব্যাপক নির্যাতন চালায় তার ওপর।
ঘটনার বিষয়ে ইউপি সদস্য ছালাম সিকদার ও নারী ইউপি সদস্য হাসনেহেনা বেগম পুলিশকে খবর দিলে তারা এসে উদ্ধার করে নাজমাকে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। এই দুই স্থানীয় জনপ্রতিনিধি বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন।
সোমবার রাতে আমতলী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. রাশেদ মাহমুদ রোকনুজ্জামান উন্নত চিকিৎসার জন্য নাজমাকে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। তিনি বলেন, নাজমা বেগমের শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত জখমের চিহ্ন রয়েছে। পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো তাকে।
নাজমা বেগম বলেন, বিয়ের দাবিতে প্রেমিক আবুল কালাম মীরের বাড়ীতে অনশনে বসি। পরে তার ছোট ভাই বক্কর মীর, স্ত্রী লামিয়া, জল লাকি ও মা পরী বিবি আমাকে লোহার শিকল দিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে পিটিয়ে গুরুতর জখম করেছে। এভাবে তারা আমার ওপর তিন ঘণ্টা নির্যাতন চালিয়েছে। তারা আমার চোখ ও গোপনাঙ্গে মরিচের গুঁড়া দিয়েছে। আমি এই ঘটনার বিচার দাবি করছি।’
কালাম মীরের বড় ভাই আবুল হোসেন মীর তার ভাইয়ের সঙ্গে ওই নারীর সম্পর্কের কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ঘটনার সময় আমি বাড়ি ছিলাম না। বাড়ি এসে শুনেছি তাকে মারধর করেছে।
আমতলী থানার ওসি মো. আরিফুল ইসলাম আরিফ বলেন, লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”